জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার সরকারি দপ্তরের ওয়েবসাইটগুলোতে তথ্য হালনাগাদ না হওয়ায় বিড়াম্বনার শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। উপজেলার বিভিন্ন প্রকল্পের আয়-ব্যয়, প্রকল্প তালিকা ও বাজেট-সংক্রান্ত কোনো তথ্যও নেই ওই ওয়েবসাইটে।
এদিকে সরকারি কর্মকর্তাদের মোবাইল নম্বর আপডেট না থাকায় তথ্য সংগ্রহে বিভ্রান্ত হন গণমাধ্যমকর্মীরা। তবে উপজেলা প্রশাসন বলছে, সরকারি ওয়েবসাইটে দ্রুত সঠিক তথ্য হালনাগাদ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এটুআই প্রকল্প এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের যৌথ উদ্যোগে সারা দেশের জেলা, উপজেলা থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ের সরকারি দপ্তরের গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের সমন্বয়ে জাতীয় তথ্য বাতায়নের আওতায় আলাদা আলাদা ওয়ের পোর্টাল তৈরি করা হয়। যেন সাধারণ নাগরিকেরা ঘরে বসেই নিজ নিজ এলাকার প্রয়োজনীয় তথ্য ও সেবা অনলাইনে পেতে পারেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলা ও দুটি পৌরসভার ১১টি ইউনিয়নে সরকারি অর্ধশতাধিক ওয়েবসাইট রয়েছে। এসব ওয়েবসাইটের অধিকাংশেরই নতুন তথ্য নেই। এতে সাধারণ মানুষ তথ্যপ্রাপ্তির অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
উপজেলার সরকারি ওয়েবসাইট পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে, ইউনিয়ন পরিষদের ওয়েবসাইটগুলোতে ‘প্রকল্পসমূহ’ ক্যাটাগরিতে ভিজিট করলে কাবিখা, কাবিটা, টিআর, জিআর, এলজিএসপি ও এলজিডি প্রকল্পের তথ্য নেই। ফুলকোচা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মোমিনুল ইসলামের ফোন নম্বরের তালিকায় ঠাকুরগাঁও জেলার এক ব্যক্তির ফোন নম্বর দেওয়া রয়েছে।
উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের ওয়েবসাইটগুলোতে দেখা গেছে, উপজেলার ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অফিসের ওয়েবসাইটে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। নেই কর্মকর্তার নাম ও ফোন নম্বর। মেলান্দহ থানার ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতেই সাইটের প্রদর্শনীতে এক পুলিশের ছবি ও করোনাভাইরাস পরীক্ষার রিপোর্টে বারবার প্রদর্শন করছে। নেই পুলিশ কর্মকর্তাদের নাম ও ফোন নম্বর।
স্থানীয় বাসিন্দা রোমান আহমেদ বলেন, ‘উপজেলার কোনো কোনো ইউনিয়নের ওয়েবসাইটে কোনো তথ্যই দেওয়া নেই। ইউপি সদস্য ও চেয়ারম্যানের মোবাইল নম্বর থাকলেও বেশি ভাগই ভুল। সংবাদ তৈরির কাজে প্রায়ই সময় বিভিন্ন তথ্যের প্রয়োজন হয়। কিন্তু ওয়েবসাইটে তথ্য থাকে না এতে আমাদের কষ্ট বেড়েছে।'
উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা বদলি হয়ে গেলেও তাঁর নাম-ঠিকানা এখনো রয়েছে। উপজেলা নির্বাচন অফিসেরও নেই কোনো তথ্য। উপজেলার প্রায় সব সরকারি অফিসের ওয়েবসাইটে এমন অবস্থা।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সেলিম মিঞা বলেন, উপজেলার সব ওয়েব পোর্টাল হালনাগাদ করার জন্য ইতিমধ্যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যেসব ওয়েব পোর্টাল হালনাগাদ হয়নি, সেগুলো দ্রুত হালনাগাদ করা হবে।