রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) এস্টেট ও ভূমি-২ শাখার উপপরিচালক মো. সোহাগ মিয়ার বিরুদ্ধে বাণিজ্যিক প্লট দেওয়ার কথা বলে এক প্রবাসীর অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী মোহাম্মাদ এস হোসেনের অভিযোগ, রাজধানীর বনানীতে একটি আবাসন কোম্পানি খুলে তাঁর মাধ্যমে ৬২ লাখ ৮১ হাজার ৪৯৩ টাকা নিয়েছেন ওই কর্মকর্তা। এ বিষয়ে গত ৩১ মে রাজউক চেয়ারম্যানের কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে রাজউক তদন্তও শুরু করেছে। তবে সোহাগ মিয়ার দাবি, অভিযোগ সত্য নয়।
সোহাগ মিয়ার বিরুদ্ধে এর আগেও প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে দপ্তরে হাজির হয়ে বিভিন্নজনকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। তখন রাজউক থেকে তাঁকে কারণ দর্শানোর নোটিশও দেওয়া হয়েছিল।
প্রবাসীর অভিযোগ প্রসঙ্গে রাজউক চেয়ারম্যান মো. আনিছুর রহমান মিঞা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা অভিযোগ পেয়েছি; বিষয়টি খুব গুরুত্বের সঙ্গে আমলে নিয়ে তদন্তের জন্য দিয়েছি। অভিযোগের সত্যতা পেলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
লিখিত অভিযোগে মোহাম্মাদ এস হোসেন বলেন, কলেজ স্থাপন করার জন্য পূর্বাচল বাণিজ্যিক এলাকায় ৫ বিঘা জমি দেওয়ার কথা বলে রাজউকের উপপরিচালক সোহাগ মিয়া তাঁর কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা নেন। সোহাগ মিয়া তাঁকে বলেন, তিনি সরকারি চাকুরে হওয়ায় নিজ নামে ব্যবসা করা নিষেধ। এ অবস্থায় তাঁর মনোনীত একজন আর এস হোসেনের যৌথ নামে একটি লিমিটেড কোম্পানি করার প্রস্তাব দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে তাঁরা আমেরিকান রিয়েল এস্টেট লিমিটেড নামে একটি কোম্পানি বানান, যার পুরো টাকা দেন এস হোসেন। সোহাগ মিয়ার বন্ধু পরিচয়ে আমেনা খাতুন লুনা নামের একজনকে ৫০ শতাংশ অংশীদার করা হয়। সোহাগ মিয়ার ভাতিজা সাইদ মিয়াকে বানানো হয় পরিচালক। সিটি ব্যাংকে কোম্পানির হিসাব খুলে তাতে এস হোসেনকে এক কোটি টাকা জমা দিতে বলা হয়। তিনি পাঁচ লাখ টাকা জমা দেওয়ায় অফিসে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। বনানী সি-ব্লকের ৪ নম্বর রোডে ৪৯ নম্বর বাড়ির পাঁচতলায় একটি অফিস ভাড়া নেওয়া হয় আমেনা হোল্ডিংসের নামে। এস হোসেন সেই কোম্পানিতে মোট ৬২ লাখ ৮১ হাজার ৪৯৩ টাকা দিয়েছেন।
ভুক্তভোগী মোহাম্মাদ এস হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার কাছ থেকে প্লটের কথা বলে অনেকগুলো টাকা নিয়েছে। আমি রাজউক চেয়ারম্যানের কাছে অভিযোগও দিয়েছি। আমি তার প্রতারণার শিকার। তাই সব টাকা ফেরত চাই। সেই সঙ্গে একজন সরকারি কর্মকর্তা হয়ে যে প্রতারণা আমার সঙ্গে করেছে, এর বিচার চাই।’
রাজউকের উপপরিচালক মো. সোহাগ মিয়া গত বুধবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘যে ব্যক্তি অভিযোগ দিয়েছেন, তিনি মূলত আমার এক আত্মীয়াকে আমেরিকা নিয়ে যাওয়ার কথা বলে তাঁর কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন। এখন এই টাকা ফেরত চাওয়ার পর তিনি এসব অভিযোগ করছেন।’