হোম > ছাপা সংস্করণ

এসএসসিতে সাফল্য: শত প্রতিকূলতা জয়, তবু দুশ্চিন্তায় ওরা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক

সামিয়া আক্তার। মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার পাঁচ্চর বালিকা উচ্চবিদ্যালয় থেকে এ বছর এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে সে। সামিয়ার বাবা একজন ভ্যানচালক। মা অন্যের বাসায় গৃহপরিচারিকার কাজ করে সংসার চালান। মেয়ের ভালো ফলের খবর পেয়ে দরিদ্র বাবার মুখে গর্বের হাসি আর চোখে আনন্দ-অশ্রু। 

শুধু সামিয়া নয়, তার মতো নেত্রকোনার দুর্গাপুরের ফেরদৌস এবং বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার নুসরাত জাহান সিনথিয়া শত বাধা পেরিয়ে এসএসসিতে সাফল্য অর্জন করেছে। এর মধ্যে সিনথিয়া জিপিএ-৫ এবং ফেরদৌস জিপিএ ৩ দশমিক ৬১ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়। তবে ভালো কলেজে ভর্তি এবং পড়ালেখার খরচ নিয়ে দুশ্চিন্তায় তাদের আনন্দ ম্লান হয়ে গেছে। আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর: 

শিবচর: পদ্মা নদীর ভাঙনের শিকার হয়ে সামিয়ার পরিবার ভূমিহীন। বাবা আব্দুল লতিফ ভূঁইয়া (৫৫) পদ্মা নদীর ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত। মাদবরেরচর এলাকায় নিজের পৈতৃক জমিজমা যতটুকু ছিল, সবই নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। ওই নদী ভাঙনের পর আব্দুল লতিফ ভূঁইয়া নিঃস্ব হয়ে যান। সেখান থেকে চলে আসেন পাঁচ্চর এলাকায়। এখানেই বসবাস শুরু করেন। সংসারের খরচ চালাতে ভ্যান চালান সামিয়ার বাবা। মা অন্যের বাসা-বাড়িতে কাজ করলেও বর্তমানে অসুস্থ তিনি। স্ত্রী ও পাঁচ মেয়ে এই নিয়ে আব্দুল লতিফ মিয়ার সংসার। 

মেধাবী সামিয়া বলে, ‘অভাব-অনটনের মধ্য দিয়ে বড় হচ্ছি। কষ্ট করে লেখাপড়া করছি। লক্ষ্য ছিল ভালো করার। সবার দোয়ায় জিপিএ-৫ পেয়েছি। বিদ্যালয়ের সব শিক্ষকসহ যাঁরা পাশে ছিলেন, সবার প্রতি কৃতজ্ঞ আমি। আমি লেখাপড়া করে অনেক দূর যেতে চাই।’ 
সামিয়ার মা রওশনারা বলেন, ‘অভাব-অনটনের সংসার। আমার মেয়ে ভালো রেজাল্ট করেছে। সে অনেক দূর পর্যন্ত লেখাপড়া করতে চায়। কিন্তু লেখাপড়া চালিয়ে নিতে আমরা দুশ্চিন্তায় আছি।’ 

দুর্গাপুর: ফেরদৌস আহমেদের বয়স ১৭। চেহারায় এখনো শৈশবের ছাপ। ১১ বছর আগেই ফেরদৌসকে ফেলে রেখে বাবা-মা চলে যাওয়ার মতো নির্মম অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হয়েছে তাকে। বাবা-মা ছেড়ে যাওয়ার পর আর কোথাও ঠাঁই না হলেও বৃদ্ধ দাদির আঁচলে ঠাঁই মিলেছিল। সেখানে কষ্টে বড় হলে একসময় বৃদ্ধ দাদিও অসুস্থ হয়ে পড়লে সংসারের অভাব ঘোচাতে অপ্রাপ্ত বয়সেই রাজমিস্ত্রি কাজসহ মুদিদোকান চালিয়ে সংসার চালিয়েছে। অভাবের মধ্যে কোনোমতে পড়ালেখা চালিয়ে যায়। এভাবে শত বাধা-প্রতিকূলতা জয় করে পড়াশোনা করে ফেরদৌস এবার এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৩ দশমিক ৬১ পেয়েছে।

ফেরদৌস বলে, ‘আমার বাবা-মা আমাকে ছেড়ে চলে যাওয়ার পর দাদির কাছেই বড় হয়েছি। দাদির সহযোগিতায় পড়াশোনাও করেছি। দাদি অসুস্থ হওয়ার পর থেকে আমি রাজমিস্ত্রির কাজ করেছি আর দোকানও চালিয়েছি। সবকিছুর সঙ্গে পড়াশোনাও করেছি। আমার কলেজে পড়ার অনেক ইচ্ছা। তবে খরচ জোগাতে পারব কি না, জানি না।’

আগৈলঝাড়া: বরিশালের আগৈলঝাড়ার নুসরাত জাহান সিনথিয়া এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেলেও পরিবার দিনমজুর হওয়ায় ভালো কলেজে ভর্তি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। কলেজে ভর্তি এবং পড়ালেখার খরচের চিন্তায় তার মা-বাবার চোখমুখে এখন হতাশার ছাপ। 

জানা গেছে, উপজেলা সদরের এস এম বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এবারের এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়েছে নুসরাত জাহান সিনথিয়া। সিনথিয়ার বাবা মো. ছগির শিকদার এক পত্রিকা বিক্রেতা। তিনি অন্যের পত্রিকা কমিশনে বিক্রি করে যা পান, তা দিয়ে মেয়ের লেখাপড়া ও সংসার চালান।

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ

ঢাকা সড়ক পরিবহন: প্রশ্নবিদ্ধ কমিটিতেই চলছে মালিক সমিতির কার্যক্রম

৪০ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করবে টিসিবি

৮ বছরে শিশুহত্যা হয়েছে ৪০০০

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির শীর্ষে বাংলাদেশ, তবে বাজারে পিছিয়ে

দেশে ব্যবসায় ঘুষ–দুর্নীতিসহ ১৭ রকমের বাধা

বিদ্যালয়ের জমিতে ৩৯১টি দোকান, ভাড়া নেয় কলেজ

সড়ক দুর্ঘটনায় ৬ প্রাণহানি

সেকশন