ডা. অদিতি সরকার
একটু খেয়াল করলেই দেখবেন, ইদানীং আশপাশের অনেকে হাঁচি-কাশিতে আক্রান্ত হচ্ছে। কেউ কেউ এটাকে সিজনাল অ্যালার্জি হিসেবে ধরে নিচ্ছেন। আবার অনেকের ধারণা, বয়সের কারণে হয়তো এসব লেগে থাকে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এই সাধারণ উপসর্গগুলো দেখা দিলে তাৎক্ষণিক আরাম পেতে কী করা জরুরি, তা কি আমরা জানি? আবার কখন চিকিৎসা নিতে হবে, সেটাই-বা বুঝব কীভাবে। আগে বুঝতে হবে, হাঁচি ও কাশি আসলে কী।
হাঁচি ও কাশি হলো শরীরের স্বাভাবিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। যখন বাইরের ধুলাবালু, জীবাণু বা অ্যালার্জিক উপাদান নাক বা গলার সংবেদনশীল স্থানে প্রবেশ করে, তখন শরীর প্রতিক্রিয়া দেয় হাঁচি বা কাশির মাধ্যমে। এটি যেমন শরীরের জন্য সুরক্ষা, তেমনি কখনো কখনো বড় অসুখের প্রথম লক্ষণ।
যেসব কারণে হাঁচি-কাশি হতে পারে– ভাইরাল ইনফেকশন: সাধারণ ঠান্ডা, ইনফ্লুয়েঞ্জা কিংবা করোনাভাইরাস—তিনটির যেকোনো একটিকেই হাঁচি-কাশির জন্য দায়ী করা যায়।
অ্যালার্জি: ধুলাবালু, ফুলের রেণু, পোষা প্রাণীর লোম অ্যালার্জিজনিত হাঁচি-কাশির কারণ হতে পারে।
ধূমপান ও দূষণ: ধূমপায়ীদের দীর্ঘস্থায়ী কাশি হয়ে থাকে। শহরের বায়ুদূষণও সমস্যাটি বাড়িয়ে তোলে।
অ্যাসিড রিফ্লাক্স: অনেক সময় গ্যাস্ট্রিকের কারণে গলায় কাশি হয়। এটি অনেকে বুঝতে পারেন না।
ক্রনিক অসুখ: অ্যাজমা, ব্রঙ্কাইটিস, সিওপিডি, যক্ষ্মা ইত্যাদি দীর্ঘস্থায়ী কাশির কারণ হতে পারে।
হাঁচি বা কাশি হলে কখন সাবধান হতে হবে এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে, তা বুঝে নেওয়াটা জরুরি। যেমন–
» কাশি ৩ সপ্তাহের বেশি স্থায়ী হলে
» হাঁচি বা কাশির সঙ্গে জ্বর, কফে রক্ত এলে এবং ওজন কমে গেলে
» কাশি রাতে বাড়লে এবং নিশ্বাসে বাঁশির মতো শব্দ হলে
» শিশুর ক্ষেত্রে হঠাৎ শ্বাসকষ্ট, নীলাভ ঠোঁট, খাওয়ায় অনীহা দেখা দিলে
» বয়স্কদের ক্ষেত্রে হাঁচির সঙ্গে মাথা ঘোরা কিংবা অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার প্রবণতা থাকলে।
যদি এই লক্ষণগুলো দেখা দেয়, তাহলে দেরি না করে অবশ্যই দ্রুততম সময়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
কোভিড-পরবর্তী বাস্তবতা
কোভিড-১৯ আমাদের হাঁচি-কাশির ভয়াবহতা সম্পর্কে নতুনভাবে শিখিয়েছে। এখন প্রতিটি হাঁচি কিংবা কাশি মানেই সম্ভাব্য সংক্রমণের উৎস হতে পারে। সে জন্য কিছু সাবধানতা অবলম্বন করতেই হবে। যেমন–
» মাস্ক ব্যবহার করতে হবে
» জনসমাগমে হাঁচি-কাশির শিষ্টাচার মেনে চলা (হাত নয়, কনুইয়ে মুখ ঢেকে হাঁচি দিতে হবে)
» হাঁচি-কাশির সময় পরিচ্ছন্ন রুমাল বা টিস্যু ব্যবহার করতে হবে
