হোম > জীবনধারা > ফিচার

ছয়বার ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দেন ব্রজেন দাস

অনলাইন ডেস্ক

যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সকে বিভক্ত করেছে আটলান্টিক মহাসাগরের ইংলিশ চ্যানেল। বিখ্যাত এই চ্যানেল অতিক্রম করা প্রথম এশীয় ও বাঙালি ব্রজেন দাস। ১৯৫৮ থেকে ১৯৬১ সালের মধ্যে মোট ছয়বার চ্যানেলটি অতিক্রম করেন তিনি। ১৯৯৮ সালের আজকের দিনে, অর্থাৎ ১ জুন পৃথিবী থেকে চিরবিদায় নেন তিনি। আজ শোনাব এই তুখোড় সাঁতারুর গল্প। 

১৯২৭ সালের ৯ ডিসেম্বর। মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানের কুচিয়ামোড়া গ্রামে জন্ম নেন ব্রজেন দাস। গ্রামের প্রাথমিক স্কুলে পড়ালেখা করার পর ১৯৪৬ সালে ঢাকার কে.এল জুবিলি স্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন পাস করেন। কলকাতার বিদ্যাসাগর কলেজ থেকে পরবর্তী সময়ে আইএ এবং বিএ পাস করেন। 

এবার বরং ব্রজেন দাসের সাঁতারের গল্প বলি। ছেলেবেলা থেকেই সাঁতারে প্রচণ্ড আগ্রহ ছিল তাঁর। বুড়িগঙ্গা নদীতে সাঁতার কেটে কেটে তুখোড় সাঁতারু হয়ে ওঠেন। পড়ালেখা শেষে ঢাকায় ফিরে পূর্ব পাকিস্তান ক্রীড়া ফেডারেশনকে বার্ষিক সাঁতার প্রতিযোগিতা চালু করতে উৎসাহিত করেন। এ সময় বিভিন্ন সাঁতার প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে ব্রজেন দাস নিজের সাঁতারে দক্ষতা আরও বাড়ান। ১৯৫৮ সালে অনুষ্ঠিত ইংলিশ চ্যানেল সাঁতার প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে আমন্ত্রিত হন। শীতলক্ষ্যা ও প্রমত্তা মেঘনায় সাঁতারচর্চা করে নিজেকে তৈরি করেন তিনি। একপর্যায়ে নারায়ণগঞ্জ থেকে চাঁদপুর পর্যন্ত সাঁতরে পাড়ি দেন। 

ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দেওয়ার আগে ব্রজেন দাস ভূমধ্যসাগরে কাপ্রি থেকে নেপলস পর্যন্ত সাঁতার প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। ৩৩ কিলোমিটার দূরপাল্লার সাঁতারে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেন তিনি। এটি ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দেওয়ার আগে তাঁর উৎসাহ আরও বাড়ায়। 

১৯৫৮ সালে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দেওয়ার প্রতিযোগিতায় অংশ নেন ২৩টি দেশের প্রতিযোগীরা। ১৮ আগস্ট চ্যানেলের ইংল্যান্ডর অংশ ডোভার থেকে বাস, তারপর প্লেনে চ্যানেল পাড়ি দিয়ে ওপারে চ্যানেলের ফরাসি অংশ কালেতে পৌঁছান। বিশ্রাম নেওয়ার পর রাত ১২টার সময় ডেকে তোলা হয় তাঁদের। প্রতিযোগীরা ছাড়াও নানা বয়সের মানুষ ভিড় জমিয়েছিল। 

একসময় হুইসেল বাজল। গর্জে উঠল পিস্তল। শুরু হলো সাঁতার। শুরুর আড়াই ঘণ্টা পর্যন্ত সবার থেকে এগিয়ে রইলেন ব্রজেন দাস। তবে একপর্যায়ে কিছু প্রতিযোগী ছাড়িয়ে গেলেন তাঁকে। চারদিকে ঘন কুয়াশা। তবে মাঝে মাঝে বোট, লঞ্চ থাকায় এগুলোর আলো দেখা যাচ্ছিল। আধো অন্ধকারে স্টিমারের আলো দেখে পিছু পিছু যাচ্ছিলেন অকুতোভয় এই সাঁতারু। একপর্যায়ে ঘন কুয়াশা সবকিছু ঢেকে দেওয়ায় বিপদে পড়লেন। তবে একসময় কুয়াশা কেটে গেল। কূল দেখতে পেলেন। তারপর প্রবল এক ঢেউয়ে তীরে পৌঁছে গেলেন তিনি।

প্রতিযোগিতা শুরু ১৯৫৮ সালের ১৮ আগস্ট মধ্যরাতে, শেষ হয় পরদিন শেষ বিকেলে। সেপ্টেম্বরে তিনি ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দেন, অপর পাশ দিয়ে। অর্থাৎ ইংল্যান্ড থেকে ফ্রান্সে হয়ে। 

১৯৫৮ থেকে ১৯৬১ সালের মধ্যে ব্রজেন দাস ছয়বার ইংলিশ চ্যানেল সাঁতরে অতিক্রম করেন। এর মধ্যে ১৯৬১ সালের সেপ্টেম্বরে সাড়ে ১০ ঘণ্টা সময় নিয়ে দ্রুততম ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দেওয়ার রেকর্ড গড়েন। এর আগে ইংলিশ চ্যানেল সাঁতরে অতিক্রম করার সর্বনিম্ন রেকর্ড সময় ছিল ১০ ঘণ্টা ৩৫ মিনিট। 

ব্রজেন দাস ১৯৭৬ সালে পান জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার। ১৯৯৮ সালের ১ জুন মৃত্যু হয় তাঁর। পরের বছর, অর্থাৎ ১৯৯৯ সালে স্বাধীনতা পদকে (মরণোত্তর) ভূষিত হন তিনি।

সূত্র: বাংলাপিডিয়া, উইকিপিডিয়া

শখের জিনিসে টাকা অপচয় হচ্ছে না তো

আপনি কি সিঙ্গেল? এভাবে উপভোগ করুন বছরের শেষ ছুটির দিনগুলো

৩০ বছর পার করল ফ্যাশন হাউস রঙ বাংলাদেশ

কী খাচ্ছি, দারুচিনি নাকি সিনামন

আরামের ঘুমের জন্য যা করতে পারেন

কর্মস্থলে জেনারেশন জি’র আচরণ নিয়ে তুমুল বিতর্ক

জাপানে স্কুলপড়ুয়া ছেলেদের প্রথম চুম্বনের অভিজ্ঞতা ৫০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্নে

শীতপোশাকে রঙের হাওয়া

এশিয়ার সবচেয়ে যোগ্য পাত্রকে বিয়ে করলেন, কে এই নারী

চাকরি থেকে বাদ পড়ছে জেন জি, কারণ কী?

সেকশন