গাজীপুরের রাজেন্দ্র ইকো রিসোর্ট অ্যান্ড ভিলেজের ভিডিও এক ব্যবসায়ীকে দেখিয়ে প্রতারক এহতেশামুল হক শামেল দাবি করেন, এটা তাঁর নিজের। এরপর সেখানে বিনিয়োগের কথা বলে ওই ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ধাপে ধাপে অন্তত আট কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এই কাজে নিজেকে তিনি কখনো মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ, আবার কখনো মন্ত্রীর স্ত্রীর বন্ধু পরিচয় দেন।
এহতেশামুল হক শামেলের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর। থাকেন ঢাকার বনানীতে। তাঁর বিরুদ্ধে গত ফেব্রুয়ারিতে রাজধানীর খিলক্ষেত থানায় মামলা করেন মুহাম্মদ আজিজুস সালেহীন ডলার নামের ওই ব্যবসায়ী। মামলায় তিনি এহতেশামুল হকের বিরুদ্ধে আট কোটি টাকা আত্মসাৎ, প্রতারণা ও হত্যার হুমকির অভিযোগ করেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার এহতেশামুলকে আটক করা হয়েছে।
জানতে চাইলে ডিএমপির ডিবির তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মোহাম্মাদ আশরাফুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আটকের বিষয়টি এখনই বলা যাচ্ছে না। জেনে জানাতে পারব।’
মামলার তদন্তসংশ্লিষ্ট এক পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এহতেশামুল বিভিন্ন কোম্পানির নাম করে মানুষের টাকা আত্মসাৎ করেন। কখনো এক্সিস, হ্যাভিটেশান, তাজমহল আবাসনসহ নানান নামে চটকদার বিজ্ঞাপন দিয়ে মানুষকে প্রতারিত করেন।
মামলায় ব্যবসায়ী আজিজুস সালেহীন অভিযোগ করেছেন, গত বছরের আগস্টে তাঁর সঙ্গে এহতেশামুল হকের পরিচয় হয়। তিনি জানান, রাজেন্দ্র ইকো রিসোর্ট অ্যান্ড ভিলেজ তাঁর। কিছুদিন পর তিনি যৌথ রিয়েল এস্টেট ব্যবসার প্রস্তাব দেন। যৌথ ব্যবসার জন্য ২০ কোটি টাকার যৌথ তহবিল গঠনের বিষয়ে তাঁদের মধ্যে একটি সমঝোতা চুক্তি হয়। চুক্তি অনুযায়ী এহতেশামুলকে পাঁচ কোটি টাকা দেন ওই ব্যবসায়ী।
পরে আজিজুস সালেহীন তাঁর বাড্ডার একটি প্লট আবাসিক থেকে বাণিজ্যিক করে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। তখন এহতেশামুল জানান, এটা কোনো বিষয়ই নয়; গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর স্ত্রী তাঁর বন্ধু। একদিন আজিজুস সালেহীনের নিকুঞ্জের অফিসে এক নারীকে নিয়ে যান এহতেশামুল। ওই নারীকে নিজের বান্ধবী এবং গৃহায়ণমন্ত্রীর স্ত্রী বলে পরিচয় করিয়ে দেন। এরপর ওই ব্যবসায়ী তিন ধাপে ওই নারী ও এহতেশামুলকে সোয়া দুই কোটি টাকা দেন। পরবর্তী সময়ে আজিজুস সালেহীন বুঝতে পারেন, তিনি প্রতারণার শিকার হয়েছেন।