Ajker Patrika
হোম > স্বাস্থ্য > চিকিৎসকের পরামর্শ

আক্কেল দাঁতের ব্যথা

ডা. পূজা সাহা

আক্কেল দাঁতের ব্যথা

আক্কেল দাঁত ওঠার অভিজ্ঞতা একটা বয়সের পর কমবেশি সবারই হয়। প্রচণ্ড ব্যথা সহ্য করতে হয় এই সময়টাতে। সেই ব্যথা থাকে কয়েক দিন পর্যন্ত! অনেকে এই ব্যথা সহ্য করতে না পেরে ব্যথানাশক সেবন করে। মানুষের মুখগহ্বরের ওপরের ও নিচের চোয়ালের সবচেয়ে পেছনে বা শেষে উভয় দিকে একটি করে মোট চারটি দাঁত ওঠে। এই দাঁতগুলোই আক্কেল বা উইজডম টিথ। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ১৭ থেকে ২১ বছর বয়সের মধ্যে এই দাঁত উঠে থাকে।

ব্যথা হয় কেন

যখন আক্কেল দাঁত ওঠে, তখন প্রচণ্ড ব্যথা হয়। ব্যথায় মুখের ভেতরসহ গালও ফুলে যায়। অন্য দাঁত ওঠার সময় এত ব্যথা হয় না। ১৭ বছরের পর এ দাঁত ওঠে। এ সময় আমাদের মাড়ির কোষ একটু পুরু ও শক্ত হয়ে যায়। ফলে দাঁতকে সে শক্ত কোষের মাড়ি চিরে উঠতে হয়। এ জন্য মাড়িতে চাপ অনুভুত হয় এবং ব্যথা থাকে।

আক্কেল দাঁত কখনো আংশিকভাবে, কখনো আঁকাবাঁকা হয়ে ওঠে, কখনো উঠতেই পারে না; মাড়ির নিচে লুকিয়ে থাকে। ফলে আক্কেল দাঁতের মাড়ির টিস্যুর নিচে খাবার জমে। সে খাবারের কারণে মাড়িতে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ হতে পারে। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় একে পেরিকরোনাইটিস বলে। এর ফলে তীব্র ব্যথা হয়, মাড়ি ও গাল ফুলে যায়। মুখ হাঁ করতে অসুবিধা হয়। মুখে দুর্গন্ধ হয় এবং কারও কারও ব্যথার কারণে জ্বরও হতে পারে।

ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায়

  • হালকা গরম পানিতে এক চিমটি লবণ দিয়ে কুলকুচি করুন। দাঁতের ব্যথা কমাতে লবণ পানি দিয়ে কুলি করা উপকারী।
  • ক্লোভ অয়েল বা লবঙ্গর তেল দাঁতের ব্যথা উপশম করে। এটি ব্যাকটেরিয়ার সঙ্গে লড়াই করতে সহায়তা করে এবং সংক্রমণের ঝুঁকি দূর করে। ব্যথা উপশম করতে লবঙ্গ তেল বা ছয়টি লবঙ্গের কুঁড়ি পানিতে ফোটান এবং মাড়িতে ম্যাসাজ করুন। এতে ব্যথা কিছুক্ষণের জন্য কমে যাবে।

আক্কেল দাঁত তুলবেন যখন

একসময় দাঁতের কোনো সমস্যা হলেই মানুষ ফেলে দিত। তবে এখন দন্ত চিকিৎসকেরা দাঁত না ফেলে রক্ষা করার ব্যাপারে আগ্রহী। তবে আক্কেল দাঁতের বেলায় কোনো সমস্যা হলে ফেলে দেওয়া যায়। মানুষ প্রধানত খাবারের জন্য যে দাঁত করে সেগুলোর নাম মোলার টিথ। আক্কেল দাঁত তিনটি মোলার দাঁতের মধ্যে একটি। কিন্তু এগুলো খাবার চিবোনোর কাজে লাগে না। মাড়ির সামনে যে মোলার দাঁতগুলো আছে, সেগুলোই খাওয়ার কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে।

এই দাঁত মাঝেমধ্যে যেহেতু সমস্যা তৈরি করে, তাই এগুলো ফেলে দেওয়া যায়। অনেক ভেতরে হওয়ায় এর রুট ক্যানেল চিকিৎসাও জটিল। অনেক সময় রোগীর যদি মুখের আকৃতি ভালো থাকে তবে আধুনিক রক্ষণাবেক্ষণ পদ্ধতিতে রেখে দেওয়া যায়। তবে যেহেতু আক্কেল দাঁত খাওয়ার কাজে কোনো সাহায্য করে না, তাই সেগুলো ফেলে দিলেও সমস্যা নেই।

আক্কেল দাঁতে বারবার ব্যথা হওয়ার বিষয়টিকে অনেকেই এড়িয়ে যান। তবে আক্কেল দাঁত যেহেতু একটি হাড়ের মধ্যে রয়েছে, তাই তার সংক্রমণ বাড়তে বাড়তে হাড়টি ক্ষয় হয়ে গলার দিকে ছড়িয়ে পড়তে পারে। এটি অনেক সময় সামনে-পেছনে এমনভাবে ছড়িয়ে যেতে পারে যা ‘জীবনঝুঁকি’র কারণ হয়ে দেখা দেয়। এ অবস্থায় দ্রুত অপারেশন করে তা অপসারণ করতে হয়।

তাই অবহেলা না করে সময় থাকতে এ ধরনের সমস্যা হলে রোগীকে প্রথমে ম্যাক্সিলোফেসিয়াল সার্জনদের কাছে যেতে হবে।

লেখক: ডেন্টাল সার্জন, সিকদার ডেন্টাল কেয়ার, ঢাকা

মানসিক সমস্যা হওয়ার আগে সচেতন হোন

শিশুদের বাতরোগ: প্রাথমিকভাবে শনাক্ত হলে ঝুঁকি এড়ানো সম্ভব

জ্বর হলে কখন জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন

হাঁচি-কাশি হলে অবহেলা নয়, সচেতনতা দরকার

আপনার শিশু কি লম্বা হচ্ছে না

ঋতু অনুযায়ী ফল খাওয়ার উপকারিতা

ঈদযাত্রায় সতর্ক থাকুন

নবজাতকের অসুস্থতার লক্ষণগুলো কী

হেপাটাইটিস বি লক্ষণ ও চিকিৎসা

শিশু-কিশোরদের যে ধরনের পানীয় না দেওয়া ভালো