অন্যান্য বছর আমের জন্য বিপদ হয় ঝড় ও শিলাবৃষ্টি। এবার তেমন বিপদ আসেনি। তারপরও শেষ সময়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন আমচাষিরা। গোপালভোগ, ক্ষীরশাপাতি, ল্যাংড়া, আম্রপালি আমের দাম মোটামুটি ভালো পেলেও ফজলি ও আশ্বিনা জাতের আমের দাম পাচ্ছেন না চাষিরা। এদিকে মাত্র চার দিন পর ঈদ। ঈদের সময় আম বেচাকেনা কম হয়। তাই আমচাষিরা আরও ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা করছেন।
চারঘাটের রায়পুর গ্রামের আমচাষি ছদর আলী বলেন, এবার আমের উৎপাদন কম হয়েছে। তারপরও ফজলির মতো উৎকৃষ্ট আম বিক্রি হচ্ছে ৯০০ থেকে ১ হাজার ১০০ টাকা মণ দরে। আম নামানো ও হাটে তোলার ভ্যান ভাড়াই উঠছে না এই দামে বিক্রি করে। উৎপাদন খরচ তো উঠছেই না। সার ও কীটনাশকের দাম অনেক বেশি, কিন্তু আমের দাম নেই।
উপজেলার রাওথা এলাকার আম ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম বলেন, বাজারে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে ল্যাংড়া আম। কিন্তু ল্যাংড়া আম এখন দুষ্প্রাপ্য। ফজলি আমের চেয়ে বেগুন, আলু ও পটোলের দাম বেশি। গাছে আম আছে; কিন্তু চাষির পকেটে টাকা নেই। গাছ থেকে আম নামানোর খরচও উঠছে না। এক মণ আমে ১০ কেজি ঢলন দিতে হচ্ছে, তারপরও ক্রেতা কম।
রফিকুল ইসলাম আরও বলেন, ‘আমরা আম পাঠাই চট্টগ্রাম, ঢাকা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও নরসিংদী এলাকার আড়তে। তাদের কোনো খরচ নেই। যা বিক্রি হবে, তার ওপর তারা ১০ শতাংশ কমিশন পাবে। সামনে ঈদের কারণে এখন আড়তদারেরা পাঠাতে নিষেধ করেছেন।’
রাজশাহীর সবচেয়ে বড় আমের বাজার চারঘাটের পার্শ্ববর্তী পুঠিয়ার বানেশ্বর এলাকায় অবস্থিত। বাজারের বর্তমান অবস্থা জানতে চাইলে বানেশ্বর আম ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘বাজারে এখন ব্যাপক পরিমাণে ফজলি আর আশ্বিনা আম আছে। তবে ক্রেতা ও দাম—দুটিই কম।’
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোজদার হোসেন বলেন, ‘চাষিরা যেন আমের ভালো দাম পান, এ জন্য আম বাজারজাত করতে নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। ফজলি আমের আমদানি বাড়ার কারণে হয়তো দাম কিছুটা কম মনে হচ্ছে। তবে পর্যায়ক্রমে দাম বাড়বে বলে আমি আশাবাদী।’