ফুলপুর উপজেলার পয়ারী ইউনিয়নের মধ্যে দিয়ে বয়ে গেছে খরিয়া নদী। কিন্তু নদীর ওপর সেতু না থাকায় সাঁকো দিয়ে পার হতে হচ্ছে দুই পাড়ের ছয় গ্রামের মানুষ। এতে তীব্র দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে তাদের। দীর্ঘদিন ধরে সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসলেও টনক নড়েনি কর্তৃপক্ষের।
নদীর দুই পাড়ের বাসিন্দারা জানান, নদীর একপাশে রয়েছে ফুলপুর উপজেলার গুপ্তেরগাঁও, মাহমুদপুর ও সুনই গ্রাম। আর অপর পাড়ে রয়েছে পয়ারী, গড় পয়ারী, সুতিয়া পয়ারীসহ আরও কয়েকটি গ্রাম। শিক্ষার্থী ও গ্রামের বাসিন্দারা প্রতিদিন সাঁকো পার হয়ে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও হাট-বাজারে যাতায়াত করে। অনেকে রোগী নিয়ে সময়মতো পৌঁছাতে পারেন না হাসপাতালে। সারা বছরই পানি থাকায় নদী পাড়ি দিতে ভোগান্তির শিকার হতে হয় বলে তারা জানিয়েছেন।
গুপ্তরগাওয়ের মো. হবিজুল ইসলাম বলেন, কৃষকেরা তাঁদের উৎপাদিত সবজি পিকআপ বা অন্য কোনো যানবাহনে করে বাজারে নিয়ে যেতে পারেন না। তখন তাঁদের বিভিন্ন উপায়ে এ সাঁকো পাড়ি দিতে হয়। এতে সময় বেশি লাগে। টাকাও খরচ হয় বেশি।
আজিজুল হক নামে আরেক ব্যবসায়ী বলেন, ‘এ নদীর ওপর সেতু না হওয়ায় আমরা খুব দুঃখে আছি। কবে যে সেতু হবে, আর আমাদের দুঃখ দূর হবে তা জানি না।’
সরেজমিন দেখা যায়, মানুষ নড়বড়ে সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছেন। মোটরসাইকেল ও বাইসাইকেলে পার হতে বেগ পোহাতে হয় অনেককে।
জানা গেছে, নদীর দুপাশে রয়েছে পাঁচ-ছয়টি স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা। এ ছাড়া ফুলপুরের সবজির গ্রাম হিসেবে পরিচিত গুপ্তেরগাঁয়ের লাখ লাখ টাকার সবজি কৃষকেরা এই সাঁকো দিয়ে বিভিন্ন হাট-বাজারে নিয়ে যান।
গড় পয়ারী গ্রামের নুরুল ইসলাম বলেন, ‘বেশি সমস্যায় পড়তে হয় যখন কোনো রোগী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তখন কোনো অ্যাম্বুলেন্স কিংবা অটোরিকশা গ্রামে আসে না। এতে কষ্টের সীমা থাকে না।’
পয়ারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক আলী হোসেন বলেন, ‘এখানে সেতু না থাকায় ওই এলাকার শত শত শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী পারাপারে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। তাদের কষ্ট লাঘবে একটি সেতু নির্মাণ করা জরুরি।’
ওই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মফিদুল ইসলাম বলেন, ‘এখানে সেতু করার জন্য উপজেলা প্রকৌশলীকে একাধিকবার বলা হয়েছে।’
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলীর মামুন অর রশিদ বলেন, ওই এলাকা পরিদর্শন করে সেতু নির্মাণের জন্য প্রস্তাব ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট পাঠানো হবে।