হোম > ছাপা সংস্করণ

ঋণ, কিস্তি ও প্রহার

সম্পাদকীয়

নাটোরের গুরুদাসপুরের কুলসুম বেগম ঋণ নিয়েছিলেন এনজিও আশা থেকে। আশার মৌখাড়া শাখায় ১০ বছর ধরে লেনদেন করছেন তিনি। সম্প্রতি ঋণ নিয়েছিলেন স্বামীর নামে ৮৬ হাজার আর শাশুড়ির নামে ৪৫ হাজার টাকা। প্রতি সপ্তাহে কিস্তি পরিশোধের কথা থাকলেও এবার শেষ দুই সপ্তাহের মোট ৭ হাজার টাকা দিতে ব্যর্থ হন তিনি। অভাব-অনটনের সংসারে কুলসুমের ছেলেটা অসুস্থ হয়ে পড়েছে। এমন অবস্থায় কিস্তির টাকা পরিশোধের চেয়ে সংসারটাকে সামলানো হয়তো বেশি জরুরি মনে করেছেন কুলসুম ও তাঁর পরিবার।

কিন্তু এসব কথায় কি আর এনজিওকর্মীদের মন গলে? কুলসুমের বাড়িতে গিয়ে কিস্তির টাকা চাইলে সেখানে দুই পক্ষের মধ্যে হয়ে যায় একচোট হাতাহাতি, কথা-কাটাকাটি। কুলসুম বলেছিলেন, মার দিলেও টাকা দিতে পারবেন না। সেটা পরখ করার জন্যই হয়তো এক এনজিওকর্মী বাড়ির উঠানে থাকা সেলাই মেশিনের টেবিল থেকে কাঁচি নিয়ে তাঁর মাথায় আঘাত করেন। প্রতিবাদ করতে এলে মার খান তাঁর স্বামী ও দেবর। শনিবার রাতের এই ঘটনা নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে আজকের পত্রিকায়।

কুলসুমের মতো অনেক দরিদ্র পরিবারের সদস্যরা ব্যাংক, কিছু এনজিও কিংবা পল্লী দারিদ্র্যবিমোচন ফাউন্ডেশনের আওতাধীন সমিতি থেকে ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে থাকেন। এসব প্রতিষ্ঠান মূলত দারিদ্র্যবিমোচন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের সহায়তা করতে এই সুবিধা দেয়। একসময় দাদন প্রথায় চড়া সুদে ঋণ দেওয়ার প্রবণতা ছিল। কিন্তু ক্ষুদ্রঋণের এই সেবা দরিদ্র মানুষদের জন্য সহনীয় ব্যবস্থা বলেই জনপ্রিয়তা পেয়েছে। যদিও কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান সর্বোচ্চ ২৪-২৭ শতাংশ সুদ নেয়, তবে তা কমে এলে বরং ঋণগ্রহীতা ও ঋণদাতা উভয় পক্ষের জন্যই মঙ্গল। কেননা, সুদ যত কম হবে, ঋণগ্রহীতারা তত দ্রুত এবং নির্ধারিত সময়ে কিস্তি পরিশোধ করতে পারবেন।

কুলসুমরা কেন সময়মতো ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে পারেন না? যাঁরা ঋণ পরিশোধের নীতিমালা তৈরি করেন, তাঁদের এর কারণ জানাটা জরুরি। তাঁরা কাদের ঋণ দিচ্ছেন, সেই ঋণ তাঁরা সময়মতো পরিশোধ করতে পারবেন কি না কিংবা না পারলে কী সমস্যায় আছেন ঋণগ্রহীতা—এসব না জানলে দাতা ও গ্রহীতাদের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হবে এবং কুলসুমের সঙ্গে ঘটে যাওয়া কাণ্ড আরও ঘটতে থাকবে। আবার, ঋণগ্রহীতাদের মধ্যেও থাকতে পারে উদাসীন কেউ। তাঁদেরও উচিত ঋণ নেওয়া অর্থ যথাযথভাবে কাজে লাগিয়ে সঠিক সময়ে কিস্তি পরিশোধ করা।

তবে তাঁদের অবস্থা যেন কুলসুমের মতো না হয়, সেদিকটায় নজর রাখতে হবে নীতিনির্ধারকদের। সময়মতো কিস্তি পরিশোধ করতে না পারলে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা হতে পারে অথবা নির্ধারিত কোনো শাস্তির ব্যবস্থা হতে পারে, নিশ্চয়ই সেটা প্রহার নয়। কুলসুমদের মার খাওয়ার কাণ্ডটি পাড়ার মাস্তানদের কাজ হতে পারত, এনজিওকর্মীদের সেটা শোভা পায় না। যদিও তাঁরা বলছেন কুলসুমরা আগে আক্রমণ করায় ধাক্কাধাক্কি হয়েছে। কিন্তু সেই ধাক্কাধাক্কিটাও কি তাঁদের শোভা বাড়াল?

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ

ঢাকা সড়ক পরিবহন: প্রশ্নবিদ্ধ কমিটিতেই চলছে মালিক সমিতির কার্যক্রম

৪০ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করবে টিসিবি

৮ বছরে শিশুহত্যা হয়েছে ৪০০০

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির শীর্ষে বাংলাদেশ, তবে বাজারে পিছিয়ে

দেশে ব্যবসায় ঘুষ–দুর্নীতিসহ ১৭ রকমের বাধা

বিদ্যালয়ের জমিতে ৩৯১টি দোকান, ভাড়া নেয় কলেজ

সড়ক দুর্ঘটনায় ৬ প্রাণহানি

সেকশন