Ajker Patrika
হোম > ছাপা সংস্করণ

খেজুর রস সংগ্রহে প্রস্তুতি

মিরাজ সিকদার, ডামুড্যা

খেজুর রস সংগ্রহে প্রস্তুতি

প্রকৃতিতে শীত শীত ভাব শুরু হয়ে গেছে। সকালের শিশির ভেজা ঘাস আর হালকা কুয়াশায় প্রস্তুত হচ্ছে প্রকৃতি। একই সঙ্গে খেজুরের রস সংগ্রহে প্রস্তুত হতে দেখা গেছে ডামুড্যা উপজেলার গাছিদেরও।

শরীয়তপুরের ডামুড্যা উপজেলার ইসলামপুর, পূর্ব ডামুড্যা, দারুলআমান, কনেশ্বর, সিড্যা, ধানকাঠি ও শিধলকুড়া ইউনিয়নের বেশ কিছু গ্রামে বেশ কয়জনের উদ্যোগে গড়ে ওঠে ব্যক্তিগত কিছু খেজুরের বাগান। দুই বছর ধরে তারা বাণিজ্যিকভাবে খেজুরের রস থেকে গুড় উৎপাদন শুরু করেছে। প্রত্যন্ত গ্রামগুলোতে গড়ে ওঠা বাগানগুলোতে এখন এই এলাকার অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিশেষ অবদান রাখবে বলে জানান এলাকাবাসী। তাদের অনুসরণ করে ও খেজুরের রসের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় অনেকেই আগ্রহী হয়ে খেজুরের বাগান করতে চান। উদ্যোক্তারা প্রতিনিয়তই বিভিন্ন পরামর্শ নিতে আসছেন বলে জানান বাগানের মালিকেরা।

বাগান মালিক হাসান রাজা বলেন, ‘২০ দিন ধরে কাজ শুরু করেছি। গাছের ময়লা ও অপ্রয়োজনীয় ডালপালা ছেঁটে ফেলা হয়েছে। ধারালো দা (গাছি দা) দিয়ে খেজুর গাছের সোনালি অংশ বের করে (যাকে বলে চাঁচ দেওয়া) নোলন স্থাপনের কাজও শেষ। কিছুদিন পরই গাছে লাগানো হবে মাটির পাতিল। এরপরই শুরু হবে সুস্বাদু খেজুর রস সংগ্রহের কাজ। তা দিয়ে তৈরি হবে গুড় ও পাটালি।’

হাসান রাজা বলেন, ‘গাছ একবার ছাঁটলে তিন-চার দিন রস সংগ্রহ করা যায় এবং পরবর্তীতে তিন দিন শুকাতে হয়। এভাবে কাটলে গাছের রস সুমিষ্ট হয়। রস সাধারণত নভেম্বর থেকে এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত সংগ্রহ করা যায়। রস সংগ্রহের পর হাঁড়ি পরিষ্কার করে রোদে শুকাতে হয় অথবা আগুনে ছেঁকে নিতে হয়। এতে সংগৃহীত রসে গাঁজন বন্ধ হয়।’ তিনি বলেন, ‘ঝুঁকি নিয়েই কোমরে রশি (দড়ি) বেঁধে গাছে ঝুলে রস সংগ্রহের কাজ করেন গাছিরা। প্রতিদিন বিকেলে ছোট-বড় মাটির হাঁড়ি গাছে বাঁধা হয়, আর সকালে রস সংগ্রহ করা হয়। কেউ কেউ কাঁচা রস এলাকার বিভিন্ন স্থানে ও হাটে-বাজারে খাওয়ার জন্য বিক্রি করেন। আবার কেউ কেউ সকালেই এই রস জ্বালিয়ে গুড় তৈরি করেন।’

স্থানীয়রা জানান, ডামুড্যা উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নের সব গ্রামে এক সময় খেজুর গাছে ভরপুর ছিল। ডামুড্যা উপজেলার খেজুর গুড়ের অনেক সুনাম ছিল। ডামুড্যার খেজুরের রসের ঝোলা গুড় ও পাটালি গুড় রাজধানীসহ দেশের বাইরেও রপ্তানি করা হতো। গ্রামের প্রতিটি ঘরে ঘরে খেজুরের গুড় দিয়ে তৈরি হতো মুড়ির মোয়া। তাই শীত এলেই ব্যস্ত হয়ে পড়তেন গাছিরা। বিকেলে গাছে গাছে হাঁড়ি বাঁধা, সকালে রস সংগ্রহে গাঁছিদের ব্যস্ততা দেখা যেত। দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত চলতো গুড় আর পাটালি তৈরির কাজ। খেজুরের গুড় আর পাটালির মৌ মৌ গন্ধে মৌমাছির গুন গুন শব্দে প্রকৃতি মুখরিত হয়ে উঠত। কালের বিবর্তনে এসব হারিয়ে যেতে বসেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ডামুড্যা উপজেলায় খেজুর গাছ কমে যাওয়ার আসল রহস্য। কয়েক বছর ধরে ডামুড্যাতে ইটের ভাটার রমরমা ব্যবসা চলছে। এসব ভাটায় প্রতিবছর হাজারো খেজুর গাছ জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। নতুন নতুন আবাসন হওয়ার কারণেও ধ্বংস হচ্ছে খেজুর গাছের বাগান। এ বিষয়ে ডামুড্যা উপজেলার বাসিন্দা আবুল কাশেম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের বাড়িতে একসময় ২০০ খেজুর গাছ ছিল। তাতে প্রায় ৮০ থেকে ১০০ হাঁড়ি রস হতো। আমরা এই রস জ্বালিয়ে পাতলা গুড় তৈরি করতাম। কিন্তু আজ এই সব কিছুই আমাদের কাছে ইতিহাস। আজ আমাদের খেজুরের রস কিনে খেতে হয়। আমাদের বাড়ি ভাগাভাগির কারণে সবগুলো খেজুর গাছ কেটে ফেলতে হয়েছে।’

নতুন করে কেউ খেজুরের বাগান করতে চাইলে যে কোনো সহযোগিতা করা হবে বলে জানান উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শেখ আজিজুর রহমান।

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ

ঢাকা সড়ক পরিবহন: প্রশ্নবিদ্ধ কমিটিতেই চলছে মালিক সমিতির কার্যক্রম

৪০ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করবে টিসিবি

৮ বছরে শিশুহত্যা হয়েছে ৪০০০

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির শীর্ষে বাংলাদেশ, তবে বাজারে পিছিয়ে

দেশে ব্যবসায় ঘুষ–দুর্নীতিসহ ১৭ রকমের বাধা

বিদ্যালয়ের জমিতে ৩৯১টি দোকান, ভাড়া নেয় কলেজ