হবিগঞ্জে দেদার কাটা হচ্ছে খোয়াই নদের দুই পাড়ের মাটি। গুটিকয়েক মাটিখেকোর কারণে নদের দুই পাশের জনপদ রয়েছে ঝুঁকিতে।সরকারের কোনো দপ্তর কখনোই প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এতে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন মাটিখেকোরা।
জেলার চুনারুঘাট, শায়েস্তাগঞ্জ ও সদর উপজেলার পাশ দিয়ে বয়ে গেছে খোয়াই নদ। এ নদের সঙ্গে বহু মানুষের জীবন-জীবিকা জড়িত।
কিন্তু অত্যাধুনিক মেশিন দিয়ে দিন-রাতে বিরামহীন নদের পাড় ও চর থেকে শুরু করে ফসলি জমির মাটিও কাটা হচ্ছে। শুষ্ক মৌসুম মাটি কাটার জন্য সুবিধাজনক হওয়ায় শীত শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই শুরু হয়ে মাটিখেকোদের তৎপরতা। ফলে বর্ষা মৌসুমের আগেই ভাঙন-আতঙ্কে দিন কাটে খোয়াই পাড়ের মানুষদের।
খোয়াই নদের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, নদের দুই পাড়ের শতাধিক স্থানে অত্যাধুনিক যন্ত্র দিয়ে মাটি কাটা হচ্ছে। বালু ও মাটিখেকোরা প্রশাসনের নাকের ডগায় সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে। জেলার চুনারুঘাট উপজেলার ঘরগাঁও ব্রিজ এলাকা, শায়েস্তাগঞ্জের পুরান বাজার, লস্করপুর ব্রিজ এলাকা, চুরহামুয়া, আলাপুর, লেঞ্জাপাড়া, দক্ষিণ চরহামুয়া নোয়াবাদ, মশাজানসহ বিভিন্ন স্থানে চলছে মাটি কাটা।
শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা কৃষক শাহীন মিয়া বলেন, ‘মাত্র কয়েক মাস আগেও নদীর চরজুড়ে বিভিন্ন শাকসবজির চাষ হতো। কিন্তু এখন পুরো চর ক্ষতবিক্ষত ভেকু ও কোদালের আঘাতে। ওরা আগে পুরা নদীটাই খাইছে। এরপরও এরার পেট ভরছে না। এখন তাই গিলে খাইতাছে খোয়াই নদীর চর।’
হবিগঞ্জ সদর উপজেলার দক্ষিণ চরহামুয়া এলাকার নদের তীরে ভেকু মেশিনের চালক মিরপুর-বশিনা এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ শাহ আলম জানান, প্রতি ঘণ্টায় তিন হাজার টাকা মজুরিতে নদের তীরে ভেকু দিয়ে কাটি কাটেন তিনি। দৈনিক পাঁচ-সাত ঘণ্টা কাজ করেন।মাঝেমধ্যে ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্তও কাজ করতে হয়। ভেকু দিয়ে কাটা মাটি উত্তোলনের দায়িত্বে থাকে আরও দুটি ট্রাক্টর। গড়ে একেকটা স্পট থেকে দিনে ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকার মাটি উত্তোলন করা হয়।
দায়িত্বে থাকা মালিকপক্ষের লোক ইদ্রিস জানান, তিনি কেবল দেখাশোনার দায়িত্বে আছেন। জানতে চাইলে হবিগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. রফিকুল আলম বলেন, বিষয়টি তাঁর জানা নেই। এ রকম ঘটনা সত্য হয়ে থাকলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।