রক্তচাপ কমাতে দৈনিক একটি বিশেষ ‘সুপারফুড’–এর ডোজ গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। প্রতিদিন ২৫০ মিলি বিটরুট জুস রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করতে পারে বলে দাবি করছেন বিজ্ঞানীরা।
নতুন এক গবেষণায় দেখা গেছে যে, এটি মাত্র চার সপ্তাহে রোগীদের উচ্চ রক্তচাপকে স্বাভাবিক মাত্রায় ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে। আবার পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীরা বিটরুটের জুস পান বন্ধ করলে তাদের রক্তচাপ পূর্বের স্তরে ফিরে আসে।
লন্ডনের কুইন মেরি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা এই গবেষণাটি পরিচালনা করেন। গবেষণাপত্রটি ‘হাইপারটেনশন’ নামক পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। গবেষণায় দেখা যায়, বিটরুটে ইনঅর্গানিক বা অজৈব ডায়েটারি নাইট্রেটের পরিমাণ অনেক বেশি।
নাইট্রেটগুলো শরীরে নাইট্রাইট এবং পরে নাইট্রিক অক্সাইডে রূপান্তরিত হয়, যা রক্তনালিকে শিথিল এবং প্রশস্ত করে। এই কারণে রক্তচাপ এবং হৃদরোগের স্বাস্থ্যকে উন্নত করার ক্ষেত্রে বিটরুট শক্তিশালী প্রভাব বিস্তার করতে পারে।
পরীক্ষায় উচ্চ রক্তচাপের রোগী বা উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিদের চার সপ্তাহ ধরে প্রতিদিন একটি পানীয় গ্রহণ করতে দেওয়া হয়।
অর্ধেক অংশগ্রহণকারীদের বিটরুট জুস দেওয়া হয়। আর বাকি অর্ধেককে বিটরুটের মতে দেখতে ও স্বাদের অন্য পানীয় দেওয়া হয়। এই পরীক্ষা শেষে দেখা যায়, যারা বিটরুট জুস পান করেছিলেন, তাদের রক্তচাপ ‘স্বাভাবিক’ সীমার মধ্যে চলে আসে।
অংশগ্রহণকারীরা বিটরুট জুস খাওয়া বন্ধ করার দুই সপ্তাহের মধ্যে তাদের উচ্চ রক্তচাপ পূর্বের স্তরে ফিরে এসেছে। এর ফলে স্পষ্ট হয়েছে যে, দীর্ঘমেয়াদি উপকারের জন্য নিয়মিত নাইট্রেট গ্রহণ প্রয়োজন।
পুষ্টিবিদ ড. লিনিয়া প্যাটেল বলেন, ‘বিটরুট বা অন্যান্য নাইট্রেট সমৃদ্ধ খাবার যেমন পাতা সবজি, শশা ও কুমড়ো খাওয়ার মাধ্যমে শরীরে নাইট্রেট পরিমাণ বাড়ায়। কিছু মানুষ বিটরুট শট পছন্দ করে কারণ এতে নাইট্রেট অনেক বেশি থাকে।
সম্প্রতি একটি ইনস্টাগ্রাম পোস্টে বিটরুটের বিভিন্ন সুবিধার প্রশংসা করেছেন লন্ডনের কিংস কলেজের জেনেটিক এপিডেমিওলজি বিভাগের অধ্যাপক এবং জোই স্বাস্থ্য অ্যাপের সহ-প্রতিষ্ঠাতা টিম স্পেক্টর। অধ্যাপক স্পেক্টর বলেন, বিটরুটে পাওয়া কার্যকরী যৌগগুলোর মধ্যে পলিফেনলস রয়েছে, যা বিশেষভাবে প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে এবং নাইট্রেট রক্তনালি প্রসারিত করে রক্ত প্রবাহ বাড়ায়। এই কাজটি রক্তচাপ কমানোর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপকারী।