হোম > বিজ্ঞান

সূর্যালোক ধরার ফাঁদ, ১০০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপ উৎপন্ন করতে পারে

জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানোর পরিবর্তে সূর্যের তাপ ব্যবহার করতে চান সুইজারল্যান্ডের প্রকৌশলীরা। এ জন্য সূর্যালোক ধরার ফাঁদ তৈরি করেছেন তাঁরা! এই ফাঁদের মাধ্যমে সূর্যের আলো থেকে শক্তি সংগ্রহ করা যাবে। এই ডিভাইসটি ১ হাজার ডিগ্রি সেলসিয়াসেরও (১ হাজার ৮৩২ ফারেনহাইট) বেশি তাপমাত্রা উৎপন্ন করতে পারে। জীবাশ্ম জ্বালানির বিকল্প হিসেবে এটি ব্যবহারের সম্ভাবনা দেখছেন বিজ্ঞানীরা।

ইস্পাত, কাচ ও সিমেন্টের মতো বিভিন্ন উপাদান তৈরির জন্য ১ হাজার ডিগ্রি সেলসিয়াসেরও বেশি তাপমাত্রা প্রয়োজন হয়। জীবাশ্ম জ্বালানি পুড়িয়ে এই তাপমাত্রা উৎপন্ন করতে বিপুল পরিমাণ গ্রিন হাউস গ্যাস বায়ুমণ্ডলে যুক্ত হচ্ছে।

সুইজারল্যান্ডের ইটিএইচ জুরিখ বিশ্ববিদ্যালয়ের এমিলিয়ানো ক্যাসাটি বলেন, ‘আমরা যে জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার করি তার প্রায় অর্ধেকই ব্যবহৃত হয় বিদ্যুৎ উৎপাদনে। এই জ্বালানি আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ও শিল্পে প্রয়োজনীয় অনেক উপকরণ তৈরি করতে ব্যবহৃত হয়।’ 

সাধারণ সৌর চুল্লিতে সুসজ্জিত আয়নার টুকরা ব্যবহার করে একটি অবতল দর্পণ তৈরি করা হয়। এই দর্পণ সূর্যের আলোক রশ্মিগুলোকে একটি রিসিভারে কেন্দ্রীভূত করে। এতে রিসিভারটি উচ্চ তাপমাত্রায় পৌঁছায়। রিসিভারে পাত্র রেখে রান্না করা যায়।

 এটি বিভিন্ন উৎপাদন শিল্পে জীবাশ্ম জ্বালানির পরিবর্তে ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে নতুন ডিভাইসটি ১ হাজার ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি তাপ উৎপন্ন করতে পারে না। 

এই ধরনের ডিভাইসের কর্মক্ষমতা বাড়াতে ক্যাসাটি ও তাঁর সহকর্মীরা তাপ ধরে রাখার বিশেষ সোলার রিসিভারের নকশা তৈরি করেছেন। সিলিকনের এই রিসিভারের চারপাশে কোয়ার্টজের (এক ধরনের খনিজ) ৩০০ মিলিমিটার আবরণ যুক্ত করা হয়েছে। 

কোয়ার্টজ একটি আধা স্বচ্ছ উপাদান। যার মধ্য দিয়ে আলো ও তাপ শক্তি প্রবেশ করতে পারে কিন্তু তাপ বের হতে পারে না। অর্থাৎ সিলিকন কেন্দ্রীভূত সূর্যের আলোর মাধ্যমে গরম হয়ে যায় ও কোয়ার্টজ এই তাপকে বের হতে বাধা দেয়। ফলে ডিভাইসটিতে শক্তির ক্ষয় কম হয়। 

গবেষক দলটি রিসিভারটিকে পরীক্ষা করার জন্য একটি গবেষণাগারে সূর্যের আলোর অনুকরণে এলইডি লাইট ব্যবহার করেন। প্রাথমিক পরীক্ষায় দেখা যায়, সিলিকন শোষকটি সহজেই ১ হাজার ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছে।

হিট ট্রান্সফার মডেল অনুসারে, সিলিকন আবরণটি রিসিভারকে ১ হাজার ২০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রায় পৌঁছাতে সহায়তা করতে পারে এবং ডিভাইসটি ৭০ শতাংশ শক্তি ধরে রাখতে পারে। আর কোয়ার্টজ আবরণ ছাড়া একই তাপমাত্রায় শক্তির দক্ষতা ৪০ শতাংশে নেমে আসে। 

তবে ডিভাইসটি এখনো ব্যবহারযোগ্য নয়–এটি একটি প্রোটোটাইপ। ভবিষ্যতে উচ্চ তাপমাত্রা উৎপন্নে একটি পরিবেশবান্ধব উপায় হিসেবে ব্যাপকভাবে এই ডিভাইস ব্যবহার করা হবে বলে আশা করেন ক্যাসাটি। তিনি বলেন, শিল্পে জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। এই ডিভাইস সেখানে একটি ভালো সমাধান হতে পারে। 

তথ্যসূত্র: নিউসায়েন্টিস্ট

চাঁদের ধুলা দিয়ে সৌর প্যানেল তৈরি করবেন বিজ্ঞানীরা

সবুজে ঢাকা ছিল সাহারা মরুভূমি, আবাস ছিল এক অজানা মানবগোষ্ঠীর

প্রথমবারের মতো পৃথিবীর মেরু দেখলেন চার মহাকাশ পর্যটক

চালের চেয়েও ছোট পেসমেকার উদ্ভাবন, লাগবে না অপারেশন

ডাবের ভেতর পানি তৈরি হয় কীভাবে, যা জানা গেল গবেষণায়

নাসার টেলিস্কোপে দেখা গেল নেপচুনের মেরুপ্রভা

মঙ্গলে মানব অভিযানের প্রস্তুতি নিতে যেভাবে সাহায্য করছে নাসার রোবট

দাঁত কিড়মিড় করে হাঙর, প্রথমবারের মতো রেকর্ড করলেন বিজ্ঞানীরা

মঙ্গলে প্রাণের বিকাশে প্রয়োজনীয় জৈব যৌগ পেল নাসার রোবট

প্লাস্টিক বর্জ্য থেকে মূল্যবান বস্তু বানালেন বিজ্ঞানীরা