ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের সাংবাদিক ইভান গেরশকোভিচসহ রাশিয়ায় বন্দী তিন মার্কিন নাগরিককে বন্দী বিনিময় চুক্তির আওতায় মুক্তি দেওয়া হচ্ছে। আজ বৃহস্পতিবার তাঁদের মুক্তি দেওয়া হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।
তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারায় এই বন্দী বিনিময় শুরু হয়েছে। রাশিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং চারটি ইউরোপীয় দেশের মধ্যে বড় এই বন্দী বিনিময় চলছে। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
একজন সিনিয়র মার্কিন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আজ মুক্তি পেতে যাওয়া তিনজন হলেন গেরশকোভিচ, সাবেক মার্কিন মেরিন কর্মকর্তা পল হুইলান এবং রাশিয়ান-আমেরিকান রেডিও সাংবাদিক আলসু কুরমাশেভা। বাইডেন প্রশাসনের সম্মত চুক্তির অধীনে তাঁরা মুক্তি পাচ্ছেন বলে নিশ্চিত করেছেন ওই কর্মকর্তা।
তবে এই বন্দী বিনিময়ে চুক্তির আওতায় মোট ২৪ জন বন্দী মুক্তি পাবেন। এসব বন্দী রাশিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি এবং অন্যান্য তিনটি পশ্চিমা দেশে আছেন। স্থানীয় সময় আজকের শেষ দিকে বন্দী বিনিময় হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।
এই চুক্তির আওতায় আট রুশ নাগরিককে রাশিয়ায় ফেরত পাঠানো হবে বলে আশা করা হচ্ছে। তাঁদের মধ্যে কয়েকজনের সঙ্গে রাশিয়ান গোয়েন্দাদের সন্দেহজনক সম্পর্ক রয়েছে।
তাঁদের মধ্যে একজন হলেন ভাদিম ক্রাসিকভ। জার্মান কর্মকর্তাদের তদন্তানুসারে, ক্রাসিকভ রাশিয়ার গোয়েন্দা সংস্থা এফএসবির একজন কর্নেল। তিনি জার্মানির বার্লিন পার্কে ক্রেমলিনের প্রতিপক্ষকে ২০১৯ সালের হত্যা করেন। এর দায়ে তিনি দেশটিতে এখন যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ভোগ করছেন। তাঁকে এখন উড়োজাহাজে করে আঙ্কারায় নেওয়া হচ্ছে।
রাশিয়ায় কারাগারে থাকা বেশ কিছু ভিন্ন মতাবলম্বী এবং সাংবাদিকদের অজানা স্থানে সরিয়ে নেওয়ার পরে এই বিনিময় চুক্তির কথা সামনে আসল। নিখোঁজ সেই বন্দীদের একজন রাশিয়ান-ব্রিটিশ দ্বৈত নাগরিক ভ্লাদিমির কারা-মুর্জা। তাঁর অবস্থান এখনো অজানা। তবে চুক্তি হওয়ায় তিনিও মুক্তি পেতে পারেন বলে আশা করা হচ্ছে।
তালিকার সম্ভাব্য ব্যক্তিরা হলেন রাশিয়ার বিরোধী রাজনীতিবিদ ইলিয়া ইয়াশিন এবং প্রবীণ মানবাধিকারকর্মী ওলেগ অরলভ।
কারাগার থেকে গোপনে বন্দীকে অন্যত্রে সরিয়ে নেওয়া রাশিয়ায় সাধারণ ঘটনা হলেও একের পর এক আন্তর্জাতিক বন্দীদের বেলায় তা বেশ অস্বাভাবিক।
এই সপ্তাহের শুরুর দিকে, বেলারুশের নেতা আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্কো এক জার্মান নাগরিক রিকো ক্রিগারকে ক্ষমা করে দেন। ওই জার্মানকে সন্ত্রাসবাদ এবং অন্যান্য অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।
বিবিসির তথ্যানুযায়ী, চুক্তি অনুযায়ী সব বন্দী বিনিময় হলে, এটি ইতিহাসে রাশিয়া এবং পশ্চিমের মধ্যে সবচেয়ে বড় বন্দী বিনিময় হবে। এর আগে, হাইপ্রোফাইল বন্দী বিনিময় হয়েছিল ২০২২ সালের ডিসেম্বরে। ওই সময় আবুধাবি বিমানবন্দরে মার্কিন বাস্কেটবল তারকা ব্রিটনি গ্রিনারের বিনিময়ে কুখ্যাত রাশিয়ান অস্ত্র ব্যবসায়ী ভিক্টর বাউটের টারমাকে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল।