মৌলভীবাজার প্রতিনিধি
বাসায় কয়েকজন বন্ধুকে নিয়ে ইফতার করবেন জুয়েল আহমদ। এসেছেন কোর্ট রোডের টিসি মার্কেটে লেবু কিনতে। তবে দোকানে গিয়ে তাঁর চোখ ছানাবড়া। এক জোড়া জারা লেবুর দাম ১০০ টাকা। শুনে কিংকর্তব্যবিমূঢ় তিনি। পরে দুই হালি কাগজি লেবু ৬০ টাকায় কিনে রওনা দেন বাসার উদ্দেশে। আক্ষেপ করে জুয়েল বলেন, ‘আমাদের এলাকায় এত লেবুবাগান হওয়ার পরও দাম এত চড়া!’
শুধু জুয়েল আহমদই নন, মৌলভীবাজারের বিভিন্ন বাজারে ক্রেতাদের মাথায় একই ধরনের প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। লেবুর বাজারে এমন অস্থিরতায় ক্ষোভ প্রকাশ করছেন তাঁরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল, কমলগঞ্জসহ বেশ কয়েকটি উপজেলায় রয়েছে কয়েক হাজার লেবু বাগান। তা সত্ত্বেও চড়া লেবুর দাম। জেলার বিভিন্ন বাজারে এক জোড়া জারা লেবু ১০০ টাকা, কাগজি ২০ থেকে ৬০ টাকা হালি এবং চায়না লেবুর হালি ৪০ থেকে ৮০ টাকা। নিজের এলাকায় চাষ হওয়ার পরও লেবুর এত দাম দেখে অনেকেই লেবু না কিনে ফিরছেন বাড়ি, প্রকাশ করছেন ক্ষোভও। সম্প্রতি ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর পাইকারি বাজার অভিযান পরিচালনা করে জরিমানা করার পরও কমছে না দাম-এমনটাই অভিযোগ সচেতন নাগরিক ও ক্রেতাদের।
গতকাল দুপুরে মৌলভীবাজার জেলা শহরের পশ্চিমবাজার, শমসেরনগর রোড, কোর্ট রোডের টিসি মার্কেট ও চাঁদনীঘাটের কাঁচাবাজার ঘুরে লেবুর চড়া দাম দেখা গেছে। আকারভেদে খুচরা বাজারে কাগজি লেবুর হালি ২০ থেকে ৬০ টাকা এবং চায়না লেবু ৪০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সেখানে কেবল জারা লেবুর জোড়াতেই ১০০ থেকে ১১০ টাকা দাম হাঁকা হচ্ছে।
লেবু বিক্রেতা রুহেল মিয়া বলেন, আগে বড় সাইজের ১০০ জারা লেবু ২ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকায় কিনতেন। এখন মাঝারি সাইজের প্রতিটি লেবু ৪২ থেকে ৪৫ টাকায় কিনতে হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ‘দাম বাড়ায় এখন ৫০ থেকে ৬০টি জারা লেবু আনি। চাহিদা থাকলেও দাম বেশি হওয়ায় ক্রেতারা কম কেনেন।’ লেবুর বাজারে হঠাৎ করে অস্থিরতার বিষয়ে জানতে চাইলে ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর মৌলভীবাজারের সহকারী পরিচালক মো. আল আমিন বলেন, ‘প্রতিনিয়ত অভিযান পরিচালনা করছি ভোক্তা অধিকার নিশ্চিত করার জন্য। পুনরায় অভিযান চালাব, যেন নিত্যপণ্যের দাম সহনশীল রাখা যায়।’