কানাডার কূটনীতিকদের ভারত ছাড়তে বলার কারণ জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। তিনি বলেছেন, ‘দুই দেশের কূটনীতিকদের সংখ্য়ার মধ্যে সমতা থাকা দরকার। তাই ভারত এই কাজ করেছে। আর ভিয়েনা কনভেনশনের মধ্যে থেকেই এই কাজ করেছে ভারত।’
গতকাল রোববার জয়শঙ্কর বলেন, ‘ভিয়েনা কনভেনশনে বলা হয়েছে, দুই দেশের কূটনীতিকদের মধ্যে সংখ্যার দিক থেকে একটা সমতা থাকা দরকার। ভারত এই সমতা চেয়েছে কারণ, আমরা দিল্লির অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কানাডার কর্মকর্তাদের ক্রমবর্ধমান হস্তক্ষেপ নিয়ে রীতিমতো উদ্বিগ্ন ছিলাম।’
কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, তারা ভারতের এই অভিযোগ আগেই অস্বীকার করেছেন। এর আগে কূটনৈতিক সম্পর্কের ব্যাপারে দিল্লি ভিয়েনা কনভেনশন লঙ্ঘন করেছে বলে কানাডার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছিল ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
ভারতের দেওয়া সময়সীমা মেনে নিয়ে দিল্লি থেকে ৪১ জন কূটনীতিককে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে গিয়েছে কানাডা। এরপরই কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বলেছেন, দিল্লি যা করছে তাতে দুই দেশের লাখ লাখ মানুষের কষ্ট বাড়ছে। কূটনীতির মূল বিষয়গুলোই ভারত মানছে না বলে তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘ভারত যে কানাডার কূটনীতিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলো, তার প্রভাব দুই দেশের বাণিজ্য, পর্যটন এবং কানাডায় থাকা ভারতীয় শিক্ষার্থীদের ওপর পড়বে।’
এরপরই মুখ খুলেছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। তিনি জানিয়েছেন, কানাডার ভিসা আবার দেওয়া শুরু হবে যদি সেখানে ভারতীয় কূটনীতিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে ট্রুডোর দেশ। ভারত ও কানাডার সম্পর্ক কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে জানিয়ে জয়শঙ্কর বলেছেন, কানাডার বেশ কিছু নীতি নিয়ে ভারতের অসুবিধা আছে।
এদিকে, ট্রুডোর সমালোচনা করেছেন কানাডার প্রধান বিরোধী দলের নেতা পিয়ের পলিয়েভ। তিনি বলেছেন, ‘ট্রুডো দেশে কানাডীয়দের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করেছেন এবং আমাদের সঙ্গে বিদেশি রাষ্ট্রের সম্পর্ক নষ্ট করেছেন। ভারতে তাকে নিয়ে মানুষ হাসাহাসি করছে। ট্রুডো এতটাই অপেশাদার যে, ভারত সহ বিশ্বের অধিকাংশ দেশের সঙ্গে কানাডার সম্পর্ক এখন খারাপ হয়ে গেছে।’
ডেকান হেরাল্ড জানিয়েছে, পিয়ের পলিয়েভ শুধু কানাডার হাউস অফ কমন্সে সবচেয়ে বড় বিরোধী দলের নেতা তাই নন, ভোটের আগের সমীক্ষায় দেখা গেছে, তিনি প্রধানমন্ত্রী ট্রুডোর থেকে জনপ্রিয়তায়ও অনেক এগিয়ে আছেন। সংবাদমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে পলিয়েভ বলেন, ক্ষমতায় এলে তিনি অবশ্যই ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নত করবেন।
শিখ নেতা হরদীপ সিং নিজ্জার হত্যায় ভারত সরকার জড়িত থাকতে পারে—কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো এমন অভিযোগ তোলেন। তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করে ভারত। পরে কানাডীয় নাগরিকদের ভিসা দেওয়া বন্ধ ঘোষণা করে ভারত সরকার। তার আগে পাল্টাপাল্টি কূটনীতিক বহিষ্কারের ঘটনাও ঘটিয়েছিল উভয় পক্ষ।