কুড়িগ্রামে পটোলের ফলন ভালো হলেও লোকসানে কৃষক। বৃষ্টির কারণে পটোলখেত নষ্ট হওয়ায় কম দামে পাইকারদের কাছে পটোল বিক্রি করছেন তাঁরা। এতে লাভের বেশি অংশ যাচ্ছে মধ্যস্বত্বভোগী ব্যবসায়ীদের হাতে।
জানা গেছে, চলতি মৌসুমে কুড়িগ্রামের পাইকারি ও খুচরা বাজারে পটোলের আমদানি পর্যাপ্ত। পাইকারেরা কম দামে পটোল কিনতে পারছেন। এক সপ্তাহের ব্যবধানে পটোলের দাম কেজিপ্রতি ১০ থেকে ১৫ টাকা কমেছে। চলতি মৌসুমে পটোলের ফলন ভালো হলেও বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ কারণে কৃষকেরা পাইকারদের কাছে প্রতি কেজি পটোল বিক্রি করছেন ৬ থেকে ৭ টাকায়। ওই পটোল পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০ থেকে ১২ টাকায়। আড়তদারদের হাত ঘুরে খুচরা বিক্রেতাদের হাতে পৌঁছে দাম তিন গুণ বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকায়। মধ্যস্বত্বভোগীদের কারণে লাভ হারাচ্ছেন কৃষক।
চাষিরা জানান, পটোল চাষে প্রতি বিঘা জমিতে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা খরচ হয়। প্রতি বিঘা জমির উৎপাদিত পটোল ৯০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা বিক্রির আশা করছিলেন চাষিরা। ভারী বৃষ্টি ও আমদানি বেশি থাকায় পটোলের দাম পাচ্ছেন না স্থানীয় চাষিরা। পাইকারদের কাছে প্রতি মণ পটল ২০০ থেকে ২৫০ টাকায় বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন তাঁরা।
সদরের পাঁচগাছী ইউনিয়নের চাষি মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘বৃষ্টির কারণে পটোলের গাছ মরি যাবার লাগছে। খেতে পানি জমছে। পটোল বাইরের জেলায় যাবার লাগছে না, উল্টা বাইরের জেলা থাকি আমাদের জেলায় পটোল আমদানি হচ্ছে। না বিক্রি করে তো কোনো লাভ নাই, লোকসান কমাইতে অল্প দামে হইলেও বিক্রি করছি। জমিত থাকলে তো নষ্ট হয়া যায়।’
ওই ইউনিয়নের আরেক চাষি নুর ইসলাম বলেন, ‘মৌসুমের শুরুতে পটোলের ভালো দাম পাইলেও এখন আর ভালো দাম পাচ্ছি না। চাষের খরচ উঠবে কি না সন্দেহ।’
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সূত্র জানায়, চলতি বছর জেলায় ২৫০ হেক্টর জমিতে পটোলের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলাতেই ৬২ হেক্টর জমিতে পটোলের আবাদ হয়েছে।
জেলায় পটোলের উৎপাদন ও দরপতন নিয়ে কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আব্দুল রশীদ এবং অতিরিক্ত উপপরিচালক আজিজুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাঁরা কেউ মোবাইল ফোনের কল ধরেননি।