মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইরানের বিরুদ্ধে আরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এবারে তারা ইরানের ৩৫টি প্রতিষ্ঠান ও জাহাজকে লক্ষ্যবস্তু করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের মতে, এগুলো ইরানি পেট্রোলিয়াম বিদেশি বাজারে পরিবহনের জন্য ব্যবহৃত একটি ‘ভৌতিক নৌবহরের’ অংশ। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ গতকাল মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে বলেছে, এই নিষেধাজ্ঞাগুলো দুই মাস আগে আরোপিত নিষেধাজ্ঞার মতোই। সেই নিষেধাজ্ঞা ইসরায়েলের সামরিক স্থাপনায় ১ অক্টোবর ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ও দেশটির ঘোষিত পারমাণবিক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধির প্রতিক্রিয়ায় দেওয়া হয়েছিল।
মার্কিন ট্রেজারির সন্ত্রাস ও আর্থিক গোয়েন্দা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত আন্ডার সেক্রেটারি ব্র্যাডলি স্মিথ বলেন, ‘ইরান তার পেট্রোলিয়াম বাণিজ্য থেকে অর্জিত রাজস্ব পারমাণবিক কর্মসূচির উন্নয়ন, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র এবং মানববিহীন আকাশযান প্রযুক্তির বিস্তার এবং আঞ্চলিক সন্ত্রাসী মদদদাতা গোষ্ঠীগুলোর পৃষ্ঠপোষকতায় ব্যবহার করছে। বিষয়টি অঞ্চলটিকে আরও অস্থিতিশীল করার ঝুঁকি তৈরি করছে।’
ব্র্যাডলি স্মিথ আরও বলেন, ‘এসব অবৈধ কার্যক্রম সহজতর করতে ব্যবহৃত ভৌতিক নৌবহর ও তাদের অপারেটরদের মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্র তার সব ধরনের সরঞ্জাম ও ক্ষমতা ব্যবহার করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’ ইরানের তেল ও পেট্রোকেমিক্যাল পণ্যে আগে থেকেই কঠোর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছে।
ট্রেজারি বিভাগের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইরান তার পেট্রোলিয়াম বিদেশি ক্রেতাদের কাছে পরিবহন করতে ‘বহু অঞ্চলের ট্যাংকার এবং জাহাজ পরিচালনা সংস্থাগুলোর একটি বিস্তৃত নেটওয়ার্কের ওপর নির্ভর করছে।’ এতে আরও বলা হয়েছে, ‘ভুয়া নথি তৈরি, জাহাজ ট্র্যাকিং সিস্টেমের তথ্য পরিবর্তন এবং জাহাজের নাম ও পতাকা বারবার বদলানোর মতো কৌশল ব্যবহার করা হচ্ছে।’
সর্বশেষ নিষেধাজ্ঞার অধীনে এসব প্রতিষ্ঠানের মার্কিন সম্পদ জব্দ করা হবে এবং সাধারণত মার্কিন নাগরিকদের জন্য তাদের সঙ্গে আর্থিক লেনদেন নিষিদ্ধ করা হবে। গত ১ অক্টোবর হামাসপ্রধান ইসমাইল হানিয়াকে তেহরানে হত্যা এবং বৈরুতে হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরুল্লাহ ও এক ইরানি জেনারেলকে হত্যার প্রতিশোধে তেহরান ইসরায়েলের ওপর ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়।
ইরানের জাতিসংঘ দূত আমির সাঈদ ইরাভানি হানিয়ের হত্যাকাণ্ডের পর বলেন, তাঁর দেশ স্বাধীনতা ও ভূখণ্ড রক্ষায় এবং গুরুত্বপূর্ণ স্বার্থ ও নিরাপত্তায় যে কোনো আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সম্পূর্ণ প্রস্তুত। ইরান হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, যদি জ্বালানিযুদ্ধ শুরু হয়, তবে বিশ্ব প্রতিদিন প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ ব্যারেল তেল হারাবে, যা বৈশ্বিক উৎপাদনের প্রায় ১০ শতাংশ।