করোনার কারণে প্রায় ১৮ মাস শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গুলো বন্ধ থাকার পর গত ১২ সেপ্টেম্বর খুলে দেওয়া হয়েছে স্কুল-কলেজ। দীর্ঘদিন পর বিদ্যালয়ে আসতে পেরে খুশি ছাত্র-ছাত্রীরা।
শ্রেণি কক্ষে ফিরতে পারায় অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে গত বৃহস্পতিবার লোহাগড়া সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের এস এস সি পরীক্ষার্থী মো. ফাইদ হোসেন বলেন, ‘কত যে খুশি তা বলে বোঝাতে পারবো না। কলেজে যাওয়ার সময় এসে গেছে অথচ একটি দিনও বিদ্যালয়ের ক্লাসে আসা হয়নি। তাই এসএসসি পরীক্ষার আগে অন্তত বিদ্যালয়ে এসে ক্লাসে ঢুকতে পেরেছি ক্লাসের বন্ধুদের সঙ্গে পরিচয় হতে পেরেছি তাই আনন্দের শেষ নেই।’
তাঁর কথা শেষ না হতেই বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী সাদিয়া জান্নাত রাফি জানান, ঘরে বসেই পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে হচ্ছিল। তবে বিদ্যালয় খোলার ঘোষণায় মাত্র কয়েক দিনে যেমন পড়ালেখা হয়েছে গত দেড় বছরে তার বিন্দুমাত্র হয়নি। এখন শিক্ষক ও সহপাঠীদের সান্নিধ্যে আসতে পারায় শিক্ষা জীবনের ঘাটতির কষ্ট কিছুটা হলেও দূর হবে।
চাচই ধানাইড় মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র মো. আব্দুল্লাহ জানান, বিদ্যালয় বন্ধ থাকার কারণে অনেক সহপাঠী নানা ভাবে ভুল পথে চলে গেছে। বিভিন্ন কারণে ঝরে পড়ার পাশাপাশি কারও বা বিয়ে হয়ে যাওয়াতে বিদ্যালয়ে ফেরার পথ বন্ধ হয়ে গেছে। এসব বিষয়গুলো তাদের ব্যথিত করা সত্ত্বেও শেষ পর্যন্ত তারা ক্লাসে ফিরতে পেরে খুশি।
মরিচ পাশা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী মোসা. ফারজানার পিতা আরিফুজ্জামান জানান, ঘর বন্দী অবস্থায় থেকে বাচ্চারা মানসিক ভাবে অসুস্থ হয়ে গিয়েছিল। এবার পরিস্থিতি বিবেচনায় সরকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ায় শিশুরা ধীরে ধীরে জড়তা কাটিয়ে উঠতে পারবে।
লোহাগড়া সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এস এম হায়াতুজ্জামান জানান, দীর্ঘ সময়ের বন্দী জীবনে কারণে শিক্ষার্থীরা হাঁপিয়ে উঠেছিল। দীর্ঘদিন পরে ক্লাসে ফিরতে পারায় ছাত্র-ছাত্রীরা শুধু অবসাদগ্রস্ত অবস্থা থেকে মুক্তি পাবে না বরং তারা পড়ালেখায় অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে অনেক বেশি মনোযোগী হবে।