» হাত ধোয়া, স্যানিটাইজার ব্যবহার করা এখন অভ্যাসের অংশ হতে হবে
চিকিৎসা ও প্রতিরোধ
» পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে এবং পানি পান দ্রুত সেরে উঠতে সহায়তা করে।
» ঈষদুষ্ণ পানি দিয়ে গার্গল ও ভাপ গলা ব্যথা বা কাশি উপশমে কার্যকর।
» অ্যালার্জির ক্ষেত্রে অ্যান্টিহিস্টামিন বা ইনহেলার ব্যবহার করতে হবে। তবে তা অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শে।
» যাদের অ্যালার্জি কিংবা অ্যাজমা আছে, তাদের অবশ্যই ধূমপান পরিহার করতে হবে এবং ঘরবাড়ি পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
» দীর্ঘদিন হাঁচি-কাশির সমস্যা থাকলে প্রয়োজনে এক্স-রে কিংবা রক্ত পরীক্ষা করাতে হবে। এতে রোগ নির্ণয় করা সম্ভব হবে এবং চিকিৎসা নেওয়া সহজ হবে।
শিশুর হাঁচি-কাশিতে বেশি যত্ন দরকার
শিশুদের কাশির সঙ্গে যদি শ্বাসকষ্ট থাকে, খাওয়ায় অনীহা দেখা দেয় অথবা ঘন ঘন বমি করে, তাহলে কোনোভাবেই বিষয়টি উপেক্ষা করা যাবে না। শিশুর কাশি হুপিং কাশি, নিউমোনিয়া অথবা ভাইরাল ব্রঙ্কিওলাইটিসের ইঙ্গিত হতে পারে।
বয়স্কদের ক্ষেত্রেও সতর্কতা জরুরি
বয়স্কদের প্রতিরোধক্ষমতা কম থাকায় সাধারণ ঠান্ডা থেকেও নিউমোনিয়া বা শ্বাসকষ্টজনিত জটিলতা তৈরি হতে পারে। তাঁদের জন্য নিয়মিত চেকআপ ও ইনফ্লুয়েঞ্জা ভ্যাকসিন নেওয়া উচিত এবং পরিচ্ছন্ন জীবনযাপন করা অত্যন্ত জরুরি।
অ্যান্টিবায়োটিক নিয়ে সতর্কতা
সাধারণ ভাইরাসজনিত ঠান্ডায় অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োজন হয় না। কিন্তু আমাদের দেশে অনেকের ফার্মেসিতে গিয়ে ওষুধ কিনে খাওয়ার প্রবণতা এখনো রয়ে গেছে। এর ফলে শরীরে তৈরি হচ্ছে অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স, যা ভবিষ্যতের জন্য ভয়াবহ।
পরামর্শ দিয়েছেন: রেসিডেন্ট চিকিৎসক, বিএমইউ
একটু খেয়াল করলেই দেখবেন, ইদানীং আশপাশের অনেকে হাঁচি-কাশিতে আক্রান্ত হচ্ছে। কেউ কেউ এটাকে সিজনাল অ্যালার্জি হিসেবে ধরে নিচ্ছেন। আবার অনেকের ধারণা, বয়সের কারণে হয়তো এসব লেগে থাকে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এই সাধারণ উপসর্গগুলো দেখা দিলে তাৎক্ষণিক আরাম পেতে কী করা জরুরি, তা কি আমরা জানি? আবার কখন চিকিৎসা নিতে হবে, সেটাই-বা বুঝব কীভাবে। আগে বুঝতে হবে, হাঁচি ও কাশি আসলে কী।
হাঁচি ও কাশি হলো শরীরের স্বাভাবিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। যখন বাইরের ধুলাবালু, জীবাণু বা অ্যালার্জিক উপাদান নাক বা গলার সংবেদনশীল স্থানে প্রবেশ করে, তখন শরীর প্রতিক্রিয়া দেয় হাঁচি বা কাশির মাধ্যমে। এটি যেমন শরীরের জন্য সুরক্ষা, তেমনি কখনো কখনো বড় অসুখের প্রথম লক্ষণ।
যেসব কারণে হাঁচি-কাশি হতে পারে– ভাইরাল ইনফেকশন: সাধারণ ঠান্ডা, ইনফ্লুয়েঞ্জা কিংবা করোনাভাইরাস—তিনটির যেকোনো একটিকেই হাঁচি-কাশির জন্য দায়ী করা যায়।
অ্যালার্জি: ধুলাবালু, ফুলের রেণু, পোষা প্রাণীর লোম অ্যালার্জিজনিত হাঁচি-কাশির কারণ হতে পারে।
ধূমপান ও দূষণ: ধূমপায়ীদের দীর্ঘস্থায়ী কাশি হয়ে থাকে। শহরের বায়ুদূষণও সমস্যাটি বাড়িয়ে তোলে।
অ্যাসিড রিফ্লাক্স: অনেক সময় গ্যাস্ট্রিকের কারণে গলায় কাশি হয়। এটি অনেকে বুঝতে পারেন না।
ক্রনিক অসুখ: অ্যাজমা, ব্রঙ্কাইটিস, সিওপিডি, যক্ষ্মা ইত্যাদি দীর্ঘস্থায়ী কাশির কারণ হতে পারে।
হাঁচি বা কাশি হলে কখন সাবধান হতে হবে এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে, তা বুঝে নেওয়াটা জরুরি। যেমন–
» কাশি ৩ সপ্তাহের বেশি স্থায়ী হলে
» হাঁচি বা কাশির সঙ্গে জ্বর, কফে রক্ত এলে এবং ওজন কমে গেলে
» কাশি রাতে বাড়লে এবং নিশ্বাসে বাঁশির মতো শব্দ হলে
» শিশুর ক্ষেত্রে হঠাৎ শ্বাসকষ্ট, নীলাভ ঠোঁট, খাওয়ায় অনীহা দেখা দিলে
» বয়স্কদের ক্ষেত্রে হাঁচির সঙ্গে মাথা ঘোরা কিংবা অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার প্রবণতা থাকলে।
যদি এই লক্ষণগুলো দেখা দেয়, তাহলে দেরি না করে অবশ্যই দ্রুততম সময়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
কোভিড-পরবর্তী বাস্তবতা
কোভিড-১৯ আমাদের হাঁচি-কাশির ভয়াবহতা সম্পর্কে নতুনভাবে শিখিয়েছে। এখন প্রতিটি হাঁচি কিংবা কাশি মানেই সম্ভাব্য সংক্রমণের উৎস হতে পারে। সে জন্য কিছু সাবধানতা অবলম্বন করতেই হবে। যেমন–
» মাস্ক ব্যবহার করতে হবে
» জনসমাগমে হাঁচি-কাশির শিষ্টাচার মেনে চলা (হাত নয়, কনুইয়ে মুখ ঢেকে হাঁচি দিতে হবে)
» হাঁচি-কাশির সময় পরিচ্ছন্ন রুমাল বা টিস্যু ব্যবহার করতে হবে
» হাত ধোয়া, স্যানিটাইজার ব্যবহার করা এখন অভ্যাসের অংশ হতে হবে
চিকিৎসা ও প্রতিরোধ
» পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে এবং পানি পান দ্রুত সেরে উঠতে সহায়তা করে।
» ঈষদুষ্ণ পানি দিয়ে গার্গল ও ভাপ গলা ব্যথা বা কাশি উপশমে কার্যকর।
» অ্যালার্জির ক্ষেত্রে অ্যান্টিহিস্টামিন বা ইনহেলার ব্যবহার করতে হবে। তবে তা অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শে।
» যাদের অ্যালার্জি কিংবা অ্যাজমা আছে, তাদের অবশ্যই ধূমপান পরিহার করতে হবে এবং ঘরবাড়ি পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
» দীর্ঘদিন হাঁচি-কাশির সমস্যা থাকলে প্রয়োজনে এক্স-রে কিংবা রক্ত পরীক্ষা করাতে হবে। এতে রোগ নির্ণয় করা সম্ভব হবে এবং চিকিৎসা নেওয়া সহজ হবে।
শিশুর হাঁচি-কাশিতে বেশি যত্ন দরকার
