হোম > ছাপা সংস্করণ

শরীরে স্প্লিন্টার নিয়ে ১৯ বছরের দুর্বিষহ জীবন

রিফাত মেহেদী, সাভার (ঢাকা); আয়শা সিদ্দিকা আকাশী, মাদারীপুর ও সুজন পোদ্দার, কচুয়া (চাঁদপুর) 

রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের জনসভায় গ্রেনেড হামলার ১৯ বছর পরও স্প্লিন্টারের অসহ্য যন্ত্রণা নিয়ে জীবন কাটাচ্ছেন আহত ব্যক্তিরা। ২০০৪ সালের ২১ আগস্টের ওই হামলায় ২৪ জন নিহত হওয়ার পাশাপাশি কয়েক শ ব্যক্তি আহত হন।আহতদের অনেকে শরীরে গ্রেনেডের স্প্লিন্টার বহন করে চলেছেন। তাঁদের কেউ কেউ কাজে অক্ষম হয়ে পড়েছেন, এখনো নিতে হচ্ছে চিকিৎসা।

১৮০০ স্প্লিন্টার: শরীরে আজো এই পরিমাণ স্প্লিন্টার বয়ে বেড়াচ্ছেন মাহবুবা পারভীন। তিনি ২০০৪ সালে ঢাকা জেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। এখন সংগঠনের সহসভাপতি। এই নেত্রী এখনো ওই দিনের কথা মনে করে শিউরে ওঠেন। শরীরে অসহ্য যন্ত্রণা নিয়ে দিন কাটছে তাঁর। জ্বালাপোড়ার কারণে দিনে-রাতে কয়েকবার গোসল করতে হয়।

গতকাল রোববার আলাপকালে মাহবুবা বর্তমান অবস্থা নিয়ে বলেন, ২০১৬ সালে তাঁর স্বামী মারা যান। বড় ছেলে এমবিএ শেষ করে ব্যাংকে চাকরি করছেন। ছোট ছেলে বিদেশে পড়ালেখা নিয়ে আছেন। তাঁরা তিন বোন ও চার ভাই। সাভারে তাঁর আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় তাঁরা বসবাস করছেন। তাঁর প্রয়োজনে তাঁরাই ছুটে আসেন। বর্তমানে এক বোনের ছেলে দেখাশোনা করার জন্য তাঁর সঙ্গেই থাকেন। বর্তমানে তিনি সাভারের বাজার রোডে থাকেন।

মাহবুবা বলেন, ‘বর্তমানে অবস্থা ভালো না। শারীরিক যন্ত্রণায় ঘুমাতে পারি না। ঘুম এলেই শরীরে সুঁইয়ের মতো খোঁচা দেয়। রাতে প্রায় তিনবার গোসল করি। প্রধানমন্ত্রী আমাকে কলকাতা থেকে উন্নত চিকিৎসা করিয়ে এনেছেন। ব্রেনের চিকিৎসা ব্যাংককে করার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকেরা। সেটা আর হয়ে ওঠেনি। এখন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসা নিচ্ছি। আমি তো জীবন্ত লাশ। বাসে যাতায়াত করতে পারি না। আমার নিজস্ব কোনো ব্যবস্থা নেই, বাসে যাতায়াত করতে খুবই সমস্যা হয়।’

‘কাজ করতে পারি না’: গ্রেনেডের স্প্লিন্টারে আহত মাদারীপুরের তিনজন এখনো দুর্বিষহ জীবনযাপন করছেন। তাঁরা হলেন কালকিনি পৌরসভার বিভাগদী গ্রামের হালান হাওলাদার, কৃষ্ণনগর গ্রামের কবির হোসেন ও ঝাউতলা গ্রামের সাইদুল হক সরদার।

হালান বলেন, ‘শরীরের বিভিন্ন স্থানে প্রচুর স্প্লিন্টার রয়েছে। প্রায় সময়েই জ্বালা-যন্ত্রণা আর অসহ্য লাগে। সে কারণে তেমন কোনো কাজ করতে পারি না। আগস্ট মাস এলে দুই চোখের পানি যে আর বন্ধ হয় না। সেই দিনের ভয়াবহ স্মৃতি ভুলতে পারছি না। আমরা যাঁরা আহত আছি, প্রধানমন্ত্রী যদি আমাদের উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করতেন, তা হলে ভালো হতো।’

আহত অনেকে ঢাকায় প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে ফ্ল্যাট পেয়েছেন জানিয়ে হালান বলেন, ‘আমি ফ্ল্যাট পাইনি। আমার থাকার জন্য স্থায়ী বসতঘর প্রয়োজন। তা ছাড়া আমার বাম পায়ে স্প্লিন্টারের জন্য অনেক ব্যথা। ঠিকমতো হাঁটতেও পারি না।’

আরেক আহত সাইদুলও স্প্লিন্টারের যন্ত্রণায় তেমন ভারী কাজ করতে পারছেন না। তিনি বলেন, ‘ডাক্তার দেখিয়েছি। ডাক্তার বলেন উন্নত চিকিৎসা দরকার। আমি উন্নত চিকিৎসা কীভাবে করব। এত টাকা-পয়সা তো আমার নেই। প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি জানাই, তিনি যেন আমাদের উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। যাতে করে শরীর থেকে স্প্লিন্টার বের হয়ে যায়।’

পাননি কোনো সহযোগিতা: চাঁদপুরের কচুয়া পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের পাটিকর বাড়ির কৃষ্ণ পাটিকর (৬১) এখনো শরীরে স্প্লিন্টারের আঘাতের চিহ্ন বয়ে বেড়াচ্ছেন। ২১ আগস্ট এলেই মনে পড়ে ওই দিনের সেই নৃশংস ভয়াবহ দৃশ্যের কথা।

কৃষ্ণ জানান, সে দিন কচুয়া থেকে তাঁর পাশাপাশি উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আহসান হাবীব প্রাঞ্জল, দেবীপুর গ্রামের মিজান এবং নিজেদের এলাকার আব্দুল গফুর রাজধানীতে ওই সমাবেশে যোগ দেন। তাঁদের মধ্যে কৃষ্ণ গ্রেনেড হামলায় আহত হন। মনোয়ারা হাসপাতালে তাঁর পা এবং কোমর থেকে স্প্লিন্টার বের করা হয়। পরদিন তিনি এলাকায় এসে কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন। বর্তমানে অভাব-অনটনের মধ্য দিয়ে তাঁর জীবন কাটছে। এখনো রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে তাঁকে কোনো সহায়তা দেওয়া হয়নি।

এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সোহরাব হোসেন চৌধুরী সোহাগ জানান, কৃষ্ণ বর্তমানে চলতে হিমশিম খাচ্ছেন। তিনি কৃষ্ণের সহায়তার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানান।  

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ

ঢাকা সড়ক পরিবহন: প্রশ্নবিদ্ধ কমিটিতেই চলছে মালিক সমিতির কার্যক্রম

৪০ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করবে টিসিবি

৮ বছরে শিশুহত্যা হয়েছে ৪০০০

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির শীর্ষে বাংলাদেশ, তবে বাজারে পিছিয়ে

দেশে ব্যবসায় ঘুষ–দুর্নীতিসহ ১৭ রকমের বাধা

বিদ্যালয়ের জমিতে ৩৯১টি দোকান, ভাড়া নেয় কলেজ

সড়ক দুর্ঘটনায় ৬ প্রাণহানি

সেকশন