Ajker Patrika
হোম > ছাপা সংস্করণ

অন্তর্ঘাত না অতি উৎসাহ, চিন্তায় আ.লীগ নেতারা

তানিম আহমেদ, ঢাকা

অন্তর্ঘাত না অতি উৎসাহ, চিন্তায় আ.লীগ নেতারা

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ১ সেপ্টেম্বর সারা দেশে শোভাযাত্রা করেছিল বিএনপি। এতে দেশের বিভিন্ন স্থানে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন দলের নেতা-কর্মীরা। নারায়ণগঞ্জে গুলিতে মারা যান শাওন প্রধান নামের যুবদলের এক কর্মী। অভিযোগ উঠেছে, পুলিশের গুলিতে মারা যান শাওন। এরই মধ্যে অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতাদের দাবি, তৃণমূলে কোন্দলের কারণে নানা ধারা-উপধারায় বিভক্ত বিএনপি। এতে করে নিজেরাই সংঘর্ষে লিপ্ত হচ্ছে। অন্যদিকে বিদেশিদের নজর পেতে কর্মসূচির নামে পুলিশের সঙ্গে আগ বাড়িয়ে সহিংসতায় জড়িয়ে পড়ছে বিএনপি। তবে পরিস্থিতি মোকাবিলায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দায়িত্বশীল হলে হতাহতের পরিস্থিতি এড়ানো যেত বলে মনে করছেন তাঁরা।

আওয়ামী লীগ নেতারা মনে করছেন, বিএনপির বিভিন্ন গোষ্ঠী যেমন নিজেদের মধ্যে সংঘাতে জড়াচ্ছে, তেমনি কিছু কিছু জায়গায় পুলিশ অতি উৎসাহী ভূমিকা পালন করেছে। টিয়ার গ্যাসের শেল, সাউন্ড গ্রেনেড কিংবা লাঠিপেটা করে যেখানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা যেত, সেখানে হয়তো গুলি করা হয়েছে। এমন মনে করার পেছনে তাঁদের যুক্তি, বিএনপিকে কর্মসূচিতে বাধা দেওয়া হবে না বলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে নির্দেশনা দিয়েছেন, সেটা এখনো বলবৎ আছে। পুলিশের মধ্যে কেউ কেউ আছে, যারা সরকারকে বিব্রত করতে চায়। তারা অতি উৎসাহী হয়ে সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে গুলির ঘটনা ঘটাতে পারে।

বিএনপিকে দায়ী করে আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, দলটি পায়ে পা দিয়ে সহিংসতা বাধাচ্ছে। কারণ, তাদের কোনো রাজনীতি নেই। বিশ্বের কাছে গোলমেলে রাজনৈতিক অবস্থা তুলে ধরতে চায় তারা; পাশাপাশি সহিংসতা করে সরকারের বিরুদ্ধে বিদেশিদের কাছে নালিশ দিয়ে আনুকূল্য পেতে চেষ্টা করছে। এর অংশ হিসেবে বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতারা ব্রিটিশ ও কানাডার হাইকমিশনারদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্য বলেন, ‘বিএনপির মিছিলে গুলির বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দেশে এলে কথা বলা হবে। কী কারণে গুলি করা হয়েছে, সেই চিত্র নিশ্চয়ই তিনি জানাতে পারবেন। গুলি না করেও টিয়ার গ্যাসের শেল, লাঠিপেটা কিংবা সাউন্ড গ্রেনেড চার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা যেত।’

এসব সহিংসতার বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত আওয়ামী লীগের কাছে আছে বলে জানান দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুর রহমান। তিনি বলেন, প্রধান বিষয়টি হলো তাদের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের বিষয়। পুলিশের ওপর উদ্দেশ্যমূলকভাবে আক্রমণাত্মক আচরণ করছে। সেই জায়গায় পুলিশি বাধায় একটি পরিস্থিতি তৈরি করার অপচেষ্টা করা হচ্ছে। এগুলোই মূল কারণ বলে মনে হচ্ছে।

