ইসরায়েলে ইয়েমেনের ইরান-সমর্থিত বিদ্রোহী গোষ্ঠী হুতিদের হামলার পর একের পর এক ইয়েমেনে হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। এর মধ্যে হুতিদের চূড়ান্ত হুঁশিয়ারি দিলেন জাতিসংঘে ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত দানি দানন। গতকাল সোমবার নিরাপত্তা পরিষদে তিনি বলেন, হুতিরা ইসরায়েলের ওপর ক্ষেপণাস্ত্র হামলা বন্ধ না করলে তাদেরও হামাস, হিজবুল্লাহ এবং সিরিয়ার বাশার আল-আসাদের পরিণতি ভোগ করতে হবে।
দানন তেহরানকে সতর্ক করে বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের যেকোনো লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার সক্ষমতা রাখে ইসরায়েল, এর মধ্যে ইরানও অন্তর্ভুক্ত। ইসরায়েল ইরান বা ইরান সমর্থিত কারও কোনো হামলা সহ্য করবে না।
দানন বলেন, ‘ইসরায়েল আর হুতি আক্রমণ সহ্য করবে না। ইসরায়েল তার জনগণকে রক্ষা করবে। আমাদের শক্তির কাছে তাদের সন্ত্রাস কিছুই না।’
তিনি বলেন, ‘হুতিরা হয়তো খেয়াল করেনি গত এক বছরে মধ্যপ্রাচ্যে কী ঘটেছে। আমি স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, হামাস, হিজবুল্লাহ, আসাদ এবং যারা আমাদের ধ্বংস করতে চেয়েছিল তাদের পরিণতির কথা। এটি শেষ হুঁশিয়ারি। এটা হুমকি নয়। শেষবারের মতো বলছি, হুতিরাও একই দুঃখজনক পরিণতি ভোগ করবে।’
এর কয়েক ঘণ্টা পরই ইসরায়েল সামরিক বাহিনী জানায়, তারা ইয়েমেন থেকে ছোড়া একটি ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করেছে। আজ মঙ্গলবার হুতিদের সামরিক মুখপাত্র ইয়াহিয়া সারি জানান, হুতি বিদ্রোহীরা তেল আবিবের কাছে বেন গুরিওন বিমানবন্দর এবং জেরুজালেমের দক্ষিণে একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র লক্ষ্য করে হাইপারসনিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও জুলফিকার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে।
ইসরায়েল তাদের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ব্যর্থ করে দিলেও হুতিদের প্রধান নেতা মোহামেদ আলি আল-হুতি বলেন, হুতি বিদ্রোহীরা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আক্রমণ চালানো থামাবে না। গাজার প্রতি সমর্থনে এই হামলা চলবে।
গত সপ্তাহে ইয়েমেনের সানা বিমানবন্দর, দেশের পশ্চিম উপকূলে বন্দর এবং দুটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র লক্ষ্য করে হামলা চালায় ইসরায়েল। ইসরায়েলি হামলার সময় সানা বিমানবন্দরে ছিলেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান তেদ্রোস আধানম ঘেব্রেয়েসুস।
এসব হামলা নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদে সভায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন জাতিসংঘের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক সহকারী মহাসচিব খালেদ খিয়ারি। তিনি হুতিদের ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আক্রমণ বন্ধের আহ্বান জানান। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক ও মানবিক আইনের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করার জন্যও আহ্বান জানান তিনি।
খালেদ খিয়ারি মনে করেন, সামরিক উত্তেজনা বৃদ্ধি আঞ্চলিক স্থিতিশীলতাকে হুমকিতে ফেলতে পারে এবং এ ধরনের তৎপরতা রাজনৈতিক, নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক ও মানবিক প্রভাব ফেলতে পারে।
তিনি বলেন, ‘এই উত্তেজনার ভার বহন করতে হবে ইয়েমেন–ইসরায়েলসহ মধ্যপ্রাচ্যের লাখ লাখ মানুষকে, যার কোনো সমাপ্তি নেই।’