শিশুদের কাশির সঙ্গে যদি শ্বাসকষ্ট থাকে, খাওয়ায় অনীহা দেখা দেয় অথবা ঘন ঘন বমি করে, তাহলে কোনোভাবেই বিষয়টি উপেক্ষা করা যাবে না। শিশুর কাশি হুপিং কাশি, নিউমোনিয়া অথবা ভাইরাল ব্রঙ্কিওলাইটিসের ইঙ্গিত হতে পারে।
বয়স্কদের ক্ষেত্রেও সতর্কতা জরুরি
বয়স্কদের প্রতিরোধক্ষমতা কম থাকায় সাধারণ ঠান্ডা থেকেও নিউমোনিয়া বা শ্বাসকষ্টজনিত জটিলতা তৈরি হতে পারে। তাঁদের জন্য নিয়মিত চেকআপ ও ইনফ্লুয়েঞ্জা ভ্যাকসিন নেওয়া উচিত এবং পরিচ্ছন্ন জীবনযাপন করা অত্যন্ত জরুরি।
অ্যান্টিবায়োটিক নিয়ে সতর্কতা
সাধারণ ভাইরাসজনিত ঠান্ডায় অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োজন হয় না। কিন্তু আমাদের দেশে অনেকের ফার্মেসিতে গিয়ে ওষুধ কিনে খাওয়ার প্রবণতা এখনো রয়ে গেছে। এর ফলে শরীরে তৈরি হচ্ছে অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স, যা ভবিষ্যতের জন্য ভয়াবহ।
পরামর্শ দিয়েছেন: রেসিডেন্ট চিকিৎসক, বিএমইউ
দীর্ঘ কয়েক দশক গবেষণা ও বিতর্কের পর এবার একটি নতুন ধরনের ডায়াবেটিসকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দিয়েছে আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিস ফেডারেশন (আইডিএফ)। ‘টাইপ ৫ ডায়াবেটিস’ হিসেবে চিহ্নিত এই রোগ মূলত অপুষ্টিজনিত এবং সাধারণত কমবয়সী, হালকা-গড়নের ও অপুষ্টিতে ভোগা তরুণ-তরুণীদের মধ্যে দেখা যায়।
১ দিন আগেদুই মাস বয়সী ছেলেকে নিয়ে ঢাকার মহাখালীতে সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালে আছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরের এক ব্যক্তি। জলবসন্তে (চিকেনপক্স) আক্রান্ত ছেলেকে হাসপাতালে ভর্তি করান ৯ এপ্রিল। সংক্রামক এ রোগ শিশুটির শরীরে মারাত্মক জটিলতা সৃষ্টি করেছে। এখন পরিস্থিতি কিছুটা স্থিতিশীল বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন।
২ দিন আগেক্যাম্পিউটেড টোমোগ্রাফি। এই খটমটে নামে না চিনলেও ‘সিটি স্ক্যান’ বললে সহজে চিনে ফেলি আমরা। চিকিৎসাক্ষেত্রে রোগ শনাক্ত ও পর্যবেক্ষণের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা এটি। অনেক সময় জীবন রক্ষাকারী প্রযুক্তি হিসেবে কাজ করে এটি। সাধারণত রোগনির্ণয়ে বা কোনো দুর্ঘটনার শিকার হলে কতটা ক্ষতি হয়েছে...
৩ দিন আগেখুবই কমদামি দুটি ওষুধের সমন্বিত ব্যবহার প্রতিরোধ করতে পারে হাজার হাজার স্ট্রোক ও হৃদ্রোগ। সাম্প্রতিক এক গবেষণার বরাত দিয়ে এমনটাই জানিয়েছেন ব্রিটিশ ও সুইডিশ একদল গবেষক। তাঁরা বলেছেন, দুটি সস্তা ওষুধ একসঙ্গে ব্যবহার করলে হাজার হাজার হৃদ্রোগ বা স্ট্রোক প্রতিরোধ করা যেতে পারে এবং বহু মানুষের জীবন...
৩ দিন আগে