বিএনপির আন্দোলন মানেই সন্ত্রাস সৃষ্টির উসকানি এবং রাজপথ দখলের নামে নৈরাজ্য সৃষ্টি বলে দাবি করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। গত বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, তাদের এই চিরায়ত আচরণ দেশের গণতান্ত্রিক সংস্কৃতিকে সর্বদা বাধাগ্রস্ত করেছে। বৈশ্বিক সংকটে জনগণের পাশে না থেকে বরং তারা দেশ ও সরকারবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত আছে।

গত ২২ আগস্ট থেকে দেশের মহানগর, জেলা-উপজেলা পর্যায়ে কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ছে দলটি। বিএনপির অভিযোগ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতায় ক্ষমতাসীন দল এবং তাদের সহযোগী সংগঠনের লোকেরা কর্মসূচিতে নির্বিচার হামলা করছে। এর আগে ৩১ জুলাই ভোলায় লোডশেডিং ও দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে ডাকা কর্মসূচিতে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে দলটি। এ ঘটনায় বিএনপির দুজন নেতা-কর্মী নিহত হয়।

আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্য বলেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচির চিত্র দেখলে বোঝা যাবে, তারা আগে থেকেই মারামারির প্রস্তুতি নিয়ে এসেছে। রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী করে উৎসবের মাধ্যমে, কিন্তু বিএনপির বেশির ভাগই মিছিলে সেই চিত্র দেখা যায়নি। তাদের হাতে ব্যানার-ফেস্টুনের চেয়েও লাঠিসোঁটা বেশি ছিল। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, বিএনপির কর্মসূচির ধরন দেখে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে, তাদের নেতা-কর্মীরা সংঘাত-সংঘর্ষের প্রস্তুতি নিয়ে মাঠে নেমে এসব ঘটনা ঘটাচ্ছে।

জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ বলেন, ‘আমরা তো কোথাও বাধা দিচ্ছি না। দু-এক জায়গায় সংঘর্ষ হচ্ছে। ৬৪ জেলায় অনেক দিন পরে বিএনপি তাদের রাজনৈতিক কর্মসূচি হিসেবেই তারা রাস্তায় নেমেছে। এখন তারাই আগ্রাসী। যেহেতু রাস্তায় নামছে, তাদের দেখাতে হবে, কারা কত দূর হুলুস্থুল করতে পারছে। সে জন্য তারাই আগ্রাসীভাবে চেষ্টা করছে। সে ক্ষেত্রে দু-এক জায়গায় গোলমাল হয়েছে। তা তেমন কিছু না।’ তাঁর আশা, ‘বিএনপি যখন রাজনীতিতে আরও বেশি সক্রিয় হবে, জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য প্রস্তুতি নেবে, তখন আস্তে আস্তে সব ঠিক হয়ে যাবে।’

তবে আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের এক নেতা বলেন, ‘সহিংসতার জন্য বিএনপি ফাঁদ পেতে আছে। তারা এখন যেকোনো মূল্যে সহিংসতা চায়। দেশে রাজনৈতিক সহিংসতা হলে তাদেরই লাভ হবে। আর এতে ক্ষতি হবে আওয়ামী লীগের। কারণ, পরিস্থিতি ঘোলাটে হলে তৃতীয় পক্ষ সুযোগ নিতে পারে। আমরা সেটা হতে দিতে চাই না।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের পাল্টা কর্মসূচি দেওয়া উচিত নয়; কারণ, বিএনপি সহিংসতা করলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দেখবে। সেখানে আগ বাড়িয়ে আমাদের নেতা-কর্মীদের মাঠে নামা উচিত নয়। এতে হিতে বিপরীত হতে পারে। সহিংসতা না হলে রাজনীতির মাঠ আমাদেরই নিয়ন্ত্রণে থাকবে।’

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ

ঢাকা সড়ক পরিবহন: প্রশ্নবিদ্ধ কমিটিতেই চলছে মালিক সমিতির কার্যক্রম

৪০ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করবে টিসিবি

৮ বছরে শিশুহত্যা হয়েছে ৪০০০

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির শীর্ষে বাংলাদেশ, তবে বাজারে পিছিয়ে

দেশে ব্যবসায় ঘুষ–দুর্নীতিসহ ১৭ রকমের বাধা

বিদ্যালয়ের জমিতে ৩৯১টি দোকান, ভাড়া নেয় কলেজ