Ajker Patrika
হোম > স্বাস্থ্য > চিকিৎসকের পরামর্শ

প্রাণঘাতী অসুখ রক্তবমি ও কালো পায়খানা হলে

ডা. মোহাম্মদ তানভীর জালাল 

প্রাণঘাতী অসুখ রক্তবমি ও কালো পায়খানা হলে

রক্তবমি ও কালো পায়খানার কারণ

বেশ কয়েকটি কারণে পরিপাকতন্ত্রের রক্তক্ষরণ হয়। এর মধ্যে রয়েছে-

  • ডুইডেনাল আলসার, গ্যাস্ট্রিক আলসার।
  • নন-স্টেরয়েডজনিত ওষুধ, ব্যথানাশক ওষুধ খাওয়ার ফলে পাকস্থলীর ছোট ও বড় ঘা।
  • ইসোফোজিয়াল ভ্যারিকস।
  • লিভার সিরোসিস অসুখের ফলে খাদ্যনালির রক্তনালি ফুলে ওঠা।
  • পাকস্থলীর ক্যানসার ও ম্যালরিওয়েস টেয়ার বা বারবার বমির কারণে খাদ্যনালির নিচের অংশে ঝিল্লি ছিঁড়ে যাওয়া।

পাকস্থলীর আলসারজনিত প্রথম দুটি কারণই সাধারণত রক্তবমি ও কালো পায়খানার জন্য বেশি দায়ী।

উপসর্গ

  • রক্তক্ষরণের বমির রং কালচে অথবা কফি গোলা পানির মতো হতে পারে।
  • অতিরিক্ত ক্ষরণে বমির সঙ্গে জমাটবাঁধা রক্ত দেখা দিতে পারে।
  • পায়খানার রং সাধারণত আলকাতরার রঙের মতো হয়ে থাকে।
  • কিছু ক্ষেত্রে অতিমাত্রায় রক্তক্ষরণে পায়খানার সঙ্গে টাটকা অথবা জমাট রক্ত পড়তে পারে।
  • কিছু ক্ষেত্রে রোগীর রক্তবমি ও কালো পায়খানা হওয়া ছাড়াও রক্তক্ষরণ হতে পারে।
  • কিছু রোগীর মাথা ঘোরা, বুকের ব্যথা ও শ্বাসকষ্ট হতে পারে।
  • রক্তচাপ কমে যেতে পারে কারও কারও।
  • রক্তক্ষরণের ফলে চোখ-মুখ ফ্যাকাশে দেখায়।

নির্ণয় পদ্ধতি
অধিকাংশ ক্ষেত্রে পরিপাকতন্ত্রের ওপরের অংশ এনডোসকপি পরীক্ষার মাধ্যমে রক্তবমি ও কালো  পায়খানার কারণ নির্ণয় করা সম্ভব। এছাড়া এই পদ্ধতিতে রক্তক্ষরণের স্থান নির্ণয় করা হয়। শতকরা ৮০ ভাগ ক্ষেত্রে রক্তক্ষরণ কোনো চিকিৎসা ছাড়াই ভালো হয়ে যায়। বাকি ২০ ভাগ চিকিৎসা ছাড়া ভালো হয় না, এমনকি মৃত্যুর ঝুঁকিও থাকে। অনেক ক্ষেত্রে রোগ ও রোগীর বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ করে অনুমান করা যায় যে পুনরক্তক্ষরণ বা মারাত্মক কিছু ঘটার আশঙ্কা কতটুকু। গবেষণায় দেখা যায়, বয়স্ক রোগী বিশেষ করে যাঁদের অন্য কোনো বড় ধরনের রোগ আছে এবং রক্তক্ষরণের জন্য যাঁরা ৫ ব্যাগের বেশি রক্ত গ্রহণ করেছেন, এ রোগে তাঁদের মৃত্যুর আশঙ্কা বেশি। এ ছাড়া পাকস্থলীর ক্ষতের বৈশিষ্ট্যের ওপর পুনরক্তক্ষরণ ও মৃত্যুর ঘটনাও ঘটতে পারে।

কখন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন
রক্তবমি ও কালো পায়খানা হলে অবহেলা করবেন না। এ ধরনের রোগীকে জরুরিভাবে হাসপাতালে পরিপাকতন্ত্র, কোলোরেক্টাল ও লিভার বিশেষজ্ঞের অধীনে ভর্তি করতে হবে। অবহেলার কারণে অনেক রোগী এ রোগে মৃত্যুমুখে পতিত হয়ে থাকে। বিশ্বের উন্নত দেশেও শতকরা ৫ থেকে ১০ ভাগ রোগী পাকস্থলীর রক্তক্ষরণজনিত কারণে মারা যায়। নিজে নিজে ব্যথার ওষুধ খাওয়ার ফলে  আমাদের দেশে এ রোগের হার মারাত্মক হারে বাড়ছে। তাই নিজে থেকে ওষুধ নয়, যেকোনো অসুখ হলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ খেলে এ রোগ থেকে মুক্ত থাকা সম্ভব।

লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, কোলোরেক্টাল সার্জারি বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।

চেম্বার: ১৯ গ্রিন রোড, এ. কে. কমপ্লেক্স লিফট-৪, ঢাকা।

মানসিক সমস্যা হওয়ার আগে সচেতন হোন

শিশুদের বাতরোগ: প্রাথমিকভাবে শনাক্ত হলে ঝুঁকি এড়ানো সম্ভব

জ্বর হলে কখন জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন

হাঁচি-কাশি হলে অবহেলা নয়, সচেতনতা দরকার

আপনার শিশু কি লম্বা হচ্ছে না

ঋতু অনুযায়ী ফল খাওয়ার উপকারিতা

ঈদযাত্রায় সতর্ক থাকুন

নবজাতকের অসুস্থতার লক্ষণগুলো কী

হেপাটাইটিস বি লক্ষণ ও চিকিৎসা

শিশু-কিশোরদের যে ধরনের পানীয় না দেওয়া ভালো