ভারতের উত্তর প্রদেশের কানপুরে মুসলিম ব্যক্তির ওপর হামলার অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে এমনটি বলা হয়েছে।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বুধবার কানপুরের বাসিন্দা ৪৫ বছর বয়সী ওই ব্যক্তিকে রাস্তা দিয়ে জোর করে টানতে টানতে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় তাঁকে মারধরও করা হয়। একই সঙ্গে তাঁকে ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি দিতে বাধ্য করা হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। মারধরের পর ওই মুসলিম ব্যক্তিকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়। কিন্তু ঘটনা বিস্তারিত জানার পর পুলিশ রাহুল, আমান এবং রাজেশ নামের তিনজনকে গ্রেপ্তার করে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের মোবাইল ফোনে তোলা ঘটনার ভিডিও ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, বাবার প্রাণরক্ষার জন্য তাঁকে জড়িয়ে ধরে রয়েছে তাঁর শিশু কন্যা। এমনকি পুলিশ হেফাজতেও রক্ষা পাননি ওই ব্যক্তি। তখনো তাঁকে আঘাত করা হয়েছে। সেখানে এলাকার মুসলিমরা একটি হিন্দু মেয়েকে ধর্ম পরিবর্তনের চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ ওঠার পর এই হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে। ডানপন্থী বজরং দল আয়োজিত একটি সভাস্থল থেকে ৫০০ মিটার দূরে ঘটনাটি ঘটে। যদিও ঘটনার সঙ্গে বজরং দলের জড়িত থাকা কথা কেউ বলতে স্বীকার করছে না। যদিও এই গ্রেপ্তারির বিরুদ্ধে থানার সামনে আবার বিক্ষোভ দেখিয়েছে বজরং দলের সদস্যরা।
কানপুর পুলিশ জানিয়েছে, বিয়েবাড়ির অনুষ্ঠানে ব্যান্ড পার্টির জোগান দেওয়া এক ব্যক্তি, তাঁর ছেলে এবং অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
হামলার শিকার ওই ব্যক্তি জানান, স্থানীয় সময় বুধবার বেলা ৩টায় রিকশা চালিয়ে যাওয়ার সময় তাঁকে ঘিরে ধরে হামলা করা হয়। আক্রমণকারীরা তাঁকে এবং তাঁর পরিবারকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছিল। পুলিশ এসে তাঁকে উদ্ধার করে।
জানা গেছে, ওই ব্যক্তি স্থানীয় একটি মুসলিম পরিবারের আত্মীয়। যাদের সঙ্গে হিন্দু প্রতিবেশীদের বিরোধ রয়েছে। এ নিয়ে পরস্পরের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেছে দুই পরিবার।
সম্প্রতি এই বিরোধের সঙ্গে যুক্ত হয় বজরং দল। ওই মুসলিম পরিবারটির বিরুদ্ধে জোর করে ধর্মান্তরকরণের অভিযোগ এনে তারা উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তুলেছে বলে অভিযোগ।
কানপুরের এক শীর্ষ পুলিশকর্তা রবিনা ত্যাগী জানান, ওই ভিডিও তাঁদের নজরে এসেছে। আক্রান্ত ব্যক্তির অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু হয়েছে। দোষীদের ছাড় দেওয়া হবে না।