সিরাজ উল্লাহ খাদেম নিপু
কত দিন পর মুশফিকের সঙ্গে দেখা! সময়ের হিসাবে ১৬ বছর তো হবেই। চেমসফোর্ডে বাংলাদেশের সিরিজ শেষে সোমবার (১৫ মে) ওর সঙ্গে দেখা হলো কেনিংটনে। আড্ডা চলল প্রায় আড়াই ঘণ্টা।
বিকেএসপিতে আমরা একই সময়ে পড়েছি। একাডেমিক দিক থেকে সে (মুশফিক) এক বছরের সিনিয়র। আমি ২০০১ আর মুশফিক ২০০০ সালের ব্যাচ। তবে বয়সভিত্তিক ক্রিকেটে ২০০১ থেকে ২০০৬—এই পাঁচ বছর আমরা একসঙ্গে খেলেছি। খুব ক্লোজ ছিলাম। বাংলাদেশ দলের ইংল্যান্ড সফরের সময় আমিও এখানে থাকায় ১৬ বছর পর ইংল্যান্ডে ওর সঙ্গে দেখা হয়ে গেল। কত দিন পর দেখা! ও আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েছিল। আমিও নই কি!
সেই ২০০১ সাল থেকে কত স্মৃতি আমাদের। কত মজার ঘটনা। কী মজার জীবনটাই না ছিল আমাদের! লম্বা সময় পর দুজনের সাক্ষাতে ফিরে এসেছিল সেই সব দিন। বাদ যায়নি ওই আফসোসটাও—দুর্দান্ত একটা দল নিয়েও ২০০৬ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে আমরা ভালো করতে পারিনি। সাকিব, তামিম, মুশফিক, সোহরাওয়ার্দী শুভ, শামসুর রহমান শুভ, মেহরাব জুনিয়র, সনেট, আমি, রাজন, ডলার মাহমুদ—সবাই ওই দলের অংশ ছিলাম। দেশের মাটিতে ইংল্যান্ডের অনূর্ধ্ব-১৯ দলকে টানা হারিয়েছিলাম, কিন্তু শ্রীলঙ্কায় সেই ইংল্যান্ডের কাছেই শেষ আটে হেরে যেতে হয়েছিল আমাদের।
পুরোনো স্মৃতি রোমন্থনের পাশাপাশি আমাদের আড্ডায় ছিল বর্তমানও। মুশফিকই জানতে চেয়েছিল, বাংলাদেশে আসি না কেন, প্রিমিয়ার লিগ খেলি না কেন? বলল, বাংলাদেশে খেললে হয়তো বিপিএলে খেলার সুযোগ পেতাম।
২০১৪ সালে বাংলাদেশ থেকে আমি পর্তুগালে চলে আসি। এখন পর্তুগাল জাতীয় দলের হয়ে খেলছি জেনে মুশফিক অনেক খুশি। সে বলল, ‘অনেকে অনেক জায়গায় খেলতে পারে না। তবে তুই সাহস করে চলে গেছিস। তুই সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে চলে গেছিস। তাতে তো আমরা বলতে পারি যে বাংলাদেশে না হোক, অন্য দেশে আমাদের বন্ধু খেলছে। সেটাও আমাদের জন্য গর্ব।’
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আমার পারফরম্যান্স দেখল মুশফিক। তারপর বলল, ‘ভালোই তো। ১৭ ম্যাচে ২৭ উইকেট মেরে দিলি। আবার কদিন আগে ৫ উইকেটও।’
মুশফিকের সমৃদ্ধ ক্যারিয়ার দেখে অনেক ভালো লাগে। তবে খারাপ লেগেছে হুট করে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ছেড়ে দেওয়ায়।