গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) প্রতিনিধি
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে বোর্ড কর্মকর্তা ও শিক্ষা কর্মকর্তার পরিচয় দিয়ে শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপবৃত্তি নিশ্চিত করার কথা বলে একটি চক্র বিকাশের মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।
জানা গেছে, গোয়ালন্দের দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের সরকারিভাবে দেওয়া উপবৃত্তির টাকা হাতিয়ে নিতে প্রতারক চক্রটি শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তা ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার পরিচয় দেয়। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মোবাইলে বিভিন্ন নম্বর থেকে ফোন করে শিক্ষার্থীদের নাম-ঠিকানা, মা-বাবার নাম থেকে কলেজের ক্লাস রোল পর্যন্ত ঠিকঠাক বলে।
উপবৃত্তি নিশ্চিতের কথা বলে শিক্ষার্থীদের ফোনে পাঠানো নম্বর চায়। পরে শিক্ষার্থীদের ফোন হ্যাক করে প্রতারকেরা টাকা তুলে নেয়। সম্প্রতি প্রতারক চক্রটি প্রতারণার মাধ্যমে কলেজ পর্যায়ে উপবৃত্তিপ্রাপ্তদের প্রকাশিত তালিকা ধরে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীর টাকা হাতিয়ে নেয়।
স্থানীয় আব্দুল হালিম মিয়া কলেজের অন্তত ২০ / ২৫ জন শিক্ষার্থী উপবৃত্তির টাকাসহ তাদের বিকাশে অ্যাকাউন্টে থাকা টাকা খুইয়েছে।
আব্দুল হালিম মিয়া কলেজের শিক্ষার্থী মুক্তার হোসেন বলেন, ‘কয়েক দিন আগে শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তা পরিচয়ে এক ব্যক্তি তাকে জানায় যে, আমি উপবৃত্তির ২ হাজার ৪০০ টাকা পেয়েছি। তিনি আমার নাম, বাসার ঠিকানা, শ্রেণি রোল সবকিছু ঠিকঠাক বলেন। তারপর বলে, তোমার মোবাইলে একটি নম্বর যাবে, সেই নম্বর আমাকে তাড়াতাড়ি জানাও। তারপর টাকা তোমার নম্বরে চলে যাবে। সবকিছু ঠিকঠাক বলাতে আমার বিশ্বাস চলে আসে। আমি তাঁর কথার ফাঁদে পড়ে আমার বিকাশের পিন নম্বর বলে দেই। সঙ্গে সঙ্গে আমার মোবাইল থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা উধাও হয়ে যায়।’
ওই কলেজের ছাত্রী মহিবা আক্তার, ঝর্না খাতুনসহ কয়েকজন বলে, প্রতারক চক্রটি তাদের বেশ কিছু ছাত্র-ছাত্রীর টাকা এভাবে পিন নম্বর নিয়ে হাতিয়ে নিয়েছে।
আব্দুল হালিম মিয়া কলেজের অধ্যক্ষ বিলকিস আক্তার বলেন, বিষয়টি বেশ দুঃখজনক। কে বা কারা এভাবে ছাত্র-ছাত্রীদের প্রতারণায় ফেলে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে তা অনুসন্ধান করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জনাব মাসুদুর রহমান বলেন, কলেজের অধ্যক্ষের মাধ্যমে তিনি বিষয়টি জানতে পারেন। এ বিষয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের আরও সতর্ক থাকা উচিত ছিল। কেননা উপবৃত্তির টাকা সরাসরি তাদের বিকাশ নম্বরে চলে যায়। এ ক্ষেত্রে তাদের কারও সঙ্গে কোনোরূপ তথ্য শেয়ার করার দরকার নেই। এ বিষয়ে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতে আরও সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তিনি।