গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরে ৩ নম্বর দামোদরপুর ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে প্রকল্প গ্রহণ না করেই উপজেলায় ভূমি হস্তান্তর করের সাড়ে ১৮ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।
গত এক বছরে ইউএনও কার্যালয় থেকে প্রাপ্ত পাঁচটি বেয়ারার চেকে এই টাকা তুলে নিয়েছেন চেয়ারম্যান এ জেড এম সাজেদুল ইসলাম স্বাধীন। বরাদ্দের এই টাকা পরিষদে নথিভুক্ত কিংবা ব্যাংক হিসাবেও জমা করা হয়নি।
এ ছাড়া ২০১৭-১৮ অর্থবছরের ভ্যাট ও আয়কর বরাদ্দের ২ লাখ ৪৯ হাজার ৯২৩ টাকা নির্দেশনা সত্ত্বেও সংশ্লিষ্ট হিসাবে জমা না দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে ওই চেয়ারমানের বিরুদ্ধে।
চলতি বছরের ৫ সেপ্টেম্বর এলজিএসপি-৩-এর উপপ্রকল্প পরিচালক রাহেনুল ইসলামের পরিদর্শন প্রতিবেদনে এই তথ্য উল্লেখ রয়েছে বলে জানা যায়।
এদিকে ঘটনাটি এত দিন গোপন থাকলেও গত ১৪ সেপ্টেম্বর গাইবান্ধার স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক রোখছানা বেগম ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় পরিদর্শনে আসলে এ আর্থিক অনিয়ম ধরা পড়ে।
তিনি জানান, ইউনিয়ন পরিষদ পরিদর্শনকালে নথিপত্র যাচাই করে যেসব তথ্য-উপাত্ত পাওয়া গেছে, তা যথাযথ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।
এ ছাড়া চেয়ারম্যানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠিয়ে জবাব দাখিল করতে বলা হয়েছে। জবাবের পর পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি। তবে অভিযোগের বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত চেয়ারম্যানের মোবাইল ফোনে কল দিলে তিনি পরে কথা বলবেন জানিয়ে ফোন রেখে দেন। জানা যায়, পাঁচ দফায় এই টাকা উত্তোলনের ঘটনায় ইউএনও অফিস সহকারী আব্দুল বারির যোগসাজশ রয়েছে। ভাগ–বাঁটোয়ারার উদ্দেশ্যে সুযোগমতো বেয়ারার চেকগুলো উপস্থাপন করে ইউএনওর স্বাক্ষর নিয়ে ওই অফিস সহকারী এর মধ্যে ২০২০ সালের ২৬ আগস্ট ৩ লাখ, ৪ অক্টোবর ৩ লাখ ৫০ হাজার ও ২২ ডিসেম্বর ৪ লাখ টাকার ৩টি বেয়ারার চেক দেওয়া হয়।
এ ছাড়া চলতি বছরের ৫ মে ৪ লাখ ও ৫ জুলাই দেওয়া হয় আরও ৪ লাখ টাকার দুটি বেয়ারার চেক। চেকপ্রাপ্তির তারিখেই সোনালী ব্যাংক সাদুল্লাপুর শাখায় অন্য গ্রাহকের হিসাব নম্বরে চেকগুলো জমা করে এসব টাকা তুলে নেওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে।
ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর এলাকায় মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্ট হয়েছে।
সাদুল্লাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোছা. রোকসানা বেগম আজকের পত্রিকাকে বলেন, এটি ডিডিইএলজি স্যার দেখে থাকেন। ওখান থেকেই বিষয়টি মনিটরিং করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।