একদিনেই ২৩ উইকেট! সেটিও আবার প্রথমদিনে—একটু বিষ্মিত তো হতেই হয়। টেস্টে এমন ঘটনা যে খুব বেশি দেখা যায় না। তাতে বিরল রেকর্ড কিছু হয়েছে এমন নয়।
টেস্টে একদিনেই এরচেয়ে বেশি উইকেট পড়ার ঘটনা আছে চারটি। সর্বোচ্চ ২৭ উইকেট পড়েছিল ১৮৮৮ সালে, ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়ার লর্ডস টেস্টে। দুই দিনে শেষ হওয়া টেস্টটিতে দ্বিতীয় দিনেই পড়েছিল এ সংখ্যক উইকেট। আর প্রথম দিনে ২৫ উইকেট পড়ার ইতিহাসটা হয়েছিল ১৯০২ সালে, মেলবোর্নে সেই একই দুই প্রতিপক্ষের ম্যাচে। এরপরই দক্ষিণ আফ্রিকা-ভারত কেপটাউন টেস্টের অবস্থান।
কেপটাউনে প্রথম দিনেই হলো তিন ইনিংসের খেলা। সেঞ্চুরিয়নের মতো একেবারে ঘাসের উইকেট না হলেও নিউল্যান্ডসের হালকা ঘাসের উইকেট পেসারদের জন্য এমন স্বর্গ হয়ে উঠবে সেটি আর কে ভেবেছিল! ২২ উইকেট গেল পেসারদের পকেটে। তার মধ্যে ৬টি মোহাম্মদ সিরাজের। মূলত তাঁর নবাবীতেই তো প্রোটিয়ারা টসে জিতে প্রথম ইনিংস শুরু করে অলআউট ৫৫ রানে! ২, ৪, ২, ৩, ১২, ১৫, ০, ৩, ৫, ৪, ০ *—এ হলো স্বাগতিক ব্যাটারদের রান।
ভারতের বিপক্ষে প্রোটিয়াদের আগের সর্বনিম্ন স্কোরটি ছিল ৭৯। ২০১৫ সালে নাগপুর টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে রবীচন্দ্রন অশ্বিন ও রবীন্দ্র জাদেজার ঘূর্ণিতে চোখে সর্ষে দেখেছিল সফরকারীরা। এবার তারা পুড়ল সিরাজের টেস্ট ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে। তবে গতকাল প্রথম সেশনেই বিধ্বস্ত হওয়ার দুঃখটা প্রোটিয়াদের একটু হলেও ভুলতে পেরেছিল মধ্যাহ্নবিরতির পর। সিরিজের প্রথম টেস্টে হারা ভারতের ব্যাটিং অর্ডার এবারও ব্যর্থ।
কাগিসো রাবাদার ‘লিথ্যাল’ আক্রমণের সঙ্গে সঙ্গে যোগ দিয়ে লুঙ্গি এনগিদি ও নন্দ্রে বার্গারের সামনে ভারত প্রথম ইনিংসে শেষ ১৫৩ রানে। সফরকারীদের ইনিংসে শূন্যের সংখ্যা ৭ টি। বাকি চার ব্যাটারের রান—৩৯ (রোহিত শর্মা), ৩৬ (শুবমান গিল), ৪৬ (বিরাট কোহলি) ও ৮ (লোকেশ রাহুল)। ১০৫ রানে তৃতীয় উইকেটে হারানোর পরপরই ধস নামে ভারতের ইনিংসে। ভারতের শেষ পাঁচ ব্যাটার রানের খাতায় খুলতে পারেননি। অপরাজিত ছিলেন মুকেশ কুমার (০)।
সারাদিনে দুই ইনিংস মিলিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা ব্যাট করেছে ৪০.২ বল। তাতেই হারিয়েছে ১৩ উইকেট। দ্বিতীয় ইনিংসেও ছিল প্রথম ইনিংসের প্রতিফলন। ৬২ রানে দিন শেষ করতেই হারিয়েছে ৩ উইকেট। এইডেন মার্করাম (৩৬) অপরাজিত থাকলেও ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট খেলতে নেমে প্রোটিয়াদের নেতৃত্ব দেওয়া ওপেনার ডিন এলগারের দুই ইনিংসে রান ৪ ও ১২।
৩৬ রানে পিছিয়ে থেকে আজ দ্বিতীয়দিন শুরু করবে তারা। সিরাজ তৃতীয় ইনিংসে উইকেট না পেলেও পেসার মুকেশ নিয়েছেন ২ উইকেট, প্রথম ইনিংসেও তাঁর শিকার ২ টি। প্রোটিয়াদের দিনের শেষটাও হতাশায় ভরিয়ে দেন মুকেশ ও জসপ্রীত বুমরাহ।