হোম > ছাপা সংস্করণ

ভাঙনঝুঁকিতে আশ্রয়ণ প্রকল্প

মো. মফিজুর রহমান, ফরিদপুর

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় মধুমতি নদীর ভাঙনে মুজিববর্ষ উপলক্ষে তোলা আশ্রয়ণ প্রকল্পের প্রায় ৩০০ ঘর হুমকির মুখে পড়েছে। গত তিন বছরে এই উপজেলার চারটি ইউনিয়নের ৬০০ পরিবারের ঘরবাড়ি বিলীন হয়ে গেছে নদীগর্ভে। বর্তমানে সেখানকার এক হাজারের মতো পরিবার ভাঙনঝুঁকিতে।

নদীর তীর রক্ষায় পদক্ষেপ না নিলে এসব ঘর দ্রুতই নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার আশঙ্কায় উদ্বিগ্ন দিন কাটাচ্ছেন স্থানীয়রা। এ অবস্থায় নদীর তীর রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপের দাবিতে ভাঙনকবলিত স্থানে মানববন্ধন করেছেন সেখানকার বাসিন্দারা।

জানা গেছে, আলফাডাঙ্গার গোপালপুর ইউনিয়নের ছাতিয়াগাতি, দিগনগর, খোলাবাড়িয়া, কাতলাসুর ও পগনবেগ গ্রামে মধুমতি নদীর ভাঙনের মাত্রা তীব্র আকার ধারণ করেছে। এ ছাড়া আশপাশের বাজড়া, বাঁশতলা, দক্ষিণ চর নারানদিয়া, পশ্চিম চর নারানদিয়া ও পাড়াগ্রামসহ পার্শ্ববর্তী পাচুরিয়া, টগরবন্দ ও বানা ইউনিয়নেও মধুমতি নদীর ভাঙন চলছে। নদীতে বিলীন হচ্ছে একের পর এক বসতভিটা, ফসলি জমি, স্কুলঘর, মসজিদসহ নানা স্থাপনা।

গোপালপুর ইউনিয়নের কাতলারসুর গ্রামে স্বপ্ননগর আশ্রয়ণ প্রকল্প করা হয়েছে। ২০২০ সালের ১২ অক্টোবর ওই আশ্রয়ণ প্রকল্পের ২৮৬টি ঘর সুবিধাভোগী পরিবারের কাছে জমিসহ হস্তান্তর করা হয়েছে। মাত্র দুই বছর না যেতেই এসব ঘরের বাসিন্দারা এখন নদীভাঙনে ঘর হারানোর আশঙ্কায় দিন পার করছেন।

আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা রুপালি বেগম বলেন, প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে তাঁরা মাথা গোঁজার ঠাঁই হিসেবে একটু আশ্রয় পেয়েছিলেন। এখন এই আশ্রয় হারালে তাঁদের আবার পথেই থাকতে হবে।

নবিরন বেগম নামে সত্তরোর্ধ্ব এক নারী বলেন, ‘এই ঘর হারাইলি আমরা হাবিডুবি খাবানি। আমাগে গাঙডা ইট্টু বাইন্ধ্যা দ্যান।’

সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার বাজড়া গ্রামে একটি পুরোনো মসজিদ ছিল, যা নদীতে চলে যাওয়ার পরে নতুন স্থানে মসজিদ করা হয়েছে। সেটিও ভাঙনঝুঁকিতে। এ ছাড়া একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন স্থাপনাও  রয়েছে ঝুঁকিতে।

স্থানীয়রা বলেন, মধুমতির ভাঙনে বাজড়া গ্রামের পুরোনো একটি মসজিদ বিলীন হয়ে গেছে। পরে নতুন স্থানে মসজিদ তৈরি করা হয়েছে। সেটিও ভাঙনের মুখে।

তিয়াগাতি গ্রামের শাহ মো. মুকুল হোসেন মিয়া বলেন, বছরের পর বছর তাঁর গ্রামে মধুমতি নদীর ভাঙন চলছে। তাঁদের প্রায় ৩০ একর জমি নদীতে চলে গেছে। এখন ভিটেটুকু রয়েছে। তা-ও ভাঙনের মুখে পড়েছে। ভাঙন বন্ধ করা না গেলে বাপ-দাদার কবর ও মসজিদটাও নদীতে তলিয়ে যাবে।

স্থানীয়রা জানান, গোপালপুর ইউনিয়নের সবচেয়ে বড় গ্রাম ছিল খোলাবাড়িয়া। এই গ্রামে ভোটার ছিল প্রায় ২ হাজার ৬০০। এখন পুরো গ্রাম মধুমতিতে চলে গেছে।

ছাতিয়াগাতি গ্রামের প্রবাসী শাহ মো. মুকুল হোসেন মিয়া বলেন, পৈতৃকসূত্রে মধুমতির তীরে তাঁদের প্রায় ৩০ একর জমি ছিল। শুধু ভিটেটুকু বাদে এখন প্রায় সবই শেষ।

আলফাডাঙ্গা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ কে এম জাহিদুল ইসলাম বলেন, এ সমস্যা নিয়ে বহুবার জেলার বিভিন্ন সভায় বলা হয়েছে। স্থানীয় সাংসদ মনজুর হোসেন বুলবুল ও ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার একাধিকবার ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন করে গেছেন। কিন্তু ভাঙনরোধে সমন্বিত কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

এভাবে ভাঙতে থাকলে অল্প সময়ের মধ্যে আরও হাজারখানেক পরিবারের ঘরবাড়ি নদীতে তলিয়ে যাবে। বিষয়টি গুরুত্ব অনুধাবন করে সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে বলে আশা করেন তিনি।

জেলা প্রশাসক অতুল সরকার বলেন, দুই-তিন বছর হলো, তাঁরা পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছেন। স্থানীয় জেলা উন্নয়ন সমন্বয় সভাতেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ওই এলাকার আশ্রয়ণ প্রকল্পসহ অন্যান্য ক্ষতি যাতে না হয়, সে জন্য আবারও পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়কে জানাবেন।

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ

ঢাকা সড়ক পরিবহন: প্রশ্নবিদ্ধ কমিটিতেই চলছে মালিক সমিতির কার্যক্রম

৪০ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করবে টিসিবি

৮ বছরে শিশুহত্যা হয়েছে ৪০০০

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির শীর্ষে বাংলাদেশ, তবে বাজারে পিছিয়ে

দেশে ব্যবসায় ঘুষ–দুর্নীতিসহ ১৭ রকমের বাধা

বিদ্যালয়ের জমিতে ৩৯১টি দোকান, ভাড়া নেয় কলেজ

সড়ক দুর্ঘটনায় ৬ প্রাণহানি

সেকশন