Ajker Patrika
হোম > ছাপা সংস্করণ

পানির জন্য দুই কিলোমিটার

অনুপম মারমা, থানচি (বান্দরবান)

পানির জন্য দুই কিলোমিটার

বান্দরবানের থানচি উপজেলা বলিপাড়া ইউনিয়নের ‘সূর্যের হাসি ক্লিনিকে’ পানি নেই প্রায় ছয় বছর। কর্মচারীদের বেতনের টাকা দিয়ে দুই কিলোমিটার দূরের বাগানপাড়া এলাকা থেকে ক্লিনিকের জন্য পানি আনতে হয়। শ্রমিক দিয়ে পানি আনতে গিয়ে মাসের দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা খরচ করতে হয়। এ জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ মাসে ৫০০ টাকা দিলেও সমস্যা সমাধান হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন ক্লিনিকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

জানা যায়, ২০১৬ সালে বলিপাড়া ইউনিয়নের হিন্দুপাড়া বলিবাজারে প্রবেশের প্রধান ফটকের পাশে চার কক্ষবিশিষ্ট একটি আধাপাকা বাড়িতে ভাড়া নিয়ে ‘সূর্যের হাসি ক্লিনিক’ স্থাপন করে স্থানীয় এনজিও সংস্থা গ্রিন হিল। ক্লিনিকে মূলত গর্ভধারণ থেকে শুরু করে পরীক্ষা-নিরীক্ষা, প্রসূতিসেবা ও মাতৃত্বসেবা দিয়ে থাকেন ক্লিনিকটি। কিন্তু শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ক্লিনিকে পানির সমস্যা নিয়েই চলছে সেবাদান।

ক্লিনিকের মোট ছয়জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর খাবার পানি, বাসন-পাতিল ধোয়া, প্রসূতিদের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, কাপড়চোপড়, হাত ধোয়া, খাবার পানির জোগান দিতে হয় শ্রমিক দিয়ে সংগৃহীত পানি থেকে।

ক্লিনিকের প্যারামেডিক সেবিকা উসাইনু মারমা ও সিনজির ময় বম জানান, ক্লিনিক স্থাপনের পর গত ছয় বছরে বহু প্রসূতিকে সেবা দেওয়া হয়েছে। ১৭০ জন মাকে ডেলিভারিতে সাফল্য দেখিয়েছে। তবে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি, অপারেশন কক্ষ ও জনবল অভাবে ঝুঁকিপূর্ণ ডেলিভারি প্রসূতি ১৫ জনকে বান্দরবানে বিভিন্ন প্রসূতিসেবা প্রতিষ্ঠানে স্থানান্তর করতে হয়েছে।

ক্লিনিকের ম্যানেজার সিমিয়ন বম বলেন, প্রসূতির সেবা দিতে ক্লিনিক থেকে দুই কিলোমিটার দূরের বাগানপাড়া থেকে খাওয়ার ও ব্যবহারের জন্য পানি কিনে আনতে হয়। ক্লিনিকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপার্জিত বেতন থেকেই এই টাকা শোধ করতে হয়। এই সমস্যা সমাধানে কেউ নেই।

ক্লিনিকে ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করছেন সিমিয়ন বম। এ ছাড়া প্যারামেডিকস নার্স উসাইনু মারমা, সিনজির ময় বম, ক্লিনার লিলিপার বম, বীথিকা চাকমা, গার্ড দুপুল তংচংগ্যাসহ ছয়জন ক্লিনিকে দায়িত্ব পালন করছেন। গত শনিবার সরেজমিনে ক্লিনিকে গিয়ে তাঁদের ক্লিনিকেই পাওয়া গেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সূর্যের হাসি ক্লিনিকের পাশে ১০০ গজের মধ্যে কয়েকজন প্রভাশালীর বাড়ি ও বলিপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কার্যালয়। এসব স্থানে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে মেকানিক আবু তৈয়বের উদ্যোগের জিএসএফ পাইপের সাহায্যে পানি সরবরাহ লাইন টানা হয়েছে। সেখানে মাসিক টাকার ভিত্তিতে পানি সরবরাহ করছেন আবু তৈয়ব মেকানিক।

ক্লিনিকের ম্যানেজার সিমিয়ন বম বলেন, ‘ক্লিনিকটি বিএনপি নেতা সেলিম ভূঞার বাড়িতে হওয়ায় আবু তৈয়বের পানির লাইন আমাদের দেওয়া হয়নি। বাড়ির মালিক একটি নলকূপ করে দিয়েছেন, কিন্তু এটাও নষ্ট হয়ে গেছে।’

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে গতকাল সোমবার আবু তৈয়ব বলেন, ‘আগে ক্লিনিকে পানির সংযোগ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু চার-পাঁচ মাস আগে রাস্তা তৈরির সময় সংযোগ কেটে দিতে হয়। এরপর আর সংযোগ দেওয়া হয়নি।’

যোগাযোগ করা হলে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা অনাদি রঞ্জন বড়ুয়া বলেন, বলিপাড়ার ক্লিনিকে মাতৃত্ব ও স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার ফলে আমাদের থানচি উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর সাফল্য পেয়েছে। ওই স্থানে পানির সমস্যার কথা আমি জানি না। ৬ এপ্রিল পরিদর্শন করব। পানির লাইনে সমস্যা দেখালে উপজেলা প্রশাসনকে অভিহিত করে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলব।’

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ

ঢাকা সড়ক পরিবহন: প্রশ্নবিদ্ধ কমিটিতেই চলছে মালিক সমিতির কার্যক্রম

৪০ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করবে টিসিবি

৮ বছরে শিশুহত্যা হয়েছে ৪০০০

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির শীর্ষে বাংলাদেশ, তবে বাজারে পিছিয়ে

দেশে ব্যবসায় ঘুষ–দুর্নীতিসহ ১৭ রকমের বাধা

বিদ্যালয়ের জমিতে ৩৯১টি দোকান, ভাড়া নেয় কলেজ