নিজেকে জীবিত প্রমাণ করতে ৩৪ বছর ধরে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে ঘুরছেন ৫২ বছর বয়সী বৃদ্ধা বুকুন দেবী। ভারতের বিহার রাজ্যের বাসিন্দা তিনি।
দুবাইভিত্তিক সংবাদমাধ্যম গালফ নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়, ৫২ বছর বয়সী বৃদ্ধা বুকুন দেবী বিহারের ওয়েস্ট চাম্পারান জেলার বাসিন্দা। ১৯৮৭ সাল থেকেই সরকারি খাতায় মৃত বুকুন দেবী। যতবারই তিনি নিজেকে জীবিত প্রমাণ করতে গেছেন, ততবারই তাঁকে তাচ্ছিল্য করা হয়েছে।
বুকুন দেবী জানান, ভারতের সরকারি কর্মকর্তারা তাঁকে দেখে বহুবার বলেছেন যে আবার এসেছে সেই মৃত নারী নিজেকে জীবিত প্রমাণ করতে।
ঘটনাটির শুরু ১৯৮৭ সালে। ওই বছর বুকুন দেবীর ছেলে সুখদেও প্রসাদ পরিসংখ্যান বিভাগ থেকে তাঁর মায়ের ডেথ সার্টিফিকেট বের করে। উদ্দেশ্য ছিল, বুকুন দেবীর ১৮ কাঠা জমি দখল করা। বুকুন দেবী জানান, তাঁর স্বামী ওই জায়গাটুকু তাঁকে রেজিস্ট্রির করে দিয়ে যান। কিন্তু পরে সেটি তাঁর ছেলে দখল করার জন্য উঠেপড়ে লাগে। মায়ের জাল ডেথ সার্টিফিকেট বের করে বুকুন দেবীর ছেলে জায়গাটি দখল করে।
বুকুন দেবী বলেন, `আমি যখনই স্থানীয় সরকারি অফিসে সমস্যা সমাধানের জন্য গেছি, তখনই আমাকে বের করে দেওয়া হয়েছে। তাঁরা আমাকে বলতেন, তুমি মৃত, বাড়ি যাও।'
বুকুন জানান, জীবিত প্রমাণ করার জন্য আঁধার কার্ড, ব্যাংক পাসবুকের সব গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট দেওয়া হয়েছে। এর পরেও তাঁকে জীবিত মানতে নারাজ সরকারি কর্মকর্তারা।
বুকুনের আশা ছিল করোনার দুই ডোজ ভ্যাকসিন নেওয়ার পর কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দেওয়া সার্টিফিকেটের মাধ্যমে হয়তো তাঁর সমস্যার সমাধান হবে। গত জুলাইতে তিনি ওই সার্টিফিকেট পান। ওই সার্টিফিকেটও প্রত্যাখ্যান করেন কর্মকর্তারা। ওই সার্টিফিকেট গ্রামের কাউন্সিলর দ্বারাও সত্যায়িত ছিল।
এ প্রসঙ্গে বুকুন দেবী বলেন, `আমি কী করব? আমি অসহায়!'
ওয়েস্ট চামপারান জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কুন্দান কুমার বলেন, `এটি খুব গুরুতর একটি ঘটনা। আমরা বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি এবং তদন্ত সাপেক্ষে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'