হোম > বিজ্ঞান

সাগরে ছড়িয়ে পড়া তেল কীভাবে অপসারণ করা হয়

প্রমিতি কিবরিয়া ইসলাম, ঢাকা 

দুর্ঘটনাবশত জাহাজ থেকে সমুদ্রে বিপুল পরিমাণ তেল পড়ে যাওয়ার ঘটনা প্রায়ই সংবাদমাধ্যম আসে। এটি একটি গুরুতর সমস্যা, এটি সামুদ্রিক পরিবেশ ও বাস্তুতন্ত্রের বড় ক্ষতি করতে পারে। 

সমুদ্রোর পানিতে তেল পড়লে দ্রুত ছড়িয়ে যায়। এই তেল প্রাণিজগৎ, জলজ উদ্ভিদ এবং স্থানীয় বাস্তুসংস্থানকে বিপর্যস্ত করতে পারে। তাই দ্রুত ও সঠিকভাবে তেল পরিষ্কার করা খুবই জরুরি হয়ে পড়ে। এটি কিন্তু অত্যন্ত  চ্যালেঞ্জিং একটি কাজ।

রান্না থেকে শুরু করে গাড়ি চালানো বা প্লাস্টিকের খেলনা তৈরির মতো বিভিন্ন কাজে পেট্রলিয়াম তেল ব্যবহার করা হয়। তেল সর্বত্র পাওয়া যায় না। এটি কেবল পৃথিবীর নির্দিষ্ট কিছু জায়গায় মাটির গভীরে পাওয়া যায়। 

অনেক ভারী যন্ত্রপাতি দিয়ে অনেক গভীরে খনন করে তেল উত্তোলন করা হয়। 

এই জ্বালানি তেল সব স্থানে পাওয়া যায় না বলে অনেক দূরবর্তী জায়গায় জাহাজের মাধ্যমে এটি আমদানি–রপ্তানি করা হয়। 

বড় বড় ট্যাংকারে করে তেল সমুদ্রপথে পরিবহন করা হয়। আবার অনেক সময় দীর্ঘ পাইপলাইনের মাধ্যমেও স্থানান্তর করা হয়। 

গভীর সমুদ্রে তেলের ট্যাংকার দুর্ঘটনায় পড়তে পারে বা আটকে যেতে পারে কিংবা পাইপলাইন ফেটে বা ভেঙে যেতে পারে। যখন এমন হয়, তেল তখন ট্যাংকার বা কনটেইনার থেকে বেরিয়ে যায়।

তেল সমুদ্রে পড়ে গেলে তাৎক্ষণিকভাবে যতটা সম্ভব পরিষ্কার করার জন্য একসঙ্গে বহু মানুষ কাজ করে। এর মধ্যে একটি পদ্ধতি হলো, কোনো বাহ্যিক বাধা ব্যবহার করা যাতে তেল আরও বেশি জায়গায় ছড়িয়ে না পড়ে। এই বাধাকে বলা হয় ‘বুম’। এটি সাধারণত একটি ভাসমান বাধা যা পানির ওপর ভাসে এবং তেলকে একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলে আটকে রাখে। বুম তেলকে ঘিরে রাখে, এতে পরবর্তীতে তেল শোষণ বা স্কিমিং করার জন্য সুবিধা হয়। এ ছাড়া এটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলো যেমন পাখি বা সামুদ্রিক কচ্ছপের আবাস্থল রক্ষা করতে ব্যবহার করা হয়। 

আরেকটি পদ্ধতি হলো—স্কিমিং বা স্কুপিং, যার মাধ্যমে তেল পানি থেকে তুলে নেওয়া হয়। এই কাজের জন্য বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হয়। তবে এই পদ্ধতি সব সময় কার্যকরী না। এটি তেলের পরিমাণ এবং তেলের স্তরের ঘনত্বের ওপর নির্ভর করে। যদি তেল খুব বেশি পরিমাণে ছড়িয়ে পড়ে বা অত্যন্ত ঘন হয়, তাহলে এই পদ্ধতিতে তেল পরিষ্কার করা কঠিন হয়ে পড়ে। 

