নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
সরকার পরিচালনা করার জন্য মহাজোটের ব্যানারে জাতীয় পার্টি ((জাপা) জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিল। কিন্তু দলটির প্রয়াত চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের নির্দেশে জনসাধারণের জন্য কাজ করার কথা বলে দলটি জাতীয় সংসদে বিরোধী দলের আসনে বসেছেন। তাই বিরোধী দলের সুযোগ ও সুবিধা বাড়ানোর দাবি জানান।
গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে পাসের জন্য উত্থাপিত বিরোধীদলীয় নেতা ও উপনেতা (পারিতোষিক ও বিশেষাধিকার) বিল-২০২১ বাছাই কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাবের ওপর আলোচনাকালে এ সব দাবি করেন জাতীয় পার্টির সাংসদরা।
জাপার সাংসদ ফখরুল ইমাম বলেন, ‘আমি হতাশ হয়েছি। কারণ শক্তিশালী বিরোধী যদি আপনি সৃষ্টি করতে চান তাহলে বিরোধী দলকে এম্পাওয়ার্মেন্ট করতে অসুবিধা কোথায়?
২০১৪ সাল থেকে আমরা অনেকবার প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ করেছি আমাদের চিফ হুইপ ও হুইপদের পদগুলো আপগ্রেড করা হোক। আমাদের একজন ডেপুটি স্পিকার দেওয়া হোক। সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে সভাপতির পদ বাড়ানো হোক। এতে কারও কিছু যায়, আসবে না।’
ফখরুল ইমাম বলেন, ‘এখন আমরা বিরোধী দলে যাওয়ার জন্য নির্বাচন করি না। আমরা জোট ও মহাজোট করি সরকারে থাকার জন্য। সরকার পরিচালনা করার জন্য। একমাত্র জাতীয় পার্টি মহাজোটে থাকার পরেও আমরা বিরোধী দলে অংশগ্রহণ করছি।’
জাপার মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, বিরোধী দলের সুযোগ-সুবিধা প্রয়োজন। আমাদের চিফ হুইপের কোনো স্বীকৃতি নেই। সরকারি দলের কয়েকজন হুইপ আছেন, যারা প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদা ভোগ করেন। আমাদের চিফ হুইপের যদি এই মর্যাদা দেওয়া হয়, তাহলে সংসদ আরও শক্তিশালী হবে। সাংসদদের সম্মান আরও বাড়বে।’
সংসদে সবার বেতন-ভাতা বাড়ানোর দাবি করে সংরক্ষিত আসনের সাংসদ বেগম রওশন আরা মান্নান বলেন, ‘আমরা সংসদের দ্বিতীয় বৃহত্তম দল। আমাদের চিফ হুইপের স্বীকৃতি দরকার। সঙ্গে দুজন হুইপ রয়েছেন, তাঁদেরও। সবারই বেতন-ভাতা বর্ধিত করা হোক।’
এ সময় জাপার সমালোচনা করে বিএনপির সাংসদ হারুনুর রশিদ বলেন, বিল নিয়ে আলোচনার সময় বিরোধী দলের সদস্যরা বাস্তব কথা বলেছেন। বিরোধী দলের অবস্থান শুধু কাগজে কলমে। আসলে সাংসদে বিরোধী দল নেই। এটা ওনারাই স্বীকার করেছেন।
আলোচনা শেষে জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা ও উপনেতার পারিতোষিক ও বিশেষাধিকারসংক্রান্ত সামরিক আমলের আইন বাতিল করে নতুন আইন করতে সংসদে বিল পাস হয়েছে। নতুন আইনে বিরোধী দলীয় নেতা সরকারের একজন মন্ত্রীর জন্য ধার্য বেতন, ভাতা, অন্যান্য বিশেষাধিকার পাবেন। আর বিরোধী দলীয় উপনেতা একজন প্রতিমন্ত্রীর সমান বেতন, ভাতা, ও অন্যান্য বিশেষাধিকার পাবেন।