দেবিদ্বার প্রতিনিধি
দেবিদ্বার উপজেলার রাজামেহার ইউনিয়নের উত্তর পাড়ার বড়বাড়ি সেতু নির্মাণ করা হয়েছে দুই মাস আগে। কিন্তু এখনো সেতুর দুই পাশে সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হয়নি। শিগগিরই সেতুটির সংযোগ সড়ক নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন ইউনিয়নবাসী।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) অফিস সূত্রে জানা যায়, এলজিইডির অধীনে ৩৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ৩৮ ফুট দৈর্ঘ্য ও ২৪ ফুট প্রস্থের এ সেতু নির্মাণ করা হয়। গত মার্চ মাসে নির্মাণকাজ শুরু করেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স মোসলেহ উদ্দিন খাঁন এন্টার প্রাইজের মালিক মো. মোসলেহ উদ্দিন ও তাঁর সহযোগী নাজমুল হাসান। কাজ শুরুর পর থেকেই নানা অজুহাতে ঠিকাদারেরা সেতুটির নির্মাণকাজ ধীরগতিতে করতে থাকেন। এদিকে বিকল্প কোনো সড়ক না রেখেই আগের সেতুটি ভেঙে ফেলা হয়। পরে স্থানীয় বাসিন্দাদের চাপে পড়ে ঠিকাদার নতুন সেতুর নিচে মাটি ভরাট করে সাময়িকভাবে চলাচলের রাস্তা করে দেওয়া হয়। দুই মাস আগে সেতুটির নির্মাণকাজ শেষ হলেও ঠিকাদারেরা সেতুর দুই পাশে সংযোগ সড়কের নির্মাণ না করেই কাজ বন্ধ করে দেন।
গতকাল শুক্রবার সকালে সেতুটি পরিদর্শনে গেলে একাধিক স্থানীয় বাসিন্দা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের এমন কাজে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। আরও দেখা যায় সেতু দিয়ে চলাচলের জন্য এলাকাবাসী সেতুর এক পাশে পরিত্যক্ত বিদ্যুতের খুঁটি বেঁধে সাঁকোর মতো অবকাঠামো তৈরি করেছেন, অন্য পাশে কিছু ইট ফেলে সেতুতে ওঠার ব্যবস্থা করেছেন।
স্থানীয় সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালক নয়ন ও সুমন জানান, তিন মাস ধরে এমন ভোগান্তি পোহাচ্ছেন এলাকাবাসী। গতকাল সেতুটির এক মাথায় কিছু ইট, অপর মাথায় একটি পরিত্যক্ত বৈদ্যুতিক খুঁটি বেঁধে কোনো রকমে চলাচলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার সময় ওই খুঁটি পার হতে গিয়ে দুই ছাত্র নিচের খালের পানিতে পড়ে যায়। পরে সেখানে উপস্থিত লোকজন তাঁদের উদ্ধার করে বাড়ি পৌঁছে দেন।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য মো. আবদুল মতিন সরকার বলেন, ‘ঠিকাদার মো. মোসলেহ উদ্দিনের গাফিলতিতে মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। কাজ শুরুর পর থেকেই তিনি ফাঁকিবাজি করছেন। লোকসানের অজুহাতে কয়েক দফা নির্মাণকাজ বন্ধ রাখা হয়। এক প্রকার জোর করেই এ পর্যন্ত সেতুটির কাজ করিয়েছি। এখন সেতুর সংযোগ সড়ক নির্মাণ করতে নানান টালবাহানা শুরু করেছেন মোসলেহ উদ্দিন। কল দিলেও তাঁর মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। বিষয়টি নিয়ে এলাকার মানুষ ক্ষুব্ধ।’
রাজামেহার গ্রামের মো. আশিকুর রহমান জানান, সেতুটির সংযোগ সড়ক না থাকাটা ১০ গ্রামবাসীর দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার মোসলেহ উদ্দিন খান বলেন, ‘সেতুটির কাজ করতে গিয়ে আমাদের অনেক লোকসান হওয়ার পরও কাজ করছি। আসলে মাটির সংকটের কারণে সংযোগ সড়কের কাজ করা সম্ভব হয়নি। তবে ইতিমধ্যে ভেকুর (খননযন্ত্র) মালিকের সঙ্গে চুক্তি করেছি, আজ-কালের মধ্যেই মাটি ভরাটের কাজ শুরু হবে।’
দেবিদ্বার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘ঠিকাদারকে অনেক তাগাদা দিয়ে সেতুটির অবকাঠামো নির্মাণকাজ শেষ করানো হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে সেতুর সংযোগ সড়ক করা হবে।’