Ajker Patrika

চাঁদের ধুলা দিয়ে সৌর প্যানেল তৈরি করবেন বিজ্ঞানীরা

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ০৬ এপ্রিল ২০২৫, ২৩: ৩৭
ভবিষ্যতের চাঁদের শহরগুলোর বিদ্যুৎ সরবরাহ করবে সৌরশক্তি। ছবি: সেরকান ওজেন
ভবিষ্যতের চাঁদের শহরগুলোর বিদ্যুৎ সরবরাহ করবে সৌরশক্তি। ছবি: সেরকান ওজেন

চাঁদে মানুষের বসতি স্থাপনের জন্য দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা করছেন বিজ্ঞানীরা। তবে চাঁদে দীর্ঘদিন থাকার জন্য প্রয়োজন হবে ব্যাপক পরিমাণে বিদ্যুৎ শক্তি। আর তা পাওয়া যাবে সৌর প্যানেলের মাধ্যমে। এবার সৌর প্যানেল তৈরির জন্য চমকপ্রদ উপাদান ব্যবহারের কথা ভাবছেন বিজ্ঞানীরা। সেটি হলো চাঁদের ধুলা!

নতুন এক গবেষণায় বিজ্ঞানীরা দেখিয়েছেন, চাঁদের মাটি বা ধুলার অনুকরণের মাধ্যমে সৌর প্যানেল তৈরি করা সম্ভব। এই নতুন সৌর সেলগুলো সূর্যালোককে বিদ্যুৎ শক্তিতে রূপান্তর করতে পারবে এবং মহাকাশের তীব্র তেজস্ক্রিয়তা সহ্য করতে পারে। ফলে পৃথিবী থেকে ভারী সৌর যন্ত্রপাতি পাঠানোর প্রয়োজনীয়তা কমে যাবে।

বর্তমান মহাকাশ মিশনগুলোতে অত্যন্ত শক্তিশালী সৌর প্যানেল ব্যবহার করা হয়, যেগুলো ৪০ শতাংশ পর্যন্ত শক্তি রূপান্তর করে। তবে এসব সৌর প্যানেল অত্যন্ত ব্যয়বহুল এবং ভারী। কারণ, এগুলোতে সুরক্ষা প্রদানকারী কাচ বা পুরু ফয়েল ব্যবহার করা হয়।

পোটসডাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান গবেষক ফেলিক্স ল্যাং জানান, এ ধরনের সৌর প্যানেল মহাকাশে পাঠাতে প্রচুর অর্থ ও পরিশ্রম লাগে। চাঁদের মাটি ব্যবহার করে এই সমস্যা সমাধান করতে চান তিনি ও তাঁর দল।

চাঁদের পৃষ্ঠে মাটির নিচে ছড়িয়ে থাকা শিলা ও ধুলা, যাকে ‘রেগোলিথ’ বলা হয়। সেই উপকরণ দিয়েই নতুন সৌর প্যানেল তৈরি করা হয়েছে। ল্যাংয়ের দল চাঁদের মাটির মতো উপকরণ গলিয়ে ‘মুনগ্লাস’ তৈরি করেছে এবং সেটিকে সৌর প্যানেল তৈরির জন্য ব্যবহার করেছে।

এই প্যানেলগুলো পেরোভস্কাইট নামের এক সস্তা ও কার্যকর উপকরণ দিয়ে তৈরি, যা সহজে সূর্যালোককে বৈদ্যুতে রূপান্তর করতে পারবে। পেরোভস্কাইট দিয়ে তৈরি সৌর কোষগুলো সাধারণ সৌর কোষগুলোর চেয়ে হালকা এবং সহজে উৎপাদন করা যায়।

চাঁদের উপকরণ ব্যবহার করলে সৌর প্যানেলগুলোর ওজন ৯৯ দশমিক ৪ শতাংশ কমে যাবে, ফলে পরিবহন খরচও ৯৯ শতাংশ কমবে। এটি ভবিষ্যতের মিশন এবং চাঁদে স্থায়ী বসবাসের জন্য বিশাল উপকারে আসবে।

গবেষকেরা জানাচ্ছেন, প্রতি গ্রাম উপকরণ চাঁদে পাঠালে নতুন সৌর প্যানেলগুলো বর্তমান প্যানেলগুলোর চেয়ে ১০০ গুণ বেশি বিদ্যুৎ শক্তি উৎপাদন করতে সক্ষম।

মহাকাশের তেজস্ক্রিয় মাত্রায় সৌর প্যানেলগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখেন গবেষকেরা।

সাধারণ সৌর প্যানেলগুলোর কাচ তেজস্ক্রিয়তার জন্য মহাকাশে গিয়ে খয়েরি হয়ে যায়, যা সূর্যালোক শোষণ করতে বাধা সৃষ্টি করে। তবে মুনগ্লাস স্বাভাবিকভাবে খয়েরি হওয়ায় এটি আরও বেশি স্থিতিশীল।

মুনগ্লাস তৈরির প্রক্রিয়া অত্যন্ত সহজ; কারণ, এটি পরিশোধনের প্রয়োজন হয় না এবং কেবল সূর্যের আলো কেন্দ্রীভূত করেই চাঁদের মাটিকে গলানো সম্ভব। পরীক্ষাগুলোর ফলে এই নতুন সৌর প্যানেলগুলো ১০ শতাংশ দক্ষতা অর্জন করেছে। তবে আরও উন্নত এবং ভালো কাচ ব্যবহার করলে এগুলো ২৩ শতাংশ দক্ষতা অর্জন করতে পারবে বলে আশা করছেন গবেষকেরা।

তবে এখনো কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। চাঁদের কম মহাকর্ষ বল, বায়ুচাপশূন্য পরিবেশ এবং তাপমাত্রার ব্যাপক পরিবর্তন সৌর প্যানেলগুলোর কার্যকারিতাকে প্রভাবিত করতে পারে। এই প্রযুক্তির প্রকৃত অবস্থায় পরীক্ষা করার জন্য দলটি একটি ছোট পরীক্ষামূলক যন্ত্র চাঁদে পাঠানোর পরিকল্পনা করছে।

ল্যাং বিশ্বাস করেন, চাঁদের মাটি ব্যবহার করে নানা ধরনের উপকারিতা পাওয়া যেতে পারে। যেমন আশ্রয় তৈরি, পানি তৈরি এবং সৌরশক্তি; যা ভবিষ্যতে চাঁদের শহরগুলোয় বিদ্যুৎ সরবরাহ করবে।

তথ্যসূত্র: নরিডজ

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মডেল মেঘনাকে আটকের দিনই ঢাকা ছাড়েন সৌদি রাষ্ট্রদূত ঈসা

সৌদি রাষ্ট্রদূতের অভিযোগের ভিত্তিতেই মডেল মেঘনা কারাগারে

মডেল মেঘনার পরিবারের মাধ্যমে সুরাহার চেষ্টা করেছিল পুলিশ

হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি জানা যাবে মাত্র ৮০০ টাকার রক্ত পরীক্ষায়

জুলাই অভ্যুত্থান-সংক্রান্ত মামলায় ঊর্ধ্বতনের অনুমতি ছাড়া আসামি গ্রেপ্তার নয়

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত