অনলাইন ডেস্ক
গত সপ্তাহে রাষ্ট্রায়ত্ত পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইনসের (পিআইএ) একটি বিজ্ঞাপন নিয়ে বিতর্কের জেরে বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে দেশটির সরকার। অনেকের মতে, বিজ্ঞাপনটি নাইন–ইলেভেন টুইন টাওয়ার হামলার স্মৃতি উসকে দিয়েছে।
আরব নিউজের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সম্প্রতি ইউরোপে পুনরায় ফ্লাইট চালু করেছে পিআইএ। গত ১০ জানুয়ারি প্যারিসের একটি ফ্লাইটের মাধ্যমে এই যাত্রা শুরু হয়। এই ফ্লাইটের মাধ্যমে পাকিস্তানের ওপর ইউরোপীয় ইউনিয়নের অ্যাভিয়েশন সেফটি এজেন্সির (ইএএসএ) চার বছরের নিষেধাজ্ঞার সমাপ্তি ঘটেছে।
উল্লেখ্য, গত ১০ জানুয়ারি পিআইএ তাদের অফিশিয়াল এক্স হ্যান্ডলে একটি প্রচারণামূলক ছবি পোস্ট করে। যেখানে দেখা যায়, একটি উড়োজাহাজ আইফেল টাওয়ারের দিকে উড়ে আসছে। এর সঙ্গে ট্যাগলাইন— Paris, we’re coming today।
ছবিটির সঙ্গে ১৯৭৯ সালে মার্কিন বিমান প্রস্তুতকারক সংস্থা বোয়িংয়ের একটি বিজ্ঞাপনের সঙ্গে মিল খুঁজে পাচ্ছেন অনেকে। সেই বিজ্ঞাপনে নিউইয়র্কের টুইন টাওয়ারের ওপর একটি বোয়িং ৭৪৭ উড়োজাহাজের ছায়া পড়তে দেখা যায়।
এ ছাড়া ছবিটি প্রকাশের পর অনলাইনেও অনেকে বলছেন, ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর টুইন টাওয়ারে বিমান হামলার ভয়াবহ স্মৃতিকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে!
গতকাল মঙ্গলবার পাকিস্তান পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষের সিনেটর শেরি রহমান এই বিজ্ঞাপনটি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘এই বিজ্ঞাপন আমাদের জাতীয় এয়ারলাইনের সুনাম নষ্ট করেছে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইশাক দার এ বিষয়ে বলেন, ‘এই বিজ্ঞাপনটি কে তৈরি করেছে, তা তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে প্রধানমন্ত্রী। এটি অবিবেচনাপ্রসূত কাজ।’
ইশাক দার বিজ্ঞাপন তৈরির বিকল্প উপায় প্রস্তাব করে বলেন, ‘তারা বিমানটিকে আইফেল টাওয়ারের ওপরে দেখাতে পারত এবং বলতে পারত, ‘‘আমরা আসছি”। অথবা তারা বিমানের শুধু সামনের অংশটিও দেখাতে পারত।’
পিআইএ গত ১০ জানুয়ারি থেকে প্যারিসে প্রতি সপ্তাহে দুটি ফ্লাইট পরিচালনা করছে। তবে যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্রে তাদের ফ্লাইট এখনো নিষিদ্ধ।
পিআইএ পাকিস্তানের বিভিন্ন শহর এবং উপসাগরীয় দেশ ও দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ার কিছু রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করে। প্রায় ৭ হাজার মানুষ সরকারি সংস্থাটিতে কাজ করেন। তবে পিআইএ দীর্ঘদিন ধরেই অব্যবস্থাপনা, অনিয়ম এবং আর্থিক সংকটে জর্জরিত।
সরকার এয়ারলাইনসটিকে বেসরকারিকরণের পরিকল্পনা করছে। কিন্তু আর্থিক সংকট ও ক্রেতার অভাবে এখনো কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারেনি। ইউরোপীয় ইউনিয়নে পুনরায় ফ্লাইট চালুর ফলে এয়ারলাইনসটির আয় বাড়বে বলে আশাবাদী কর্মকর্তারা।