এই প্রথম দুটি পদ্ধতি মানুষ ও প্রাণিদের জন্য সবচেয়ে নিরাপদ। কিন্তু যখন এসব পদ্ধতি কার্যকরী হয় না, তখন তেল পরিষ্কার করার জন্য অন্যান্য পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। তেমন একটি পদ্ধতি হলো—তেল পোড়ানো। যখন অনেক তেল পানির ওপর ভাসে তখন আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। 

আরেকটি পদ্ধতি হলো রাসায়নিক উপাদান ব্যবহার করা যা সাবানের মতো কাজ করে। রাসায়নিক উপাদানগুলো তেলকে বিন্দু আকারে বিচ্ছিন্ন করে ফেলে। বিষয়টি তৈলাক্ত বাসন পরিষ্কার করতে সাবান ব্যবহার করার মতো। তবে এ পদ্ধতিতে প্রায়ই পুরোপুরিভাবে সমুদ্র থেকে তেল অপসারণ করা সম্ভব হয় না। 

এখন কিছু বিজ্ঞানী তেল খুঁজে বের করতে এবং শোষণ করতে রোবট ব্যবহারের কথা বলছেন। আবার অন্য বিজ্ঞানীরা তেল শোষণ করতে বড় বড় স্পঞ্জ ব্যবহার করার কৌশল উদ্ভাবন করেছেন। এভাবেই সমুদ্র থেকে তেল অপসারণের নতুন ও নিরাপদ কৌশল উদ্ভাবন চলছে। 

তেল বিভিন্নভাবে সমুদ্রের প্রাণিদের ক্ষতি করতে পারে। সামুদ্রিক ভোঁদরের  মতো পশমযুক্ত প্রাণিদের জন্য এসব তেল ভয়ঙ্কর ক্ষতিকর। তেল এদের পশমের তাপধারণ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। ফলে দেহ খুব বেশি ঠান্ডা হয়ে যেতে পারে। 

পাখিদের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটে। পাখিরা মাছ শিকার করার জন্য পানির সংস্পর্শে আসে। পানিতে থাকা তেল এদের পালককে কম পানি প্রতিরোধক করে তোলে, তখন লে তারা অত্যধিক গরম বা ঠান্ডা অনুভব করতে পারে। 

আবার যদি পাখি বা অন্যান্য প্রাণি তেল গিলে ফেলে তারা অসুস্থ হতে পারে। মাছ ও শেলফিশও (শামুক ও কাঁকড়া জাতীয় খোলসযুক্ত প্রাণি) তেল থেকে অসুস্থ হতে পারে। তেলযুক্ত মাছ বা শেলফিশ যদি অন্য প্রাণিরা খায়, তাহলে সেই প্রাণিরাও অসুস্থ হতে পারে। জ্বালানি তেলযুক্ত মাছ মানবদেহের জন্যও নিরাপদ নয়। 

তথ্যসূত্র: ওয়ান্ডারপলিস

প্রথমবারের মতো নিজস্ব প্রযুক্তির স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করল পাকিস্তান

কক্ষপথে পৌঁছাল ‘নিউ গ্লেন’ রকেট

মৃত্যুর পর আবারও বেঁচে ওঠার সুযোগ ২ কোটি ৪০ লাখ টাকায়

পৃথিবীর দিকে ছুটে আসছে ১৩ বিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরের ব্ল্যাক হোল থেকে শক্তিশালী বিকিরণ

অবশেষে কক্ষপথে পৌঁছাল বেজোসের ‘নিউ গ্লেন’ রকেট

চাঁদে ভ্যাকুয়াম ক্লিনার কেন পাঠাচ্ছে নাসা

‘নিউ গ্লেন’ রকেট উৎক্ষেপণ স্থগিত করল জেফ বেজোসের ব্লু অরিজিন

গাঁজা সেবনে সিজোফ্রেনিয়া ও পাগল হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে: গবেষণা

উৎক্ষেপণের জন্য প্রস্তুত বেজোসের ‘নিউ গ্লেন’ রকেট, যে কাজে ব্যবহৃত হবে

শীতকালে মুখ থেকে ধোঁয়া বের হয় যে কারণে

সেকশন