ক্রীড়া ডেস্ক
বিশ্বকাপের ৯২ বছরের ইতিহাসে আফ্রিকার কোনো দল পেরোতে পারেনি কোয়ার্টার ফাইনালের বাধা। মরক্কো সেই অচলায়তন ভেঙে সেমিফাইনালে উঠে ইতিহাস তৈরি করেছে।
এই বিশ্বকাপে আফ্রিকার পাঁচ দলেরই কোচ ছিলেন তাদের সাবেক খেলোয়াড়। আর ওয়ালিদ রেগরাগুইয়ের অধীনে মরক্কো উঠে গেছে সেমিফাইনালে। চার দল বিদায় নেওয়ায় পুরো আফ্রিকা এবং আরব বিশ্বের দল হয়ে উঠেছে মরক্কো। মরোক্কানদের পরিবারেও যেন মিশে গেছে এই বিশ্বকাপ। আশরাফ হাকিমি ও সোফিয়ান বুফালরা মাঠে মায়ের সঙ্গে জয় উদ্যাপন করেন।
গোলরক্ষক ইয়াসিন বুনু ছেলের হাতে পরিয়ে দেন গ্লাভস। আফ্রিকা ফুটবলের নতুন উত্থানের গল্প হতে যাচ্ছে মরক্কো। আটলাস লায়নসরা মনে করিয়ে দিচ্ছে অতীত আরও অনেক দলকে, যারা প্রথমবারের মতো রূপকথা লিখেছিল বিশ্ব মঞ্চে। এখন মরক্কো চমকে দিতে পারবে কি না, সেটি জানতে আর কদিনের অপেক্ষা।
২০০২ : তুরস্ক-দক্ষিণ কোরিয়া
তুরস্ক এখন পর্যন্ত দুটি বিশ্বকাপে খেলেছে। তবে তুরস্ক বলতেই অবধারিতভাবে চলে আসবে ২০০২ বিশ্বকাপ। জাপান ও দ. কোরিয়ায় অনুষ্ঠিত সেই বিশ্বকাপে সেমিফাইনালে উঠেছিল তুরস্ক। শেষ চারে ব্রাজিলের কাছে ১-০ গোলে হার পরে দক্ষিণ কোরিয়াকে হারিয়ে তৃতীয় হয়ে ২০০২ বিশ্বকাপ বিশেষ স্মরণীয় করে রেখেছে তুর্কিরা। সেই বিশ্বকাপটা রঙিন হয়ে আছে যৌথ আয়োজক দক্ষিণ কোরিয়ার কাছেও। টুর্নামেন্টে চতুর্থ হওয়াটাই তাদের এখন পর্যন্ত সেরা সাফল্য।
১৯৯৮ : ক্রোয়েশিয়া
১৯৯৮ ফ্রান্স বিশ্বকাপে প্রথমবার খেলতে এসেই চমকে দিয়েছিল ক্রোয়েশিয়া। সেমিফাইনালে ওঠে তারা। শেষ চারে ’৯৮ বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সের কাছে হেরে বিদায় নিয়েছিল। কিন্তু তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে নেদারল্যান্ডসকে হারিয়ে টুর্নামেন্টটা স্মরণীয় করে রাখে তারা। বিশ্বকাপের বর্তমান রানার্সআপও তারা, এবারও ফাইনাল থেকে আছে এক পা দূরে।
১৯৯৪ : বুলগেরিয়া
১৯৯৪ যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে ডিয়েগো ম্যারাডোনার আর্জেন্টিনাকে ২-০ গোলে হারিয়ে হইচই ফেলে দিয়েছিল বুলগেরিয়া। পরে গ্রিস, মেক্সিকো ও জার্মানিকে হারিয়ে সেমিফাইনালে উঠে যায় দলটি। শেষ চারে ইতালির কাছে ২-১ গোলে হেরে যায় দ্য লায়নস। তবে বিশ্বকাপটা বিশেষ স্মরণীয় হয়েই আছে বুলগেরিয়ার কাছে।
১৯৬২ : চিলি
১৯৩০ সালের প্রথম বিশ্বকাপ খেললেও নিয়মিত হতে পারেনি টুর্নামেন্টে। সর্বশেষ দুটি বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতাই অর্জন করতে পারেনি। ৯টি বিশ্বকাপ খেলা চিলির কাছে বিশেষ স্মরণীয় হয়ে আছে ঘরের মাঠে আয়োজিত ১৯৬২ বিশ্বকাপ। সেই বিশ্বকাপে জিতেছিল ৪টিতে। সেমিফাইনালে পেলে-গারিঞ্চাদের ব্রাজিলের কাছে ৪-২ গোলে হেরে শেষ হয় স্বপ্নের দৌড়। তবে যুগোস্লাভিয়াকে ১-০ গোলে হারিয়ে হয় তৃতীয়, এখন পর্যন্ত যেটি তাদের সর্বোচ্চ সাফল্য।
১৯৭৪ বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল খেলা পোল্যান্ড কিংবা ১৯৮৬ বিশ্বকাপের শেষ চারে ওঠা বেলজিয়ামকেও রাখা যেতে পারে এই তালিকায়। তবে ইউরোপের বাইরের দলগুলোর শেষ চারে ওঠাই বেশি চমকে দেয় ফুটবলপ্রেমীদের।