হোম > ছাপা সংস্করণ

প্রতিবন্ধী কার্ড নিয়ে বাণিজ্য

বরগুনা প্রতিনিধি

বরগুনায় প্রতিবন্ধী সংগঠনের নামে সহায়তা কার্ড বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক কমান্ডার আবদুর রশীদ মিয়ার ছেলে লিটন মিয়া বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী সংস্থা (বিপিএস) নামের একটি সংগঠন থেকে খাদ্য ও সেলাই মেশিন সহায়তা দেওয়ার নাম করে কার্ড বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে উধাও হয়ে গেছেন।

জেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এটা স্রেফ প্রতারণা, প্রতিবন্ধীদের নামে বেসরকারি কোনো সংগঠনের মাধ্যমে সহায়তা দেওয়া হয় না।

গতকাল বুধবার বেলা ১১টার দিকে শতাধিক নারী-পুরুষ বরগুনা সদর ইউনিয়নের ক্রোক এলাকায় জড়ো হয়ে লিটনের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ আনেন। ক্রোক এলাকার বাসিন্দা রিয়াজ মিয়া বলেন, গত বছরের নভেম্বর মাসে লিটন মিয়া বিপিএস নামে একটি সংগঠনের পরিচালক দাবি করে খাদ্য ও সেলাই মেশিন সহায়তা দেওয়ার নাম করে এলাকায় কার্ড বিক্রি শুরু করেন। লিটন মিয়া তিন প্যাকেজের কার্ড বিক্রি করেছেন। এর মধ্যে ৩৫০ টাকার কার্ডধারীদের প্রতি মাসে দুই কেজি করে আটা, চিনি, ডাল ও সয়াবিন তেল সহায়তা দেওয়া হবে। একইভাবে ৫০০ টাকার কার্ডধারীরা আটা, চিনি, তেল-ডালের পাশাপাশি পাবেন আধা কেজি গুঁড়া দুধ। এ ছাড়া সেলাই মেশিন দেওয়ার নামে দুই-তিন হাজার টাকার কার্ড বিক্রি করেছেন।

ভুক্তভোগী রিয়াজ আরও বলেন, কার্ড বিক্রির পরের মাসে প্রথম দিকের কিছু কার্ডধারীদের স্থানীয় কয়েকটি দোকান থেকে প্রতিশ্রুত খাদ্যসহায়তা দিয়ে আস্থা অর্জন করেন তিনি। এরপর মানুষ দেদারসে তাঁর কাছ থেকে কার্ড কিনেছেন। কিন্তু গত ডিসেম্বর মাস থেকে এখন পর্যন্ত আর কাউকে কার্ডের বিপরীতে কোনো ধরনের খাদ্য বা অন্য সহায়তা দেওয়া হয়নি।

এ সময় রিয়াজ বলেন, ‘আমরা তাঁকে ফোন দিয়ে সহায়তার বিষয়ে জানতে চাইলে দিনের পর দিন কাল-পরশু দেব বলে ওয়াদা দিচ্ছেন। এভাবে তিন মাস অতিক্রম হয়ে গেলে আমাদের সন্দেহ হয় এবং খোঁজ নিয়ে জানতে পারি, আমরা প্রতারণার শিকার।’

সেলাই মেশিন পাবেন এমন প্রত্যাশায় লিটনের কাছ থেকে দুই হাজার টাকায় কার্ড কিনেছিলেন বরগুনার ক্রোক এলাকার কনা আক্তার, সালমা বেগম, আসমা বেগম, মেরি বেগমসহ আরও অনেক নারী। ভুক্তভোগী কনা আক্তার বলেন, ‘লিটনকে বিশ্বাস করে টাকা দিয়েছিলাম। কিন্তু পরে জানতে পারি, আসলে তিনি প্রতারক। এখন আমরা কার্ডের টাকা ফেরত পেলেই হয়, মেশিনের দরকার নাই।’

ওই এলাকার ইউপি সদস্য মোশাররফ হোসেন বলেন, সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের ছেলে লিটন। এ কারণে সাধারণ মানুষ তাঁকে বিশ্বাস করে টাকা দিয়েছেন। ক্রোক এলাকার দোকানদার পারভীন, সগীর মিয়াসহ বেশ কয়েকজন দোকানদার লিটনের হয়ে কার্ড বিক্রি করেছেন। শুধু বরগুনা সদর ইউনিয়নই না, আশপাশের অনেক ইউনিয়ন এমনকি পাথরঘাটা উপজেলারও বেশ কিছু এলাকার হাজার হাজার নারী-পুরুষের কাছে কার্ড বিক্রি করে টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন লিটন।

এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে লিটন মিয়া নিজেকে বিপিএস বাংলাদেশের বরগুনা জেলার পরিচালক পরিচয় দিয়ে দাবি করেন, ‘সংগঠনটি নিবন্ধিত না হলেও ২০০৯ সালে বরগুনা জেলার তৎকালীন ডিডি আবদুল মতিন সংগঠন পরিচালনার অনুমতি দিয়েছেন। ঢাকার সরাফ উদ্দীন নামের এক ব্যবসায়ী আমার সংগঠনের মাধ্যমে প্রতিবন্ধীদের সহায়তা দিচ্ছেন।’ কার্ড বিক্রির বিষয়টি স্বীকার করে লিটন বলেন, ‘তাঁদের বাড়িতে মালামাল পৌঁছে দেওয়ার খরচা বাবদ টাকা নিয়েছি।’

জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক কাজী মুহাম্মদ ইব্রাহীম বলেন, ‘প্রতিবন্ধীদের আমরা সরাসরি মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সহায়তা দিয়ে থাকি। বরগুনা জেলায় কোনো সংগঠনের মাধ্যমে আমরা কার্যক্রম পরিচালনা করছি না। প্রতিবন্ধী সংগঠনের নামে যদি কেউ সহায়তা দেওয়ার নাম করে টাকাপয়সা নেন, তবে সেটা প্রতারণা। আমরা বিষয়টি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেব।’

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ

ঢাকা সড়ক পরিবহন: প্রশ্নবিদ্ধ কমিটিতেই চলছে মালিক সমিতির কার্যক্রম

৪০ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করবে টিসিবি

৮ বছরে শিশুহত্যা হয়েছে ৪০০০

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির শীর্ষে বাংলাদেশ, তবে বাজারে পিছিয়ে

দেশে ব্যবসায় ঘুষ–দুর্নীতিসহ ১৭ রকমের বাধা

বিদ্যালয়ের জমিতে ৩৯১টি দোকান, ভাড়া নেয় কলেজ

সড়ক দুর্ঘটনায় ৬ প্রাণহানি

সেকশন