অনুদান কর্মসূচির ‘অপব্যবহারের’ অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রে বেশ কয়েকজন ভারতীয় বংশোদ্ভূত কর্মীকে ছাঁটাই করেছে অ্যাপল। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া এসব তথ্য জানিয়েছে।
দান কার্যক্রমে কর্মীদের উৎসাহিত করার জন্য ‘ম্যাচিং গ্রান্ট প্রোগ্রাম’ পরিচালনা করে অ্যাপল। এই প্রোগ্রামের মাধ্যমে কর্মীরা যে পরিমাণ অর্থ কোনো দাতব্য বা সামাজিক প্রতিষ্ঠানে দান করেন, সেই পরিমাণ অর্থ নির্দিষ্ট কিছু প্রতিষ্ঠানকে দান করে কোম্পানিটি। তবে এই প্রকল্প ব্যবহার করে প্রতারণা করেছে বলে অভিযোগ তুলেছে অ্যাপল।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট কর্মীরা দান সম্পর্কিত ভুয়া রেকর্ড তৈরি করেছেন এবং অ্যাপলের দেওয়া অর্থ নিজেদের কাছে ফেরত নিয়ে এসেছেন।
এই প্রতারণার সঙ্গে প্রায় ১৮৫ জন কর্মী জড়িত থাকতে পারেন। তবে এই সংখ্যা আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করা হয়নি। এ ছাড়া এই প্রতারণার সঙ্গে তেলেগু অ্যাসোসিয়েশন অব নর্থ আমেরিকা (টিএএনএ) জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে। অ্যাপলসহ বিভিন্ন কোম্পানির করপোরেট ম্যাচিং গ্রান্টের অপব্যবহারে সঙ্গে জড়িত সংস্থাটি। দানকৃত অর্থ নিজেদের কাছে ফিরিয়ে নেয় টিএনএনএ। সূত্র অনুযায়ী, ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই), ইন্টারনাল রেভিনিউ সার্ভিস (আইআরএস) এবং ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিস (ডিওজে) এই সংগঠনের কার্যক্রম নিয়ে তদন্ত করছে।
গত বছরের ১২ ডিসেম্বর মার্কিন জেলা আদালত টিএএনএকে একটি সমন জারি করে, যাতে সংস্থাটিকে ২৬ ডিসেম্বরের মধ্যে জুরি সদস্যদের সামনে সাক্ষ্য প্রদানের নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে পরবর্তী সময়ে এই সাক্ষ্য দেওয়ার সময় বাড়ানো হয়।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, সাক্ষ্যের জন্য বিভিন্ন ধরনের নথি চেয়েছে আদালত, যার মধ্যে ২০১৯ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত অনুদানের রেকর্ড, আর্থিক লেনদেন এবং হিসাবরক্ষণ ও নিরীক্ষণ সম্পর্কিত নীতিমালা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এর পাশাপাশি বোর্ড মিটিং, সাব-কমিটি ও সংশ্লিষ্ট কার্যক্রমের রেকর্ডও চাওয়া হয়েছে।
সমনটি বিশেষভাবে টিএএনএর প্রাপ্ত সব দানের বিস্তারিত তথ্য চেয়েছে, যার মধ্যে করপোরেট ম্যাচিং প্রোগ্রাম থেকে প্রাপ্ত অনুদানও অন্তর্ভুক্ত। পাশাপাশি বিতরণকৃত অর্থের উদ্দেশ্য এবং ব্যাংকের বিস্তারিত তথ্যও চাওয়া হয়েছে। যদিও তদন্তের সঠিক পরিধি এখনো অজানা, সূত্রগুলো অনুযায়ী এটি সম্ভবত একটি বৃহত্তর তদন্তের অংশ।
এই তদন্ত করপোরেট ম্যাচিং গ্রান্ট প্রোগ্রামগুলোর মধ্যে সম্ভাব্য দুর্বলতা ও প্রতারণামূলক কার্যকলাপ প্রতিরোধে শক্তিশালী তত্ত্বাবধানের গুরুত্ব তুলে ধরছে। অ্যাপল এখনো এই অভিযোগ সম্পর্কে আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতি দেয়নি।