সূর্যগ্রহণের সময় চাঁদে কী হয়, তা দেখতে ও দেখাতে পৃথিবীর ইতিহাসে দ্বিতীয়বারের মতো চাঁদে অবতরণ করেছে ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের একটি মহাকাশযান। আজ রোববার মার্কিন সময় রাত ৩টা ৩৫ মিনিটের দিকে (স্থানীয়) চাঁদের মাটি স্পর্শ করে টেক্সাসভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ফায়ারফ্লাই অ্যারোস্পেসের চন্দ্রযান ব্লু ঘোস্ট।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চাঁদের উত্তরাঞ্চলের মেয়ার ক্রিজিয়াম নামক এলাকায় অবতরণ করে ব্লু ঘোস্ট। পুরো এক চান্দ্রদিবস ওই স্থানে অবস্থান করবে যানটি, যা পৃথিবীর হিসাবে ১৪ দিন। এ সময় চন্দ্রযানটি চাঁদের পরিবেশ পর্যবেক্ষণ করবে।
আশা করা হচ্ছে, ১৪ মার্চ সূর্যগ্রহণের সময় চাঁদে কী ধরনের পরিবর্তন হয়, তার হাই-রেজল্যুশনের ছবি তুলবে ব্লু ঘোস্ট। সবকিছু ঠিক থাকলে ১৬ মার্চ চন্দ্রপৃষ্ঠে সূর্যাস্তের ছবি ধারণ করবে বিশেষ এই মহাকাশযান। সূর্যের প্রভাবে চাঁদের পৃষ্ঠে ধুলো ভাসে কীভাবে, তা দেখা যাবে সেসব ছবিতে।
বিশেষ এই যানে রয়েছে বিকিরণ প্রতিরোধী কম্পিউটার, চাঁদের মাটি বিশ্লেষণের বিশেষ যন্ত্র ও নেভিগেশন সিস্টেম বা পরিচালন ব্যবস্থা।
এর আগে, গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ‘ইনটুইটিভ মেশিনস’ নামের একটি বেসরকারি মহাকাশযান সফলভাবে প্রথমবারের মতো চাঁদে অবতরণ করে।
১৯৭২ সালে অ্যাপোলো-১৭ এর ক্রু মিশনের ৫৩ বছর পর চন্দ্রপৃষ্ঠে এটিই প্রথম মার্কিন কোনো মহাকাশযানের অবতরণ। অবশ্য ৫৩ বছর আগের সেই মিশনে মহাকাশযানটির ল্যান্ডার বা অবতরণকারী যন্ত্রের দুর্ঘটনার কারণে নির্ধারিত সময়ের আগেই শেষ হয়ে যায় মিশন। তবে এবার ল্যান্ডারকে আরও উন্নত করে গত বুধবার আরেকটি মিশন পাঠিয়েছে ইনটুইটিভ মেশিনস। ৬ মার্চ চন্দ্রপৃষ্ঠে অবতরণের কথা রয়েছে সেটির।
ইনটুইটিভ মেশিনসের এই মিশনে যে ল্যান্ডার পাঠানো হয়েছে, সেটির নাম অ্যাথেনা। বলা হচ্ছে, ব্লু ঘোস্টের তুলনায় লম্বা ও সরু আকৃতির এটি—উচ্চতা প্রায় একটি প্রাপ্তবয়স্ক জিরাফের সমান। এর পে-লোডের (সঙ্গে করে নিয়ে যাওয়া ভার বা যন্ত্র বা অন্যান্য সরঞ্জাম) মধ্যে রয়েছে তিনটি রোভার, একটি ড্রিল (যা চাঁদে বরফের সন্ধান করবে) এবং একটি ‘হপিং ড্রোন’।
সম্প্রতি কমার্শিয়াল লুনার পে-লোড সার্ভিসেস প্রোগ্রামের আওতায় চাঁদ নিয়ে গবেষণার পরিধি বাড়ানোর চেষ্টা করছে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান নাসা; যার বাজেট প্রায় ২৬০ কোটি ডলার।