সয়াবিন তেলের দাম বাড়ায় মেহেরপুরের গাংনীতে কৃষকেরা ঝুঁকছেন সরিষার চাষে। এ কারণে চলতি বছর উপজেলায় বেড়েছে সরিষা চাষ। ইতিমধ্যে উপজেলার বিভিন্ন মাঠ সাজতে শুরু করেছে হলুদ সরিষা ফুলে। সরিষা ফুলের ম-ম গন্ধে ভরে উঠছে চারদিক।
সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার দেবীপুর, তেরাইল, ভরাট, দুর্লভপুর, করমদি, মটমুড়াসহ বিভিন্ন গ্রামে ফুটেছে সরিষা ফুল। অনুকূল আবহাওয়া আর সঠিক পরিচর্যায় মাঠের পর মাঠ সরিষা ফুল। ফুলের গন্ধে মধু সংগ্রহে আসছে মৌমাছির দল।
দেবীপুর গ্রামের সরিষাচাষি রুহুল আমিন বলেন, সয়াবিন তেলের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় এবার সরিষা চাষ করেছি। অনেক দিন সরিষা বোনা থেকে বিরত ছিলাম। তখন তেলের দাম ছিল অনেক কম। দাম বাড়ার কারণেই আবার শুরু করেছি সরিষা চাষ। তিনি আরও বলেন, সরিষাশাক হিসেবে খাওয়া যায়। সরিষা অনেক সুন্দর হয়েছে। আশা করি, ফলন ভালো হলে ও দাম ভালো থাকলে লাভবান হব।
তেরাইল গ্রামের সরিষাচাষি আব্দুর রাজ্জাক বলেন, সামনে বোরো ধান রোপণ করব, তাই এর আগেই সরিষা বুনেছি। বিঘাপ্রতি পাঁচ-ছয় মণ হয় এই সরিষা। এতে তেলের খরচ অনেকটাই বেঁচে যাবে। আর এই সরিষা খুব অল্প সময়ে তোলা যায়।
করমদী গ্রামের সরিষাচাষি ছোটন আহমেদ বলেন, তেলের দাম যেভাবে বাড়ছে, তাতে তেল কিনতে গিয়ে হাঁপিয়ে উঠতে হচ্ছে। তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এখন থেকে সরিষার চাষ করব। এ উপজেলায় অনেক চাষি সরিষার আবাদ করতে শুরু করেছেন।
ব্যবসায়ী আকবর আলী জানান, সয়াবিন তেলের দাম বাড়ায় মানুষ সরিষা চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। আশা করা হচ্ছে, চাষিরা চলতি বছরও দাম ভালো পাবেন। বর্তমানে সাদা সরিষার বাজার দর ৩ হাজার ৪০০ থেকে ৩ হাজার ৫০০ টাকা, আর লাল সরিষা ৩ হাজার ১০০ থেকে ৩ হাজার ২০০ টাকা।
গাংনী উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, উপজেলা চলতি মৌসুমে ২ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে। গত বছর ছিল ১ হাজার ৪০০ হেক্টর। কৃষি অফিস থেকে চাষিদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ করে বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
কৃষি কর্মকর্তা লাভলী খাতুন জানান, সয়াবিন তেলের দাম বাড়ায় কৃষকেরা সরিষা চাষে মনোযোগী হয়েছেন। গত বছরের তুলনায় চলতি মৌসুমে সরিষার চাষ ব্যাপক বেড়েছে। অনুকূল আবহাওয়া ও দাম ভালো থাকলে কৃষকেরা লাভবান হবেন।