গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) প্রতিনিধি
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার অন্যতম ব্যস্ত সড়ক গোয়ালন্দ-ফরিদপুর-তাড়াইল সড়ক। ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের সঙ্গে যুক্ত হওয়ায় অনেকে মহাসড়কের চেয়ে নিরাপদ ভেবে এই আঞ্চলিক সড়কটি ব্যবহার করেন। তবে এই সড়কের প্রায় অর্ধেকটা আটকে মাড়াইকল বসিয়ে ধান ও ধনিয়া মাড়াইসহ ধান-খড় শুকানো হচ্ছে।
এতে সড়ক দিয়ে অনেকটা ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। যেকোনো সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
গোয়ালন্দ থেকে ফরিদপুর পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন স্থানে স্থানীয়রা সড়কের কিনারে ধান ও ধনিয়া ভাঙানোর যন্ত্র বা মাড়াইকল বসিয়েছেন। যন্ত্রসহ লোকজন সড়কের অর্ধেক জায়গা জুড়ে দখল করে আছেন। মাড়াই করা ধান ও ধনিয়া মাড়াই শেষে সড়কেই শুকানোর কাজ করতে দেখা যায়। অনেকের বাড়িতে পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় সড়ক বেছে নিয়েছেন।
এই অবস্থায়ই সড়ক দিয়ে দ্রুতগামী যানবাহন চলাচল করছে। এতে করে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।
উপজেলার উজানচর ইউনিয়নের মইজদ্দিন মোল্লাপাড়া এলাকায় দেখা যায়, সড়কের এক পাশে ধান মাড়াইকল বসানো হলেও ধানসহ লোকজনের উপস্থিতি সড়কটির অর্ধেক জায়গা দখল করে আছে। এ সময় স্থানীয় কৃষক আইনলা মৃধা বলেন, বাড়িতে তেমন জায়গা নেই। মাঠ থেকে ধান কেটে আনার পর মাড়াই করতে বা শুকাতে সড়কে রেখেছেন। এখানে ধান-গম মাড়াই করে খড় শুকিয়ে তারপর বাড়িতে নিয়ে যাবেন।
দুর্ঘটনার ঝুঁকির কথা বললে তিনি বলেন, বহু বছর ধরে এই সড়কেই কাজ করছেন।
কিছুটা দূরে ফরিদপুরের দিকে এগোলেই দেখা যায় সড়কের পাশে মাড়াই কল বসিয়ে ধনিয়া মাড়াই করা হচ্ছে। স্থানীয়রা জানান, তাঁরা পার্শ্ববর্তী ফরিদপুরের ঈশান গোপালপুর এলাকা থেকে যন্ত্রটি ভাড়া করে এনেছেন। ধনিয়া বা ধান মাড়াইয়ের বিনিময়ে নির্দিষ্ট পরিমাণে টাকা দিতে হয় বা ভাগ দিতে হয়।
কৃষক হাবিবুর রহমান বলেন, এলাকায় ধনিয়া মাড়াইয়ের যন্ত্র না থাকায় তাঁরা ঈশান গোপালপুর ডাবল ব্রিজের এলাকা থেকে যন্ত্রটি ভাড়া করে এনেছেন। প্রতি মণ ধান মাড়াই করার বিনিময়ে যন্ত্রের মালিককে ৩ থেকে ৪ কেজি করে ধান দিতে হয়। ধান না দিলে সমপরিমাণ ধানের মূল্য নির্ধারণ করে টাকা পরিশোধ করতে হয়। ধনিয়ার ক্ষেত্রেও একই নিয়ম।
উজানচর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য জাকির হোসেন বলেন, এই সড়কের বিভিন্ন স্থানে যন্ত্রের সাহায্যে ধান বা ধনিয়া মাড়াইয়ের কাজ করে আবার শুকাতে দেওয়া হয়। যে কারণে সড়কের অর্ধেকের বেশি জায়গা দখল হয়ে যায়। এতে করে সড়ক দুর্ঘটনার ঝুঁকি বেড়েছে। এ বিষয়ে স্থানীয়দের বারণ করলেও কেউ কথা শুনে না।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আজিজুল হক খান বলেন, এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে করণীয় কী তা ভেবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।