রংপুরের গঙ্গাচড়ায় চলছে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির কার্ডের তথ্য ডিজিটাল তথ্যভান্ডারে যুক্ত করার কার্যক্রম। অনলাইনে এ কাজের জন্য উপকারভোগীদের কাছ থেকে টাকা আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ইউনিয়ন পরিষদের ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তারা সরকার থেকে প্রতি কার্ডে ১৫ টাকা করে পাওয়ার পরও অতিরিক্ত এ টাকা নিচ্ছেন।
উপজেলার সদর, কোলকোন্দ, আলমবিদিতর, নোহালি ইউনিয়নসহ বিভিন্ন ইউনিয়নে এই টাকা নেওয়ার অভিযোগ মিলেছে।
আলমবিদিতরের উপকারভোগী আনোয়ারা বেগম বলেন, ‘রেশন কার্ডের বলে নাকি অনলাইন করা লাগবে। এই জন্য ইউনিয়ন পরিষদে আসছুনুং। মোর কাছ থাকি ৫০ টাকা নিসে উদ্যোক্তা শাহিন। টাকা না দিলে অনলাইন করি দেয় না।’
পরিষদে একই কাজে আসা আসরাফ আলী জানান, এখানে অনলাইনে কাজ তাড়াতাড়ি করে দেওয়ার জন্য ৫০ টাকা নিচ্ছে। যে আগে টাকা দিচ্ছেন তাঁর কাজ আগে হচ্ছে।
জানতে চাইলে ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তা শাহিন উল্টো বলেন, ‘৫০ টাকা করে চাইলে সবাই কি আর ৫০ টাকা দেয়! কেউ কেউ আছে ২০ টাকা, ৩০ টাকা দিচ্ছে।’
সদর ইউনিয়নের দোলাপাড়া গ্রামের জাহেরা জানান, অনলাইনে কাজ করার জন্য তাঁর কাছ থেকে জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি আর ২০ টাকা নিয়েছে।
এ বিষয়ে উদ্যোক্তা ছাদেকুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিদ্যুৎ সমস্যায় জেনারেটর দিয়ে কাজ করতে হচ্ছে। খাদ্য অফিস থেকে সময় দিয়েছে পাঁচ দিন। বিদ্যুতের যে সমস্যা তাতে পাঁচ দিনে কাজ করা সম্ভব না। তাই আমরা জেনারেটর দিয়ে কাজ করতেছি। এতে বাড়তি খরচ হওয়ায় ২০ টাকা করে নিচ্ছি।’
টাকা নেওয়ার বিষয়ে আলমবিদিতর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোকারম হোসেন সুজন বলেন, ‘বিষয়টি জানার পর আমি তাৎক্ষণিকভাবে উদ্যোক্তাদের টাকা নিতে নিষেধ করেছি। যাতে তাঁরা কোনোভাবেই সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে টাকা না নেয়।’
সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাজহারুল ইসলাম লেবুও টাকা নিতে নিষেধ করেছেন বলে জানিয়েছেন।
যোগাযোগ করা হলে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক রইচ উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘টাকা নেওয়ার বিষয়টি আমাদের জানার বাইরে। যদি কেউ টাকা নিয়ে থাকেন তবে তা আইনবহির্ভূত। অনলাইনের কাজ করার জন্য প্রতিটি কার্ড থেকে উদ্যোক্তাদের সরকারিভাবে ১৫ টাকা করে দেওয়া হচ্ছে। এরপরও যদি কেউ টাকা নিয়ে থাকেন, তদন্ত সাপেক্ষে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এরশাদ উদ্দিনও আজকের পত্রিকাকে বলেন, অনলাইনের কাজের বিষয়ে যদি কোনো সুবিধাভোগীর কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয় তাহলে ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।