Ajker Patrika

পরমাণু আলোচনায় ছাড় দিয়ে সমাধানে আগ্রহী ইরান-যুক্তরাষ্ট্র

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ১২ এপ্রিল ২০২৫, ১২: ০৩
তেহরানে অবস্থিত সাবেক মার্কিন দূতাবাসের বাইরের দেয়ালে আঁকা ইরানি ও মার্কিন কর্মকর্তার বৈঠকের চিত্রকর্মের পাশ দিয়ে হাঁটছেন লোকজন। ছবিটি গত ৮ এপ্রিল তোলা। ছবি: এএফপি
তেহরানে অবস্থিত সাবেক মার্কিন দূতাবাসের বাইরের দেয়ালে আঁকা ইরানি ও মার্কিন কর্মকর্তার বৈঠকের চিত্রকর্মের পাশ দিয়ে হাঁটছেন লোকজন। ছবিটি গত ৮ এপ্রিল তোলা। ছবি: এএফপি

পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলের দেশ ওমানে আজ শনিবার থেকে শুরু হতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যকার পরমাণু আলোচনা। এখন পর্যন্ত উভয় দেশই এই আলোচনার প্রতি ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফ জানিয়েছেন, ইরানকে ছাড় দিতে প্রস্তুত যুক্তরাষ্ট্র। ইরানও জানিয়েছে, তারা এই কূটনৈতিক প্রচেষ্টাকে মূল্য দিতে চায়।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে প্রকাশিত স্টিভ উইটকফের সাক্ষাৎকারে বলা হয়েছে, তিনি স্বীকার করেছেন যে ট্রাম্প প্রশাসন নতুন পরমাণু চুক্তি নিশ্চিত করার জন্য ইরানকে ছাড় দিতে প্রস্তুত। আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরুর মাত্র এক দিন আগে তিনি এই মন্তব্য করেন।

ছাড় দেওয়ার ইঙ্গিত সত্ত্বেও উইটকফ বলেছেন, যেকোনো সম্ভাব্য চুক্তি এখনো দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্র যে মূল শর্ত দিয়ে আসছে তার মধ্যেই থাকবে। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, আমাদের অবস্থান শুরু হয় আপনাদের (ইরানের) পরমাণু কর্মসূচির বিলুপ্তির মধ্য দিয়ে। আজও আমাদের অবস্থান এটাই।’ তিনি আরও বলেছেন, ইরান যদি পরমাণু কর্মসূচির কার্যকলাপ কমাতে অস্বীকার করে, তবে বিষয়টি সরাসরি ট্রাম্পের কাছে পাঠানো হবে।

পাশাপাশি উইটকফ ওয়াশিংটনের তথাকথিত ‘রেড লাইন’ বা চূড়ান্ত সীমারেখা বজায় রাখার অঙ্গীকারের ওপর জোর দিয়ে বলেছেন, ‘দুই দেশের মধ্যে আপস খুঁজে বের করার অন্যান্য উপায়ও থাকতে পারে’, তবে যেকোনো সমাধানে অবশ্যই ‘যাচাই-বাছাইয়ের ব্যবস্থা’ অন্তর্ভুক্ত থাকতে হবে। ইরান বারবার দাবি করেছে, তাদের পরমাণু কর্মসূচি বেসামরিক প্রকৃতির এবং এটি আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) নজরদারিতে আছে।

এদিকে, ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাগায়ী গতকাল শুক্রবার ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, ইরান যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পরমাণু ইস্যুতে কূটনীতিকে প্রকৃত মূল্য দিচ্ছে। বাগায়ী তাঁর এক্স অ্যাকাউন্টে লিখেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের উচিত তাদের বিদ্যমান সংঘাতপূর্ণ বাগাড়ম্বর সত্ত্বেও গঠিত এই সিদ্ধান্তকে মূল্যবান মনে করা।’

ইরানের এই কূটনীতিক উল্লেখ করেন, ‘আমরা কোনো পূর্বধারণা পোষণ করি না...আমরা কোনো ভবিষ্যদ্বাণী করি না...আমরা এই শনিবার অন্য পক্ষের উদ্দেশ্য এবং সংকল্প মূল্যায়ন করতে চাই।’ তিনি আরও বলেন, ইরান ‘যথাযথভাবে চিন্তা করবে এবং প্রতিক্রিয়া জানাবে।’

অপরদিকে, ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির উপদেষ্টা ও সাবেক কূটনীতিক আলী শামখানি গতকাল শুক্রবার নিশ্চিত করেছেন যে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে পরোক্ষ আলোচনায় বসতে ওমানের পথে রয়েছেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, ইরান একটি প্রকৃত, ন্যায্য ও বাস্তবায়নযোগ্য চুক্তি চাইছে। ওয়াশিংটন আন্তরিকভাবে আলোচনায় বসলে পথ পরিষ্কার ও সোজা হবে।

শামখানি এমন ইঙ্গিতও দিয়েছেন যে, ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রমের পরিপ্রেক্ষিতে সমৃদ্ধ পরমাণু উপাদান স্থানান্তর করতে পারে।

এর আগে, ট্রাম্প তাঁর প্রথম মেয়াদে ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে একতরফাভাবে প্রত্যাহার করে নেন এবং ইরানের ওপর ব্যাপক অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা পুনরায় আরোপ করেন। তেহরান মার্কিন প্রত্যাহারের পর এক বছর ধরে প্রথমে চুক্তিটি মেনে চললেও পরবর্তীতে প্রতিশ্রুতি থেকে সরে আসতে শুরু করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত