ঈদে বাড়ি ফেরা
পরিবারের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করতে ইতিমধ্যে ঢাকা ছাড়তে শুরু করেছে রাজধানীবাসী। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর গাবতলী ও সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে দেখা গেছে, স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে যাত্রীদের বাড়তি চাপ। বাসে টিকিটপ্রতি ১০০-৫০০ টাকা পর্যন্ত ভাড়া বেড়েছে। তবে পরিবহনসংশ্লিষ্টরা বলছেন, যাত্রীর চাপ সামান্য বাড়লেও কাউন্টারে ভিড় নেই।
গাবতলীর গ্রিন সেন্ট মার্টিন এক্সপ্রেসের টিকিট কাউন্টারের এক কর্মী বলেন, এত দিন স্বাভাবিক ছিল। আজ (মঙ্গলবার) দুপুরের পর চাপ বেড়েছে। ঈদের কারণে স্বাভাবিক দামের চেয়ে ১০০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। উত্তরবঙ্গে লোক বেশি যাচ্ছে, দক্ষিণাঞ্চলে যাত্রীর চাপ তুলনামূলক কম।
গাবতলী থেকে ঝিনাইদহে যাওয়ার জন্য গোল্ডেন লাইন বাসের টিকিট কেটেছেন যাত্রী সবুজ মিয়া। তিনি জানান, অন্য সময় সাড়ে ছয় শ টাকায় টিকিট কিনলেও এখন এক শ টাকা বেশি দামে কিনেছেন।
দুপুরের দিকে গাবতলী বাসস্ট্যান্ড থেকে বিভিন্ন জেলার উদ্দেশে দূরপাল্লার অনেক বাস ছেড়ে যেতে দেখা গেছে। এ সময় গাবতলী-আমিনবাজার রোডে তীব্র যানজট দেখা দেয়। সাভার (ঢাকা) প্রতিনিধি জানান, দুপুরের পর থেকে দক্ষিণবঙ্গমুখী ঢাকা-আরিচা ও উত্তরবঙ্গমুখী নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কে বাড়তে শুরু করেছে পরিবহনের চাপ। এরই মধ্যে বাড়তি ভাড়া নেওয়া শুরু করেছে কোনো কোনো পরিবহন।
বাইপাইল বাসস্ট্যান্ড এলাকায় দেখা যায়, সড়কের এক পাশ দখল করে উত্তরবঙ্গমুখী দূরপাল্লার বাস যাত্রীর অপেক্ষা করছে। এ ছাড়া বেশ কিছু মাইক্রোবাসও বিভিন্ন গন্তব্যের উদ্দেশে যাত্রী ডাকছে। শিল্প পুলিশ জানায়, কিছু কিছু কারখানা ছুটি দিলেও বেশির ভাগ ছুটি দেবে ২৭ মার্চের ডিউটির পর। তখন যাত্রীর চাপ আরও বাড়বে।
ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি জানান, উত্তরের জেলাগুলোর প্রবেশদ্বার হিসেবে পরিচিত ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কে বেড়েছে যানবাহনের চাপ। রোববার রাত ১২টা থেকে সোমবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ৪২ ঘণ্টায় যমুনা সেতু দিয়ে ঘণ্টায় ৯৩৮টি যানবাহন পারাপার হয়েছে।
সেতু কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, রোববার রাত ১২টা থেকে সোমবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত যমুনা সেতু দিয়ে ৩৯ হাজার ৪৩২টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। তাতে টোল আদায় হয়েছে ৩ কোটি ৮৯ লাখ ৫ হাজার ৫০ টাকা।
এ ছাড়া অনলাইনে আদায় হয়েছে ১৪ লাখ ৪০ হাজার টাকা।
তবে ঢাকার সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল ও যাত্রাবাড়ী বাসস্ট্যান্ডে ঘরমুখী মানুষের তেমন চাপ দেখা যায়নি বলে জানিয়েছেন যাত্রাবাড়ী প্রতিনিধি। তিনি জানান, ঈদের কয়েক দিন বাকি থাকায় সায়েদাবাদে এখনো যাত্রীর চাপ কম। পরিবহনসংশ্লিষ্টদের প্রত্যাশা, দু-এক দিনের মধ্যে যাত্রীর চাপ কিছুটা বাড়বে।
সুন্দরবনগামী শরণখোলা ট্রাভেলস কাউন্টারের ম্যানেজার গুলজার হোসেন বলেন, সীমিত আকারে বাড়ি যাচ্ছেন যাত্রীরা। সিট ফাঁকা থাকলেও সঠিক সময়ে ছাড়তে হচ্ছে গাড়ি।
এদিকে ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ঢাকা থেকে বরিশালে ৫টি করে লঞ্চ চলাচল শুরু করেছে। বিআইডব্লিউটিএ সূত্রে জানা গেছে, লঞ্চে যাত্রীর চাপও বেড়েছে। গতকাল সন্ধ্যায় ঢাকা থেকে বরিশালের উদ্দেশে ছেড়ে যায় অ্যাডভেঞ্চার-৯, পারাবত-১৮ ও ৯, সুন্দরবন-১৫, কীর্তনখোলা-১০ এবং মানামী। যদিও এর আগে দুটি লঞ্চের বেশি চলাচল করত না।
ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গত সোমবার থেকে ট্রেনের আগাম যাত্রা শুরু হয়েছে। ঈদে বাড়ি যাওয়ার জন্য যাঁরা ১৫ মার্চে অগ্রিম টিকিট কেটেছিলেন, তাঁরাই গতকাল যাত্রা করেছেন।