আবদুল আযীয কাসেমি
তাহাজ্জত শব্দের অর্থ নিদ্রা ত্যাগ করা। যেহেতু রাতের আরামের ঘুম ত্যাগ করে এ বিশেষ নফল নামাজ আদায় করা হয়, তাই এটিকে তাহাজ্জতের নামাজ বলা হয়। এ নামাজের অপর নাম কিয়ামুল-লাইল বা রাতের নামাজ। রমজানে সালাতুত তাহাজ্জত আদায় করার গুরুত্ব অশেষ। যেহেতু মুমিনগণ সাহ্রিখাওয়ার জন্য শেষ রাতে জেগে ওঠেন, তাই একটু আগে জাগলে এই ফজিলতপূর্ণ নামাজ আদায় করা যায়।
তাহাজ্জত নামাজের অশেষ ফজিলতের কথা কোরআন-হাদিসে বিবৃত হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই আপনার রব জানেন, আপনি সালাতে দাঁড়ান কখনো রাতের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ, কখনো অর্ধাংশ এবং কখনো এক-তৃতীয়াংশ সময়ে এবং আপনার সঙ্গে একটি দলও দাঁড়ায়, যারা আপনার সঙ্গে আছে।’ (সুরা মুজ্জাম্মিল/ ২০) আল্লাহ তাআলা আরও বলেন, ‘রাতের কিছু অংশে আপনি তাহাজ্জত নামাজ পড়ুন। এটা আপনার জন্য এক অতিরিক্ত কর্তব্য। আশা করা যায়, আপনার প্রতিপালক আপনাকে প্রতিষ্ঠিত করবেন মাকামে মাহমুদ তথা প্রশংসিত স্থানে।’ (সুরা বনি ইসরাইল/ ৭৯)
মহানবী (সা.) বলেন, ‘ফরজ নামাজের পর সর্বোত্তম নামাজ রাতের নামাজ তথা তাহাজ্জত।’ (মুসলিম) আরেক হাদিসে এসেছে, মহানবী (সা.) বলেন, ‘তোমরা রাতের নামাজ দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরো। এটা ছিল তোমাদের পূর্ববর্তী সৎ লোকজনের অভ্যাস। তোমাদের রবের নৈকট্য অর্জনের উপায়। পাপমোচনের অপূর্ব মাধ্যম। আল্লাহর অবাধ্যতা থেকে বারণকারী। তা ছাড়া দেহকে রোগমুক্ত রাখার ক্ষেত্রেও রয়েছে এর ভূমিকা।’ (মুসনাদে আহমদ)
রমজানে মহানবী (সা.) নিজেও রাত জাগতেন এবং পরিবারের সবাইকেও বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে জাগিয়ে দিতেন। আসুন, আমরাও রমজানে তাহাজ্জত আদায়ের সর্বোচ্চচেষ্টা করি।
আবদুল আযীয কাসেমি
শিক্ষক ও হাদিস গবেষক