প্রথমে ঢোল-কাঁসরসহ বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র বাজতে থাকে। এরপর বাদ্যের তালে তালে লাঠিয়ালেরা বাঁশের লাঠি ঘোরাতে ঘোরাতে মাঠে ঢোকেন। এরপর শক্ত হাতে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করে ভেলকি ও কেরামতি দেখান তাঁরা। এ দৃশ্য মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে উপভোগ করেন নানা বয়সী শত শত দর্শক। লাঠিয়ালদের উৎসাহ দিতে এ সময় তাঁরা মুহুর্মুহু তালি দিতে থাকেন।
গতকাল সোমবার কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার যদুবয়রা ইউনিয়নের বরইচারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী এ লাঠিখেলা অনুষ্ঠিত হয়।
গতকাল ইউনিয়নের বিল বরইচারা যুদ্ধ দিবস উদ্যাপন উপলক্ষে লাঠিখেলার আয়োজন করেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা। এর আগে দিনটি উদ্যাপন উপলক্ষে বিল বরইচারা স্মৃতিস্তম্ভ চত্বরে পতাকা উত্তোলন, দোয়া ও স্মৃতিচারণমূলক সভা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিতান কুমার মণ্ডল।
বিল বরইচারা যুদ্ধের অধিনায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল ওয়াহাবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন যুদ্ধকালীন জেলা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা জাহিদ হোসেন জাফর, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ সমিতির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এ টি এম আবুল মনসুর মজনু, যদুবয়রা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজান প্রমুখ।
লাঠিয়াল সরদার শহিদ শেখ বলেন, ‘দিন দিন লাঠিখেলাসহ গ্রামগঞ্জের অন্যান্য খেলা হারাতে বসেছে। নতুন কেউ এসব খেলায় আসতে চায় না। ঐতিহ্য ধরে রাখতে আমার নাতিনকে লাঠিখেলা শেখাচ্ছি।’
এ বিষয়ে যদুবয়রা ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজান জানান, যুদ্ধ দিবস উপলক্ষে ও ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখতে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী লাঠিখেলার আয়োজন করা হয়েছে। এতে চারটি দলের ৬৫ জন অংশ নেন। খেলা দেখে সবাই খুশি।