Ajker Patrika
হোম > ছাপা সংস্করণ

রুচি যখন অরুচির কবলে

বাসব রায়

রুচি যখন অরুচির কবলে

যার রুচি, তার রুচি। কারও রুচি নিয়ে অন্য কারও মাথাব্যথা থাকলে, সেটা বিড়ম্বনার। সত্যিকার অর্থেই তো আমাদের রুচির দুর্ভিক্ষ চলছে; কিন্তু উচিত কথা বলা সব সময় উচিত নয়। এ দেশ প্রতি ক্ষেত্রেই দুই ভাগে বিভক্ত। আপনি যত ভালো কিছুই বলেন আর যত গুরুত্ববহ উপলব্ধির উপস্থাপন করেন না কেন, বিশেষ একশ্রেণির মানুষ সেটাকে উল্টোমুখী করবেই করবে। একটি দল মুখিয়ে থাকে এমন কথার শিরোনাম নিয়ে কেলেঙ্কারি করতে। ভাবতে হবে, এখানে সব উচিত ‘উচিত’ নয়।

শিক্ষা এবং অশিক্ষা একই গতিতে চলছে এবং অশিক্ষা আরও তরতর বেগে ধাবিত। প্রগতিশীলদের বিরুদ্ধে অতি-প্রতিক্রিয়াশীলেরা সব সময় ওত পেতে আছে। শুধু একটি ‘অছিলা’! ব্যস, শুরু হলো কুরুচির বিস্ফোরণ ঘটাতে যা যা অস্ত্র লাগে। এখানে প্রগতি আর শিষ্টাচার বা প্রকৃত শিক্ষা বরাবরই মার খেয়ে আসছে। মুখে দুকথা বললেও প্রকাশ্যে অনেক প্রগতির ধারকেরা সেটা বলেন না। লাঞ্ছিত হওয়া থেকে মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে! শিক্ষা ও সংস্কৃতির এ রকম দৈন্যদশা আগামী প্রজন্মের জন্য বিরাট হুমকি হয়ে দেখা দিতে পারে।

নিরেট অপদার্থরা খুব সহজেই একজন সংস্কৃতিকর্মী সম্পর্কে বিষোদ্‌গারে মেতে ওঠে এবং প্রতিক্রিয়াশীলেরা প্রকাশ্যে উদ্ভট ও বানোয়াট বিবৃতি দিয়ে প্রচুর বাহবা পাচ্ছে। মুখোশধারী অশিক্ষিতদের দলবদ্ধ আক্রমণে নিরপেক্ষ নির্বিবাদীরা ভয়ানক অসহায়। জানি না এভাবে একটি দেশের শিক্ষা-সংস্কৃতি এতটা প্রকাশ্যে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিলেও সরকার বা চেতনার পক্ষেরা নীরব কেন। প্রশ্ন জাগে, কৌতূহল বেড়ে যায়, উত্তর মেলে না।

তথাকথিতদের ঠেলায় প্রকৃত বুদ্ধিজীবীরা পুরোটাই কোণঠাসা। চোখ মেলে তাকালে চোখ চোখের জায়গায় থাকবে না, উচিত কথা বললে জিহ্বা কেটে নেওয়া হবে, দ্রুত হাঁটলে ঠ্যাং গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে ইত্যাদি ঘটনার আমরা করুণ এবং বোবা সাক্ষী। সুন্দর একটি দেশের স্বাধীন সত্তার ওপর দাঁড়িয়ে সত্য বলা যেন মহাপাপ।

প্রগতির ধারক-বাহকদের সংখ্যা খুবই কম এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের বিবেকবানেরা সম্পূর্ণভাবে নীরব হয়ে যাবেন, এটা খুবই সত্যি। আমরা একটা সময় বর্বর এবং আগ্রাসীদের কবলে পড়ব, সন্দেহ নেই। এ দেশে সনাতনীদের চেয়েও বড় সংখ্যালঘু হচ্ছে প্রগতিশীলেরা।

আজ নিম্নরুচির কথা বলা যাবে না, রুচির দৈন্যদশা সম্পর্কে মন্তব্য করা যাবে না। বাহবা রে দেশ! কতখানি রুচিহীন হলে একটি সংঘবদ্ধ আক্রমণকারী দল চেতনার বিপরীতে সটান দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ করতে পারে আর নির্লজ্জ দোসরেরা একযোগে সেটাকে সমর্থন জুগিয়ে চলে। অন্ধ এবং নোংরা মানসিকতার জয়জয়কার। মানসিক উন্নয়নে বিশ্ব এগিয়ে গেছে বা যাবে আর আমরা দিন দিন পিছিয়ে যাব, এটাই যেন ক্রমেই সত্যি হতে চলেছে। আমাদের নিম্নরুচির দাপট এতটাই যে এখানে সুস্থধারা বিপর্যয়ের মুখে সব সময়।

এ দেশে হিরো আলমদের সংখ্যা প্রতিটি মুহূর্তে বেড়ে যাবে; অন্ধ একদল বিবেকহীন সেটাকে নতুন নতুন আঙ্গিকে সমর্থন জুগিয়ে যাবে। প্রগতিশীলদের রুখতে হিরো আলমদের আবির্ভাব সময়ের তাৎপর্যময় দাবি আর সেটা পূরণের পথে। অন্ধকারে বসে থেকে যারা আলোর আহ্বান করে, তাদের সংখ্যা কমে যাবে; বরং আলোর বিপরীতে থেকে যারা অন্ধকারে মাখামাখি হবে, টিকে থাকবে তারাই। উল্টোরথের উল্টোমুখী যাত্রী আমরা। হিরো আলমরা একদিন দেশ চালাবে, হিরো আলমরা একদিন বিশ্বজয় করবে, এটাই স্বাভাবিক।

বিশেষ একশ্রেণির বিকারগ্রস্ত বুদ্ধিজীবীর কাছে শিক্ষা, সংস্কৃতি ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের লোকেরা সবভাবে লাঞ্ছিত। একদল একধরনের বিরূপ উন্মাদনার দামামায় বিশ্ব কাঁপাতে চায়। এসব মানুষ হিরো আলমের সঙ্গে থাকবে, শক্তি-সাহস জুগিয়ে যাবে—এটাই তো স্বাভাবিক। মামুনুর রশীদরা একদিন চিরতরে মুছে যাবেন আর সেখানে দাপিয়ে রাজত্ব করবেন হিরো আলমরা, সেদিন খুবই কাছে।

লেখক: কবি

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ

ঢাকা সড়ক পরিবহন: প্রশ্নবিদ্ধ কমিটিতেই চলছে মালিক সমিতির কার্যক্রম

৪০ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করবে টিসিবি

৮ বছরে শিশুহত্যা হয়েছে ৪০০০

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির শীর্ষে বাংলাদেশ, তবে বাজারে পিছিয়ে

দেশে ব্যবসায় ঘুষ–দুর্নীতিসহ ১৭ রকমের বাধা

বিদ্যালয়ের জমিতে ৩৯১টি দোকান, ভাড়া নেয় কলেজ