রাজবাড়ী প্রতিনিধি
শীতের শুরুতে পিঠা বিক্রির ধুম পড়েছে রাজবাড়ীর ফুটপাতগুলোতে। হরেক রকমের ভর্তা দিয়ে চিতই পিঠা খেতে ভিড় করছেন ভোজনরসিকেরা। বিকেল হলেই ভিড় করছেন তাঁরা ভ্রাম্যমাণ পিঠার দোকানগুলোতে।
সরেজমিন শহরের বিভিন্ন দোকান ঘুরে দেখা গেছে, মার্কেটের এক কোনায় রাস্তার পাশে পিঠার ভ্রাম্যমাণ দোকান। শীতের সন্ধ্যায় সেখানে পিঠা খেতে ভিড় জমিয়েছে নানা বয়সী মানুষ। পিঠা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন দোকানিরা। দোকানগুলোতে কাঠ-খড়ি দিয়ে জ্বলছে দুটি করে চুলা। একটিতে মাটির খোলা, অন্যটিতে ভাপা পিঠা তৈরির পাতিল বসানো। পিঠা তৈরির ছাঁচে চালের গুঁড়া নিয়ে তার ওপর গুড়, নারিকেল ছিটিয়ে দিয়ে ভাপে দিচ্ছিলেন দোকানিরা। খোলায় বানানো হচ্ছিল চিতই পিঠা। তৈরি হতেই গরম-গরম ধোঁয়া উঠছে পিঠায়। চিতই পিঠা ক্রেতাদের জন্য ধনেপাতা, কালোজিরা, শুঁটকিসহ নানান ধরনের ভর্তা এবং হাঁস ও মুরগির মাংসের পাশাপাশি রাখা হয় খাসির ভুঁড়ি।
পিঠা খেতে আসা আফজাল হোসেন বলেন, ‘এখন আর আগের মতো গ্রামের বাড়িতে যাওয়া হয় না। তাই বলে শীত এলে পিঠা খাব না তা তো হবে না। সে জন্য ছোট মেয়েকে নিয়ে ফুটপাতের দোকানে পিঠা খেতে এসেছি। বিভিন্ন ভর্তা দিয়ে গরম-গরম চিতই পিঠা খেতে ভালোই লাগে।’
মরিয়ম বেগম বলেন, ‘চিতই পিঠা ভিজিয়ে খেতে ছেলেমেয়েরা খুবই পছন্দ করে। চাকরিজীবী হওয়ায় পিঠা তৈরির সময় পাই না। তাই মাঝেমধ্যে ফুটপাত থেকে পিঠা কিনে নিয়ে যাই।’
সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘প্রায় দিনই বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে পিঠা খেয়ে আসি। বিশেষ করে চিতই পিঠা বিভিন্ন ধরনের ভর্তা দিয়ে খেতে খুব ভালো লাগে।’
পিঠা বিক্রেতা ফজের আলী মণ্ডল বলেন, এখন শুধু চিতই পিঠা বিক্রি করছেন। বিকেল থেকে রাত ৯টার মধ্যে প্রায় ২০ কেজি চালের পিঠা বিক্রি হচ্ছে। এ সময় কেউ এখানে বসে গরম-গরম খাচ্ছে, আবার অনেকে নিয়ে যাচ্ছে। গরম পিঠার সঙ্গে তিন ধরনের ভর্তা দেন। কেউ মাংস খেতে চাইলে হাঁসের মাংস ও খাসির ভুঁড়ির ব্যবস্থা রয়েছে। প্রতি প্লেট ১০০ টাকা। এখনো ভালোভাবে শীত পড়ে নাই। কিছুদিন পর থেকে প্রায় ৩০ কেজি চালের পিঠা বিক্রি হবে।
আরেক পিঠা বিক্রেতা শিউলি বেগম জানালেন, ঢেঁকিতে চাল কুটে তিনি পিঠা তৈরি করেন। যার কারণে তার পিঠা ভালো হয়। এখন দিনে প্রায় ১৫-২২ কেজি চালের পিঠা বিক্রি করছেন। পার্সেলে ১০-৫০টি পিঠা প্রতিনিয়তই যাচ্ছে। পিঠার সঙ্গে ৪ ধরনের ভর্তা ফ্রি দেন। হাঁস ও মুরগির মাংস বিক্রি করেন। তা ছাড়া তিনি ভাপা পিঠাও তৈরি করেন। শীত যত বাড়বে তার পিঠা বিক্রিও তত বাড়বে।